একেই বহু দিন ধরে বিশ্ব বাজারে চাহিদা ঝিমিয়ে। তার উপর আমেরিকা ভারতের ঘাড়ে অতিরিক্ত ২৬% আমদানি শুল্ক চাপিয়েছে। ফলে প্রমাদ গুনছেন রফতানিকারীরা। এর জেরে বাণিজ্যে তৈরি হওয়া সমস্যা মোকাবিলা করতে রফতানির জন্য নেওয়া ঋণের সুদে ভর্তুকি চাইছেন। রফতানিকারীদের সংগঠন ফিয়োর আর্জি, অবিলম্বে ওই খাতে ৫% ভর্তুকি ঘোষণা করুক মোদী সরকার।
আজ থেকেই আমেরিকার শুল্ক চাপছে। ফিয়োর সভাপতি এসসি রলহন বলেন, “এতে আমেরিকার আমদানিকারীদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপবে। তাঁরা ভারতীয় রফতানিকারীদের দাম মেটাতে দেরি করতে পারে। তখন আর্থিক সমস্যার মুখে পড়বে রফতানি শিল্প। তাই আমরা কেন্দ্রের কাছে অবিলম্বে রফতানি ঋণের সুদে ভর্তুকি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’ শিল্প সূত্রের দাবি, রফতানি বাজারে ভারতের প্রতিযোগী অনেক দেশে সুদ তুলনায় কম। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট (যে সুদে আরবিআই ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) ৬.২৫%। ব্যাঙ্ক ঋণে রফতানিকতারীদের সুদ গুনতে হয় ৮-১২%। অথচ চিনে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদ ৩.১%, মালয়েশিয়ায় ৩%, তাইল্যান্ডে ২%, ভিয়েতনামে ৪.৫%।
আগে সুদ সমীকরণ (ইন্টারেস্ট ইকুয়ালাইজ়েশন) প্রকল্পে ৩% ভর্তুকি পেতেন ছোট-মাঝারি রফতানিকারীরা। কিন্তু গত বছর সেটি বন্ধ হয়। এ বার বাজেটে রফতানি উন্নয়নের লক্ষ্যে (এক্সপোর্ট প্রোমোশন মিশন) ২২৫০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার কথা ঘোষণা হয়েছে। ফিয়ো চায়, সবার আগে ওই তহবিল থেকেই সুদে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হোক।
যদিও ৫% ভর্তুকি কতটা সুরাহা দেবে, সংশয়ী একাংশ। তাঁরা তাই দ্রুত সমস্যা মেটাতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় জোর দিচ্ছেন। জরুরি ভিত্তিতে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি সই করার জন্য সক্রিয় হতে বলছেন নয়াদিল্লিকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, আমেরিকার আমদানিকারীরা পণ্যের দাম ১২-১৪% কমাতে বলছে। বরাত চূড়ান্ত করছে না। আর্থিক বোঝার একাংশ আমাদের বহন করতে হবে ঠিকই। তবে ৩-৪ শতাংশের বেশি দাম কমানো অসম্ভব।’’
এ দিকে, বহু দেশ বিকল্প বাজার ধরতে ভারতে রফতানি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। যা উৎপাদনকারীদের সমস্যায় ফেলবে। রলহন বলেন, “শিল্পকে বাঁচাতে সরকারকে বিভিন্ন পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর কথা ভাবতে হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)