ব্যাটারি উৎপাদনের ১৫% খরচ লিথিয়ামের। দেশের ভান্ডার থেকেই তা মিললে ব্যাটারির দাম ৫% কমতে পারে। কমবে বৈদ্যুতিক গাড়ির খরচও। প্রতীকী ছবি।
বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে ভূস্বর্গের অর্থনীতি। অপেক্ষা বদলের!
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে লিথিয়াম ভান্ডারের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতের ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ। যা আশা জোগাচ্ছে দেশের বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পমহলে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ভারতেই লিথিয়ামের উৎস থাকলে ব্যাটারির খরচ কমবে। সেই সঙ্গে চাকা ঘুরবে জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতির। লিথিয়াম উত্তোলন শুরু হলে তারা রয়্যালটি পাবে। দরজা খুলবে লগ্নির।
গোটা বিষয়টি এখনও প্রাথমিক স্তরে। সে কারণে বিশদে প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের অনেকেই। তবে সেই শিল্পেমহলের সংগঠন এসএমইভি-র ডিজি সোহিন্দর গিল বলেন, ‘‘সরকারের উদ্যোগ দেশের পক্ষে বড় ব্যাপার। হাতে গোনা কয়েকটি দেশ এই খনিজের জোগান দেয়।’’ তিনি জানান, ব্যাটারি উৎপাদনের ১৫% খরচ লিথিয়ামের। দেশের ভান্ডার থেকেই তা মিললে ব্যাটারির দাম ৫% কমতে পারে। কমবে বৈদ্যুতিক গাড়ির খরচও।
৫৯ লক্ষ টন লিথিয়ামের ওই ভান্ডার মিলেছে জম্মু-কাশ্মীরের রেয়াসি জেলায়। সেখানকার ভূতত্ত্ব ও খনি বিভাগের ডিরেক্টর ও পি ভগৎ গত এক দশক তা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ অপেক্ষার পরে অবশেষে আমরা এই রিপোর্ট পেয়েছি।’’ বিভাগের সচিব অমিত শর্মা জানান, তৃণমূল স্তরে কাজ শুরু করতে পাঁচ-ছ’মাস লাগবে। তাঁর দাবি, ওই ভান্ডার দেশ তো বটেই, বিশ্বেরও চাহিদা মেটাবে। লিথিয়ামের মানচিত্রে জম্মু-কাশ্মীরকে ঠাঁই দেবে এই প্রাপ্তি। রয়্যালটি বাবদ যা আয় হবে তা ওই ভূখণ্ডের অর্থনীতিতে গতি আনবে তো বটেই, দেশেরও আর্থিক উন্নতি হবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির বিশেষ ভর্তুকি প্রকল্পের (ফেম) মাধ্যমে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে বৈদ্যুতিক বাস চালানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। লিথিয়াম প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে সেখানেও ওই সুবিধা চালুর আশা করছে জম্মু-কাশ্মীরের পরিবহণ দফতর।
এখন বিশ্বে লিথিয়াম জোগানের মূল রাশ চিনের হাতে। আর্জেন্টিনা-সহ অন্য কয়েকটি দেশ থেকে তা আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। সোহিন্দরের দাবি, দেশেই যথেষ্ট লিথিয়াম মিললে এই শিল্প যেমন ‘আত্মনির্ভর’ হবে, তেমনই উপাদানটির উপরে চিনের নিয়ন্ত্রণ কমবে।
দূষণের পাশাপাশি জ্বালানির আমদানি খরচ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধিতে কেন্দ্র জোর দিলেও, সেই গাড়ির বিপুল খরচ এবং সেটি চার্জ দেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। উপরন্তু ব্যাটারি তৈরির মূল উপাদান লিথিয়াম ভারতে না মেলায় তা আমদানির খরচও কম নয়। অতিমারিতে তার দাম আরও বেড়েছে। ফলে এখন নতুন ভান্ডারের দিকেই চোখ বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পমহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy