—প্রতীকী চিত্র।
খোলা বাজারে আনাজ-সহ বহু খাদ্যপণ্যের দাম চড়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সেই দাম কমানোর অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে তাই আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের রফতানিতে ৪০% শুল্ক চাপিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু এই পদক্ষেপের জেরে এ বার ক্ষোভ ছড়াল চাষি এবং পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের একাংশের মধ্যে। ফলে সোমবার মহারাষ্ট্রে নাশিকের অধিকাংশ বাজারে আনাজটির নিলাম বন্ধ ছিল। জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান চাষিরা। তাঁদের দাবি, এই পদক্ষেপের ফলে পক্ষে চাষের খরচ তোলাই কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে মরিয়া কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে একগুচ্ছ পদক্ষেপও করেছে তারা। কিন্তু এ বার পেঁয়াজ নিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে তাদের। কারণ, বিক্ষোভের পাশাপাশি পেঁয়াজের রফতানি শুল্ক পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি। নাশিকে বন্ধ হয়েছে নিলাম। ওই জেলার লাসলগাঁওয়ে দেশের বৃহত্তম পাইকারি পেঁয়াজ বাজারেও নিলাম বন্ধ ছিল। সরকার অবশ্য এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে অনমনীয়। কেন্দ্রীয় ক্রেতাসুরক্ষা সচিব রোহিত কুমার সিংহ বলেন, ‘‘রতফানি শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত সময়োচিত। এর ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভারতী পওয়ারের আশ্বাস, চাষিদের আর্থিক ক্ষতি হবে না। খোলা বাজারে টোম্যাটোর জোগান বাড়ানোর জন্য তাদের পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই ওই আনাজের দাম কমতে শুরু করেছে বলেও দাবি সরকারের।
যদিও পেঁয়াজের রফতানি শুল্ক নিয়ে চাষি এবং ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে আশঙ্কা ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পশ্চিমবঙ্গ ফোরাম অব ট্রেডারস অর্গানাইজ়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, পশ্চিমবঙ্গে সারা বছরের চাহিদার তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়। বাকিটা আসে নাশিক থেকে। অশান্তির জেরে সেই জোগান কমলে এ রাজ্যেও চাপ বাড়বে। তিনি বলেন, ‘‘শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাজারে যাতে আনাজটির সরবরাহ বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।’’ কলকাতার বাজারে এ দিন কেজি প্রতি টোম্যাটোর দাম ছিল ৮০ টাকা আর পেঁয়াজ ৪০ টাকা।
এ দিন নাশিক জেলার বিভিন্ন জায়গায় চাষিরা বিক্ষোভ দেখান। গলায় পেঁয়াজের মালা পরে নাশিক-ঔরঙ্গাবাদ জাতীয় সড়কে অবস্থান করেন। যার জেরে বিঘ্নিত হয় যানবাহন চলাচল। স্থানীয় এক কৃষকের কথায়, ‘‘এমনিতেই খরার মতো পরিস্থিতি। আর ঠিক যখন পেঁয়াজের ভাল দাম পেতে শুরু করলাম, তখনই কেন্দ্র রফতানি শুল্ক চাপাল। এটা চাষিদের প্রতি অবিচার।’’ তাঁদের আক্ষেপ, এর ফলে রফতানি বাজারের ভাল দাম হারাতে হবে, দেশেও পেঁয়াজ বিক্রি করে হাতে আসবে কম টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy