আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো হুঁশিয়ারির সুরে না হলেও, শুল্কের প্রশ্নে এ বার ভারতের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কাল থেকে দু’দিনের সফরে দিল্লি আসছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন। ১০-১৪ মার্চ ব্রসেলসে হবে ভারত-ইইউ-র বাণিজ্য বৈঠক। ওই রাষ্ট্রগোষ্ঠীর এক কর্তা জানান, তার আগে গাড়ি, ওয়াইন-সহ বিভিন্ন পণ্যে আমদানি শুল্ক কমাতে দিল্লির উপরে চাপ বাড়ানোর নীতি নিতে চলেছেন তাঁরা। পরিবর্তে ভারতকে দিতে চান তাঁদের সদস্য দেশগুলিতে কৃষি পণ্যের রফতানি বৃদ্ধির সুযোগ। উদ্দেশ্য, জোগান শৃঙ্খলে চিন-নির্ভরতা কমানো।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের পণ্যে চড়া আমদানি শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। পরে জানান, এপ্রিল থেকেই ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে তা কার্যকর হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এতটা কড়া ভাষায় হুমকি দেয়নি ইইউ। তবে কৌশলগত ভাবে একই পথে হাঁটছে। দিল্লিতে মোদী, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠকের কথা লিয়েনের। ব্রাসেলসে হবে মুক্ত বাণিজ্য বৈঠক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার আগে শুল্ক কমানোর দাবি হাওয়ায় ভাসানো হয়েছে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘ভারতের বাজার ততটা মুক্ত নয়। বিশেষত ইইউ এবং তার সদস্য দেশগুলির নানা পণ্যের জন্য। তার মধ্যে গাড়ি, ওয়াইন ও মদ অন্যতম।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রাষ্ট্রগোষ্ঠী হিসেবে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী ইইউ। গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে ১২,৬০০ কোটি ডলার। এক দশকে বেড়েছে ৯০%। রফতানি বাড়াতে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি দিল্লির পক্ষে জরুরি।
এ দিকে, দিল্লিতে মুক্ত বাণিজ্য বৈঠকের পরে ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস এবং বিনিয়োগমন্ত্রী পপি গুস্তাফসন জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে ১৭টি নতুন রফতানি এবং লগ্নি চুক্তি ঘোষিত হয়েছে। যদিও এ নিয়ে সবিস্তারে কিছু বলা হয়নি ব্রিটেনের তরফে। তবে তারা জানিয়েছে, বাজেটে বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৭৪% থেকে বেড়ে ১০০% হওয়ায় এ দেশে ব্যবসা বৃদ্ধির সুযোগ নেবে তাদের বিমা সংস্থাগুলি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)