Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
India-Bangladesh

রাজ্যের সীমান্তে থমকেছে পড়শির সঙ্গে বাণিজ্য

রফতানিকারীদের সংগঠন ফিও-র পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান যোগেশ গুপ্ত জানান, সে দেশে সিংহভাগ পণ্য যাওয়া-আসা করে মূলত রাজ্যের পেট্রাপোল স্থল বন্দর দিয়ে। কিন্তু তা পুরোপুরি বন্ধ, বলছেন, সংগঠনটির ডিরেক্টর জেনারেল এবং সিইও অজয় সহায়।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৩
Share: Save:

বাংলাদেশে আচমকা পালাবদলের অভিঘাতে কার্যত থমকে গিয়েছে ভারতের সঙ্গে পড়শি দেশটির আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বিপাকে পড়া ব্যবসায়ীদের বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গের। পরিস্থিতি কবে ফের স্বাভাবিক হবে, তা বুঝতে পারছেন না কেউ। যদিও মূল্যায়ন বহুজাতিক এসঅ্যান্ডপি-র দাবি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যা ভারতের রফতানি বাণিজ্যে খুব বড় প্রভাব ফেলতে পারবে না। উল্লেখ্য, ভারত থেকে বাংলাদেশে যে সব পণ্য রফতানি হয়, তার মধ্যে প্রধান হল তুলো, পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য, গাড়ি, যন্ত্রপাতি, লোহা ও ইস্পাত, পশুখাদ্য, ডাল, চাল, মশলা, কফি এবং চা। আমদানি হয় তৈরি জামাকাপড়, বস্ত্র, চামড়াজাত পণ্য, মাছ ইত্যাদি।

রফতানিকারীদের সংগঠন ফিও-র পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান যোগেশ গুপ্ত জানান, সে দেশে সিংহভাগ পণ্য যাওয়া-আসা করে মূলত রাজ্যের পেট্রাপোল স্থল বন্দর দিয়ে। কিন্তু তা পুরোপুরি বন্ধ, বলছেন, সংগঠনটির ডিরেক্টর জেনারেল এবং সিইও অজয় সহায়। তাঁর দাবি, অন্য তিনটি স্থল বন্দর দিয়ে অনিয়মিত ভাবে সামান্য পণ্য চলাচল হচ্ছে। চিন্তা বাড়ছে পচনশীল পণ্য নিয়ে। সহায়ের কথায়, ‘‘গত অর্থবর্ষে বাংলাদেশ থেকে এখানে পণ্য আমদানি ৫.৪% কমে হয় ১৮৯ কোটি ডলার। ভারত থেকে সেখানে রফতানি ৩১.৫% কমে। দাঁড়ায় ১১২৫ কোটি ডলার। গত ১০-১৫ দিন ধরে বাণিজ্যে সমস্যা আরও বেড়েছে। আর সোমবার থেকে প্রায় বন্ধ। তবে সেখানকার রফতানিকারীরা ৭-১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন।’’

বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বারের সদস্য জয়ন্ত চক্রবর্তী নিজে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করেন। তাঁর আশঙ্কা, “এমনিতেই গত এক বছরে দু’দেশের বাণিজ্য প্রায় ১০% কমেছে। এ বার আরও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।’’ এঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অরুণ কুমার গারোদিয়া চিন্তিত এঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি নিয়ে, যার অন্যতম প্রধান বাজার বাংলাদেশ। গত এপ্রিল-জুনে এর ব্যবসাও সে দেশে ৮.২% কমে হয়েছে ৫৪.২১ কোটি ডলার। এ বার কোথায় নামবে, সেটাই প্রশ্ন।

বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের সভাপতি নমিত বাজোরিয়া ভারত-বাংলাদেশের কমতে থাকা বাণিজ্য পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার আগে অবিলম্বে বাণিজ্য চুক্তির সওয়াল করেছেন। তবে পরিস্থিতি এমন অশান্ত থাকলে তা সম্ভব কি না, সংশয়ী সংশ্লিষ্ট মহল। অর্থনীতিবিদ সুমন মুখোপাধ্যায়ের মতে, “পড়শি দেশের রাজনৈতিক পালাবদল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে। ভারত থেকে রফতানি হওয়া অন্যতম দুই পণ্য চাল, মশলা। এই দুই ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা সমস্যার মুখে পড়বেন।” তবে শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইন্ডিয়ান চেম্বারের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE