Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Business News

রামদেবের পতঞ্জলির ব্যবসা পড়ছে, জানাল সংস্থার বার্ষিক রিপোর্ট

বাবা রামদেবের ‘পতঞ্জলি’র ব্যবসায় এখন জোর মন্দা। লাভের কড়ি আর ততটা ঢুকছে না ঘরে। ফলে, ২০০৬ থেকে পতঞ্জলির ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ রামদেবের কপালে কিছুটা ভাঁজ পড়েছে বলেই মনে করছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ১৭:১১
Share: Save:

সেটা ২০১৭। ‘বাবা’ বলেছিলেন দেখিয়ে দেবেন! ভারতে ব্যবসা করতে এসে ‘বাবা’র ব্যবসার বাহুল্য দেখে নাকি হতাশ হয়ে পড়তে হবে বিদেশি বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে। বাবার আশা ছিল, ২০১৮-র মার্চেই পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বিভিন্ন পণ্যের বিক্রিবাট্টা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে পৌঁছে যাবে ২০ হাজার কোটি টাকায়। হল উল্টোটা। বাবা রামদেবের ‘পতঞ্জলি’র ব্যবসায় এখন জোর মন্দা। লাভের কড়ি আর ততটা ঢুকছে না ঘরে। ফলে, ২০০৬ থেকে পতঞ্জলির ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ রামদেবের কপালে কিছুটা ভাঁজ পড়েছে বলেই মনে করছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।

সংস্থার বার্ষিক আর্থিক রিপোর্টই জানাচ্ছে, পতঞ্জলির বিভিন্ন পণ্যের বিক্রিবাট্টা পড়ে গিয়েছে কম করে ১০ শতাংশ। ২০১৮-র মার্চ পর্যন্ত পৌঁছেছে ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকায়। সংস্থার হাঁড়ির খবর যারা রাখেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, গত অর্থবর্ষে (২০১৮-’১৯) সেই বিক্রিবাট্টা আরও কমে গিয়েছে। গত এপ্রিলের একটি সমীক্ষার দাবি, গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ন’মাসেই পতঞ্জলির বিভিন্ন পণ্যের বিক্রিবাট্টা কমেছে অন্তত চার হাজার ৭০০ কোটি টাকা। বাবার ‘ঘরের এই হালের কথা’ এখনকার ও প্রাক্তন কর্মচারী, স্টোর ম্যানেজার, সাপ্লায়ার, ডিস্ট্রিবিউটরদের মুখে মুখে চাউর হয়ে গিয়েছে। যদিও পতঞ্জলির তরফে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না কেউই।

পতঞ্জলির ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন মিলল না বাবা রামদেবের বছরদু’য়েক আগেকার বহুদর্শী পূর্বাভাস? যাঁরা পতঞ্জলির হাঁড়ির খবর রাখেন, তাঁরা বলছেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠতে গিয়ে, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে গিয়েই নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনেছে বাবা রামদেবের সংস্থা। তার সঙ্গে পতঞ্জলিকে সইতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দি চালুর ধাক্কা। সইতে হয়েছে পণ্য পরিষেবা কর চালুর ধাক্কাও।’’

পতঞ্জলির তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটরের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার। আর রিটেল কাউন্টারের সংখ্যা ৪৭ হাজার। পতঞ্জলির ব্যবসার ‘হৃদপিণ্ড’ ছিল গ্রাম আর মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।

আরও পড়ুন- সুর বদল রামদেবের, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’কে সমর্থন যোগগুরুর​

আরও পড়ুন- রাম, কৃষ্ণ গাঁজা খেতেন না, আপনারা কেন! কুম্ভমেলায় সাধুদের কল্কে কেড়ে নিলেন রামদেব​

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পতঞ্জলির দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, রামদেবের সাধের সংস্থার ৯৮.৫৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে আচার্য বালকৃষ্ণের হাতে। ৪৬ বছর বয়সী বালকৃষ্ণের সঙ্গে বাবার আলাপ হয় তিন দশক আগে, একটি সংস্কৃত শিক্ষার স্কুলে। ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের ঘোষণা অনুযায়ী, বালকৃষ্ণের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৯০ কোটি ডলার (প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা)। গত এপ্রিলে হরিদ্বারে এক সাক্ষাৎকারে বালকৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘‘নেটওয়ার্ক নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। তবে তা দূর হয়েছে। আগামী দিনে বিক্রিবাট্টা আরও বাড়বে পতঞ্জলির।’’ ব্যস, এই টুকুই। পরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সবিস্তার জানার জন্য প্রশ্নমালা পাঠিয়েছিল পতঞ্জলির জনসংযোগ অফিসার (পিআরও) কে কে মিশ্রের কাছে। কোনও জবাব আসেনি।

যদিও সংস্থার জনাকয়েক কর্মী জানিয়েছেন, ‘‘যাঁরা পতঞ্জলির পণ্যাদি এখান থেকে ওখানে নিয়ে যান, তাঁদের ঠিক সময়ে ঠিক পরিমাণে প্রাপ্য দেওয়া হয় না। কোন ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে কোন কোন রিটেল সেন্টারের কোথায় কত বিক্রিবাট্টা হচ্ছে, তার হিসাব রাখার জন্য ভাল সফ্‌টওয়্যারও নেই পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের।

সমস্যা আরও রয়েছে। নেপাল সরকারের ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দফতরের এক পদস্থ কর্তা কে সি সন্তোষ বলেছেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি আয়ুর্বেদের আড়াই হাজার পণ্য বাজারে এনে ফেলেছিল পতঞ্জলি। তা করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি পণ্য অন্য সংস্থাকে দিয়ে বানিয়ে নিয়েছে পতঞ্জলি। পণ্যগুলির উপর লেবেল মারা হয়েছে পতঞ্জলির। তা ধরাও পড়েছে। এটা করতে গিয়ে পতঞ্জলির পণ্যাদির গুণমান বজায় থাকেনি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy