—প্রতীকী চিত্র।
এই সপ্তাহও শেষ হল দোলাচলে। বিশ্ব জুড়ে লগ্নির বাজার আশা-নিরাশার দ্বন্দ্বে ঘুরপাক খাচ্ছে। সে কারণেই সম্ভবত বাজারে এই মুহূর্তে বিরাট কোনও পরিবর্তন আশা করাও ঠিক হবে না।
দেশের বাজারও এই দোলাচল থেকে মুক্ত নয়। শুক্রবারও সেনসেক্স আর নিফটি পড়েছে। সেনসেক্স পড়েছে ১৮৭.২৫ পয়েন্ট। বন্ধ হয়েছে ৬৫,৭৯৪.৭৩-এ। নিফটি ৩৩.৪০ পয়েন্ট পড়ে লেনদেন শেষ হওয়ার সময় ছিল ১৯৭৩১.৮০ পয়েন্টে।
তবে দেশের বাজারে সূচক পড়েছে মূলত ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থাগুলোর শেয়ার বিক্রির চাপে। এর পিছনে অবশ্য ছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণ দেওয়ার ঝুঁকির মাপ বদলানোর নির্দেশ। শুক্রবার আমাদের শীর্ষ ব্যাঙ্ক বন্ধকহীন ঋণের ঝুঁকির মাপ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। বন্ধকহীন সাধারণ ঋণের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ আর ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে তা ১২৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থাগুলি ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নিয়মিত ঋণ নিয়ে থাকে। এই সব ঋণের ক্ষেত্রেও ঝুঁকির মাত্রা এক লপ্তে অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্কটি। ব্যতিক্রমের তালিকায় রয়েছে কৃষি বা গৃহঋণের মতো কয়েকটি অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা ঋণ।
এর ফলে সাধারণ ভাবে মনে করা হচ্ছে যে, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থাগুলির মূলধনের খরচ ১০ থেকে ২০ শতাংশ বিন্দু বাড়বে। ব্যাঙ্কগুলিও এই অঙ্কের বাইরে থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই শুক্রবার আর্থিক সংস্থার শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে যায়, যা সূচককে টেনে নামায়।
তবে ঝুঁকির মাত্রা বৃদ্ধির ফলে সাধারণ ব্যবহারকারী অথবা আর্থিক সংস্থাগুলির উপর যে বিরাট কিছু চাপ বাড়বে তা-ও নয়। কিন্তু বাজার তো এই অঙ্কের উপর বসে থাকে না। ক্ষতি এড়াতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সব সময়েই আগে বিক্রি করে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়ানোই শেয়ার বাজারের প্রবণতা।
পাশাপাশি, টাকারও ডলারের সাপেক্ষে বিনিময়মূল্য পড়েছে ৪ পয়সার মতো। কারণ, পশ্চিমের বাজারগুলোতে সূচক উঠছে। ইউরোপের বাজার সপ্তাহ শেষ করেছে ১ শতাংশ উপরে। ১৭টি ইউরোপীয় দেশের ৬০০ শেয়ারের সূচক সব মিলিয়ে গোটা সপ্তাহে ২.৮ শতাংশ বেড়েছে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এর পিছনে আসল কারণ হল, গোটা পশ্চিমের বাজারে আর্থিক বৃদ্ধির হার তলানিতে গিয়ে ঠেকা। বাজার মনে করছে, এই পরিস্থিতি পশ্চিমের শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার আরও বৃদ্ধি করলে বাজার আরও পড়বে। কারণ, মূলধনের খরচ আরও বাড়বে। নতুন বিনিয়োগ হবে না। এই পরিস্থিতি খুব বেশি দিন চলতে দেওয়ার ঝুঁকি কোনও শীর্ষ ব্যাঙ্কই নিতে চাইবে না। তাই বাজারের আশা, ২০২৪ হবে সুদ কমার বছর। আর সেই আশাতেই বুক বেঁধেছে পশ্চিমের বাজার।
পশ্চিমের বাজার ঘুরতে থাকলে টাকার বিনিময় মূল্যের উপর প্রভাব পড়বেই। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি প্রতিক্রিয়া আগামী দিনে কোন দিকে হাঁটে, তার উপর কিন্তু তীক্ষ্ণ নজর থাকবে বাজারের।
তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে লগ্নির কৌশল বদলানোর কোনও ইঙ্গিত কিন্তু বাজার দিচ্ছে বলে মনে করছেন না কেউই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy