প্রতীকী ছবি।
আবির্ভাবে বড় ধাক্কা দিলেও এখনও পর্যন্ত বাজারকে তেমন ভাবে টেনে নামাতে পারেনি করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন। সংক্রমণের হার বেশি হলেও কম মানুষ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন— এই তথ্যে ফের প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে ভারত-সহ বিশ্ব বাজারে।
গত সোমবার সেনসেক্স ৯৪৯ পয়েন্ট নামলেও পরের তিন দিন সূচকটি ওঠে মোট ২০৬০ পয়েন্ট। ফের ১৭,৫০০ পয়েন্ট পার করেছে নিফ্টিও। এরই মধ্যে বুধবার ঋণনীতি ঘোষণা করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সুদের হার এক রাখলেও অর্থনীতি সম্পর্কে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সদর্থক বার্তা নতুন করে শক্তি জোগায় বাজারকে। সাময়িক শক্তি ফিরে পেলেও বাজার তা ধরে রাখতে পারবে কি না, তা সময়ই বলবে। কারণ, করোনা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিষয় চিন্তায় রাখবে তাকে। সেগুলি হল, সারা বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধির মাথাচাড়া দেওয়া, আমেরিকায় তা চার দশকের সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছনো, সে দেশের বন্ড কেনা কমানো ও সুদ বাড়ানোর প্রস্তাব।
তবে যেটা ভাল খবর তা হল অর্থনীতি তথা বাজারের উপরে লগ্নিকারীদের আস্থা। নভেম্বরে সূচক পড়লেও মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে মোটা পুঁজি ঢুকেছে বাজারে। গত মাসে বিভিন্ন ফান্ডের একুইটি প্রকল্পগুলিতে মোট লগ্নি হয়েছে ১১,৬১৪ কোটি টাকা। অক্টোবরের চেয়ে প্রায় ৬৪০০ কোটি বেশি। নভেম্বরে এসআইপি পথে প্রথম বার লগ্নি ছাড়িয়েছে ১১,০০০ কোটি। নভেম্বরের শেষে মিউচুয়াল ফান্ডে মোট সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৩৮.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা। যার অনেকটাই লগ্নি হয় শেয়ার বাজারে।
বিশ্বের নানা দেশে মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দেওয়ায় সুদ বৃদ্ধির আবহ তৈরি হলেও ভারতের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এখনও সে পথে হাঁটেনি। পাশাপাশি, এই অবস্থায় সুদ কমানোরও প্রশ্ন ছিল না। তাই বুধবারের বৈঠকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি রেপো রেট একই (৪%) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে জানুয়ারিতে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প এবং ভারত সরকারের সেভিংস বন্ডের সুদ (৭.১৫%) কমার সম্ভাবনাও কার্যত রইল না। বাজার থেকে বাড়তি নগদ
কিছুটা কমাতে অবশ্য ১৪ দিনের পরিবর্তনশীল রিভার্স রেপো রেটে ঋণ নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তবে ভবিষ্যতে সুদ কমানোর পথ খোলা রেখেছে। ধরে রেখেছে চলতি অর্থবর্ষে দেশের বৃদ্ধির পূর্বাভাস। আর তাদের আশা, আগামী অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে মূল্যবৃদ্ধি নামতে পারে ৫ শতাংশে। আগামী দিনে দাম কমবে এ ব্যাপারে অবশ্য অনেকেই সহমত নন। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির হার সারা বিশ্বেই বাড়ছে।
পাশাপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে শিল্পও। অক্টোবরে শিল্প বৃদ্ধির হার ৩.২%। যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ০.১ শতাংশ বিন্দু কম। উৎসবের মরসুমে আশা ছিল এই হার হয়তো আরও কিছুটা বাড়বে। তার উপরে নভেম্বরে যাত্রিগাড়ির বিক্রি কমেছে ১৯%। সেমিকনডাক্টর চিপের জোগানের ঘাটতি এবং দক্ষিণ ভারতে প্রবল বর্ষণ এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশের দাম বাড়তে থাকায় মারুতি-সহ কিছু গাড়ি সংস্থা এরই মধ্যে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার আরও এক দফা প্রভাব পড়তে পারে চাহিদায়। অনেক শিল্পের পক্ষেই যা ভাল খবর নয়। কারণ, গাড়ি উৎপাদনের সঙ্গে ইস্পাত, রং, চাকা, যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক ইত্যাদির চাহিদা সম্পর্কযুক্ত।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy