Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
GDP growth

আশঙ্কা মিলিয়ে সঙ্কোচন, চিন্তা চলতি বছর নিয়েও

লকডাউনে যে ভাবে আর্থিক কর্মকাণ্ড স্তব্ধ হয়েছিল, তাতে জিডিপি যে কমবে তাতে সন্দেহ ছিল না।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ০৫:২২
Share: Save:

অতিমারি ভাঙল ৪০ বছরের রেকর্ড। করোনার ধাক্কায় গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) ভারতের জিডিপি তলিয়ে গেল ৭.৩%। স্বাধীনতার পরে দেশের জিডিপি-র অঙ্ক কষা শুরু হওয়ার পরে এতখানি সঙ্কোচন কখনও দেখা যায়নি। তবে তা কেন্দ্রের ৮ শতাংশের পূর্বাভাসের চেয়ে কম। শেষবার অর্থনীতি ৫.২% সঙ্কুচিত হয়েছিল ১৯৭৯-৮০ সালে। গত বছরে আগাগোড়া একমাত্র মুখ রক্ষা করেছে কৃষিই। পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানাচ্ছে, ওই সময়ে কারখানার উৎপাদন কমেছে ৭.২% এবং ৮.৬% সঙ্কোচনের মুখ দেখেছে নির্মাণ ক্ষেত্রও। তার উপরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এই অর্থবর্ষে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়েও চিন্তা বাড়াচ্ছে। বিশেষত যখন রাজ্যে রাজ্যে জারি রয়েছে কড়া বিধিনিষেধ।

লকডাউনে যে ভাবে আর্থিক কর্মকাণ্ড স্তব্ধ হয়েছিল, তাতে জিডিপি যে কমবে তাতে সন্দেহ ছিল না। বিশেষত ২০২০-২১ সালের এপ্রিল-জুন এবং জুলাই-অগস্ট ত্রৈমাসিকে যথাক্রমে ২৪.৪% এবং ৭.৪% জিডিপি কমা সেই আশঙ্কাকে জোরদার করেছিল। পরে অক্টোবর-ডিসেম্বরে সামান্য বৃদ্ধির (০.৫%) দেখা মেলে। আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়া, কারখানার উৎপাদন, নির্মাণ ক্ষেত্র, বিক্রিবাটা আগের জায়গায় ফেরায় ১.৬% বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। তার ফলেই গোটা অর্থবর্ষের সঙ্কোচন আশঙ্কার তুলনায় কম। তবে ওই তিন মাসেও বৃদ্ধির মুখ দেখেনি ব্যবসা, হোটেল, পরিবহণ।

তবে অর্থনীতিবিদেরা মনে করাচ্ছেন, জানুয়ারি-মার্চে যে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চালু হয়েছিল, তা ধাক্কা খেয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ফলে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রথম ত্রৈমাসিকে আবারও জিডিপি সঙ্কোচনের আশঙ্কা ঘনিয়েছে। তাঁদের মতে, সংখ্যার হিসেবে হয়তো তা গত বছরের ২৪.৪ শতাংশের চেয়ে কম হবে বা খুব সামান্য বৃদ্ধিও হতে পারে। কিন্তু তাকে অর্থনীতির ছন্দে ফেরা বলা যাবে না। কারণ, পুরো হিসেবই হবে সেই সময়ে তলানিতে থাকা জিডিপি-র সঙ্গে তুলনা করে। উদাহরণ হিসেবে সোমবার প্রকাশিত এপ্রিলে পরিকাঠামো শিল্প গত বছরের চেয়ে এ বার ৫৬.১% বৃদ্ধির পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তাঁরা। মার্চের হিসেবে যা ১৫ শতাংশের বেশি কমেছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এমনকি চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্র যে ১১% বৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছিল, সেই অঙ্ক তো দূরঅস্ত্‌। বৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহই থাকছে। আজ মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কে ভি সুব্রহ্মণ্যনও মেনেছেন, কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কায় বৃদ্ধির গতি ধাক্কা খেয়েছে। তবে তাঁর আশা, সেই ক্ষত প্রথমবারের মতো গভীর হবে না। যদিও দু’অঙ্কের বৃদ্ধি নিয়ে এখনই পূর্বাভাস করা সম্ভব নয় বলে মানছেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে ফের এক দফা ত্রাণের দাবি উঠলেও অর্থ মন্ত্রক সূত্রে ইঙ্গিত, এখনই আর্থিক দাওয়াইয়ের কথা ভাবা হচ্ছে না। বরং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগে বাজেটে ঘোষিত সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করতে চাইছেন। মন্ত্রকের চিন্তার কারণ হল, রাজকোষ ঘাটতি। সোমবার তারা জানিয়েছে, গত অর্থবর্ষে তা ৯.৩% ছুঁয়েছে। করোনার জেরে রাজস্ব আদায় কমা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণে ধাক্কা এবং অতিমারি সামলাতে খরচ বৃদ্ধিই প্রধান কারণ। নরেন্দ্র মোদীর ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্নের কথা মনে করিয়ে আজ কংগ্রেস বলেছে, তার জন্য বছরে ১২% বৃদ্ধি দরকার। বাস্তবে তা ৮ শতাংশেরও নীচে।

অন্য বিষয়গুলি:

economy GDP growth GDP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy