Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Domestic LPG Price

গ্যাসের দামে নাভিশ্বাস, মুখ ফেরাচ্ছেন নিম্নবিত্ত, প্রশ্নের মুখে মোদীর উজ্জ্বলা যোজনার সাফল্য

চড়া খরচে সিলিন্ডার কেনা, গ্যাস সংযোগ নেওয়ার জটিল প্রক্রিয়া, তাঁদের বাড়িতে সিলিন্ডার সরবরাহ ব্যবস্থার অভাব এবং অভিযোগ জানানোর দুর্বল পদ্ধতিই বড় বাধা স্বল্প রোজগেরে মানুষের সামনে।

An image of Cooking Gas

গৃহস্থের হেঁশেলে রান্না করার সিলিন্ডারের দাম গরিব মানুষের পক্ষে খরচ বহন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৭
Share: Save:

আবারও প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার ‘সাফল্য’। যা দেশের দরিদ্র পরিবারগুলিকে রান্নার গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য এনেছিল মোদী সরকার।

দীর্ঘ দিন হল গৃহস্থের হেঁশেলে রান্না করার সিলিন্ডারের দাম হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। কেন্দ্র উজ্জ্বলা প্রকল্পে তাতে ২০০ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে ঠিকই। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, গরিব মানুষের পক্ষে বাকি খরচ বহন করাও কঠিন। একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় দাবি, রান্নার গ্যাস কেনার আগ্রহ হারাচ্ছে নিম্নবিত্ত পরিবারগুলি। চড়া খরচে সিলিন্ডার কেনা, গ্যাস সংযোগ নেওয়ার জটিল প্রক্রিয়া, তাঁদের বাড়িতে সিলিন্ডার সরবরাহ ব্যবস্থার অভাব এবং অভিযোগ জানানোর দুর্বল পদ্ধতিই বড় বাধা স্বল্প রোজগেরে মানুষের সামনে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম বাজি ছিল উজ্জ্বলা যোজনা। ২০১৬-এ চালু। লক্ষ্য, ক্ষতিকারক জ্বালানির ব্যবহার কমাতে দরিদ্র পরিবারগুলিতে দূষণহীন এলপিজি পৌঁছে দেওয়া। এখানে গ্যাসের সংযোগ নিতে ছাড় মেলে, সিলিন্ডারে দাম শ’দুয়েক সরকারি ভর্তুকি। মোদী সরকার প্রকল্পটি সফল দাবি করলেও, ইতিমধ্যেই তা নিয়ে সংশয় দানা বেঁধেছে। বিরোধী-সহ একাংশের প্রশ্ন, ছাড়ে গ্যাস সংযোগ নিলেও গরিব মানুষ প্রতি বার তা কিনতে হাজারের বেশি খরচ করবেন কী করে? ২০০ টাকা ভর্তুকিও যেহেতু কেনার পরে মেলে। তার উপর বাজারে আনাজ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধের দাম বেড়েছে। চড়া তেলে যাতায়াতেও খরচ হচ্ছে বেশি। ফলে অনেকে সস্তার দূষণকারী জ্বালানিতে ফিরেছেন বলে খবর। সমীক্ষা তা-ই তুলে ধরল।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) সহায়তায় যে ‘ক্লিনার এয়ার অ্যান্ড বেটার হেল্থ’ প্রকল্প চালায় স্বাধীন উপদেষ্টা কাউন্সিল অন এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার, তার অংশ এই সমীক্ষা। বিষয়বস্তু— জৈব জ্বালানির ব্যবহার, এলপিজি-র সংযোগ নেওয়া ও তার ধারাবাহিক ব্যবহার, ঘরে বায়ু দূষণ এবং তার জেরে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মহিলাদের দৃষ্টিভঙ্গি। গত মার্চ পর্যন্ত ৯.৫৯ কোটি উজ্জ্বলা গ্রাহককে এলপিজি-র সংযোগ দেওয়া হলেও সমীক্ষা বলছে, শুধু সেটাই তার ধারাবাহিক ব্যবহারকে নিশ্চিত করে না। অনিশ্চিত আয় এবং সিলিন্ডার কেনার চড়া খরচ সেই পথে বাধা। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী, এখনও ৪১% মূলত আর্থিক দুরবস্থার কারণে কাঠের জ্বালানিতে নির্ভরশীল। কারণ অধিকাংশেরই আয় দৈনিক এবং অনিশ্চিত। ফলে সিলিন্ডার কিনতে একলপ্তে এত টাকা জোগাড় করার ক্ষমতা নেই। এলপিজি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, কাঠামোগত বিষয়গুলি-সহ নানা কারণও তাতে ইন্ধন জোগায়।

১৮ বছরের বেশি বয়সি মহিলারা যাঁরা মূলত জ্বালানি ব্যবহার করেন, বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁদের নিয়ে সমীক্ষাটি হয়। দেখা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের ৬৭.৮% পরিবার কাঠের মতো জ্বালানি ব্যবহার করলেও দিল্লিতে তা মাত্র ০.৮%। সহজলভ্য জ্বালানি অগ্রাধিকার পায় নিম্নবিত্ত পরিবারে। অন্য দুই বাধা, আর্থিক ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এলপিজির দাম এবং সুরক্ষা-স্বাস্থ্যে তার প্রভাব সম্পর্কে ধারণার অভাব। নিম্নবিত্ত পরিবারে এলপিজির ব্যবহার বাড়াতে সমীক্ষকদের পরামর্শগুলির মধ্যে অন্যতম, গ্যাসের দাম কমানো। কিস্তিতে খরচ মেটানোর সুবিধা এবং ৫ কেজির সিলিন্ডার ব্যবহারে উৎসাহ দিতে বলা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে বায়ূ দূষণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE