প্রতীকী চিত্র
এই মুহূর্তে পাঁচ রাজ্যে ভোট মরসুম চললেও, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে আজ সুদ ছাঁটাই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মূলত পশ্চিমবঙ্গের কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর। কারণ, অন্যান্য ভোটমুখী রাজ্যের তুলনায় বঙ্গ থেকে অনেক বেশি অর্থ স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের মোট জাতীয় তহবিলে জমা পড়ে। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গই হল একমাত্র রাজ্য, যেখান থেকে বছরের পর বছর ওই অর্থ জমার হার বাড়ছে। পরিসংখ্যানই বলছে, বছরে জাতীয় স্বল্প সঞ্চয় তহবিলে ১০০ টাকা জমা হলে, তার অন্তত ১৫ টাকাই আসে এই রাজ্য থেকে। সেই তুলনায় তামিলনাড়ু থেকে জমা পড়ে ৫ টাকারও কম। অসম থেকে ১ টাকা। কেরল থেকে ২ টাকা। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি থেকে মাত্র ১০ পয়সা।
স্বাভাবিক ভাবেই পিপিএফ, সেভিংস ডিপোজ়িট, প্রবীণ নাগরিকদের সঞ্চয় প্রকল্পের মতো জায়গায় সুদের হার কমলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে তার প্রভাব পড়ে সব থেকে বেশি। তার উপরে বাংলা থেকে ব্যাঙ্কের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে যে পরিমাণ টাকা জমা হয়, তার প্রায় ছয় গুণ জমা হয় ডাকঘরে। এর থেকে এটাও খুব স্পষ্ট, গ্রামের মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে স্বল্প সঞ্চয়ের উপরে নির্ভরশীল। কাজেই এগুলিতে সুদ কমলে সব চেয়ে বেশি ক্ষোভ তৈরি হত এ রাজ্যের মানুষের মধ্যেই।
নন্দীগ্রাম-সহ ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে বৃহস্পতিবারই দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্ব ছিল। এর পরে আরও ছ’দফার ভোট বাকি। এমনিতেই চড়া পেট্রল-ডিজেলের দাম, তার জেরে বাজারে জিনিসপত্রের বর্ধিত দর, যাতায়াতের বাড়তি খরচ এবং ৮০০ টাকা ছাড়ানো রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে আমজনতার মধ্যে। তার উপরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও এ দিন পশ্চিমবঙ্গে প্রচার ছিল। এই অবস্থায় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে বুধবার বিপুল হারে সুদ কমানোর কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। যে সিদ্ধান্ত রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই আজ ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। কিন্তু সরকারি সূত্রের দাবি, এর প্রধান কারণ বঙ্গে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব কোনও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে চাননি।
জাতীয় স্বল্প সঞ্চয় তহবিলে শেষ ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের পরিসংখ্যান রয়েছে। তাতে পরিষ্কার, তার আগের ১০ বছর, ২০০৭-০৮ সাল থেকেই লাগাতার ওই তহবিলে পশ্চিমবঙ্গের জমার হার বেড়ে চলেছে। প্রবীণ নাগরিকদের সঞ্চয় প্রকল্প, মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প, পিপিএফ, এনএসসি, কিসান বিকাশ, ১ থেকে ৫ বছরের সঞ্চয় প্রকল্পে এখনও মানুষের ভরসা রয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মত, বাম জমানা থেকেই বাংলার মানুষের সরকারি স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে তীব্র আস্থা। ২০১১-১২ থেকে দু’তিন বছর এই জমার হার একটু কম ছিল। মূলত চিট ফান্ডের রমরমাই যার কারণ। কিন্তু সারদা-রোজ় ভ্যালিতে বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হওয়ার পরে ২০১৪-১৫ থেকে ফের স্বল্প সঞ্চয়ে অর্থ জমার পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy