প্রতিবাদ: জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলছে কৃষকদের বিক্ষোভ। সম্বলপুরে। ফাইল চিত্র
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বায়নের হাত ধরে গত দেড় দশকে দারিদ্র সীমার উপরে উঠে এসেছেন অগুনতি মানুষ। ২০০৫-০৬ থেকে ২০১৫-১৬ সালের মধ্যে শুধু ভারতেই এই সংখ্যা প্রায় ২৭.১ কোটি। অথচ তা সত্ত্বেও বিশ্বের প্রায় সমস্ত প্রান্তে বাড়ছে প্রতিবাদ। কোথাও ট্রেনের টিকিটের দাম তো কোথাও তেলের চড়া দর— বিভিন্ন কারণে বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমে আসছেন সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ বাড়ছে রাজনৈতিক স্বাধীনতা কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতেও। ক্রমবর্ধমান বৈষম্যকেই এর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানব উন্নয়ন সূচক (হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স বা এইচডিআই)।
সোমবার প্রকাশিত ওই রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের বহু দেশে দ্রুত বাড়তে থাকা আর্থিক বৈষম্য অবশ্যই বিক্ষোভ বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। কিন্তু একমাত্র নয়। কারণ, তার বাইরেও বৈষম্য বাড়ছে এমন অনেক ক্ষেত্রে, আগামী দিনে যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। যেমন, উচ্চশিক্ষার গণ্ডি পেরনো কিংবা না-পেরনোর উপরে আয় থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার মান— সব কিছুই নির্ভর করবে অনেকখানি। অথচ বিভিন্ন ধনী দেশের তুলনায় ভারতের মতো সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশে উচ্চশিক্ষায় পা রাখার হার বেশ কম।
একই ভাবে, ব্রডব্যান্ড সংযোগ থাকা কিংবা না-থাকাও আগামী দিনে বড়সড় প্রভাব ফেলবে পড়াশোনা ও আয়ে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বৈষম্য যথেষ্ট। পরিবেশ দূষণের প্রভাবে বিশ্বের ক্রমশ বাড়তে থাকা তাপমাত্রার ঝলসানিও বেশি পোহাতে হয় দরিদ্রদেরই। চাইলেও চট করে বাতানুকূল যন্ত্রের আরাম পাওয়ার জো যাঁদের নেই। আগামী দিনে এই সমস্ত বৈষম্যও দ্রুত বাড়তে থাকার ইঙ্গিত রয়েছে রিপোর্টে।
ভারতে ভাল
• ২০১৮ সালে মানব উন্নয়ন সূচকে ১৮৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১৩০তম। এ বার (২০১৯) ১২৯।
• প্রতিবেশীদের মধ্যে এ ক্ষেত্রে পিছনে ভুটান (১৩৪), বাংলাদেশ (১৩৫), নেপাল (১৪৭), পাকিস্তান (১৫২), আফগানিস্তান (১৭০)।
• ১৯৯০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সূচকে ভারতের নম্বর বেড়েছে ৫০% (০.৪৩১ থেকে ০.৬৪৭)। দ্রুততম বৃদ্ধির অঞ্চল দক্ষিণ এশিয়ার (৪৬%) থেকেও বেশি।
কিন্তু চিন্তা
• গত এক বছরে মানব উন্নয়ন সূচকে ভারত উঠতে পেরেছে মাত্র এক ধাপ। যে চিনের সঙ্গে টক্করের কথা মোদী সরকার প্রায়ই বলে থাকে, তাদের স্থান ৮৫।
• আর্থিক-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য ভারতে যথেষ্ট চড়া। তার প্রভাব বাদ দিলেই এই সূচকে দেশের নম্বর কমছে ২৬.১%।
মানব উন্নয়ন সূচকে ভারতের যা নম্বর (০.৬৪৭), দেখা যাচ্ছে, এই সমস্ত রকম বৈষম্যের প্রভাবকে বাদ দিলে তা এক লাফে কমে যাচ্ছে ২৬.১%। পাকিস্তানে সেই নম্বর কমার অনুপাত তুলনায় বেশি (৩১.৩%) হলেও, চিন (১৬.১%), এমনকি বাংলাদেশের (২৪.৩%) ক্ষেত্রে তা তুলনায় কম।
সব মিলিয়ে, এই মানব উন্নয়ন সূচকেও গত এক বছরে সে ভাবে এগোতে পারেনি ভারত। ২০১৮ সালে ১৮৯টি দেশের মধ্যে যেখানে ১৩০তম স্থান দখল করা গিয়েছিল, সেখানে ২০১৯ সালে এগোনো গিয়েছে মোটে এক ধাপ। এ বার ১২৯।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy