বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত ‘উজ্জ্বল বিন্দু’, বলেছিল আইএমএফ। মোদী সরকারের দাবি, তাদের আনা সংস্কারে ভর করে দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি ভারত। অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় পরিস্থিতি ভাল। তবে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অর্থনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদেরই এক জন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য এবং আইআইএম-আমদাবাদের অধ্যাপক জয়ন্ত আর বর্মা বলছেন, বৃদ্ধির যে হার দেখা যাচ্ছে, তা ‘খুব নড়বড়ে’। অর্থাৎ যতটা বৃদ্ধি হওয়া জরুরি, বাস্তবে সেটা হবে কি না সংশয় থাকছেই। কারণ চড়া সুদ এবং পড়তি চাহিদায় যে কোনও মুহূর্তে বৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে। এমনকি তা কাজের বাজারের চাহিদা মেটাতে পারবে কি না, সেই সন্দেহও আছে।
সম্প্রতি আরবিআই আগামী অর্থবর্ষে ৬.৪% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী, তা হতে পারে ৬.৫%। আর চলতি অর্থবর্ষের জন্য জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের অনুমান ৭%। বর্মা বলছেন, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুঝতে সুদ বাড়িয়েছে আরবিআই। ফলে ঋণের চড়া সুদ সাধারণ মানুষের ধার শোধের খরচ বাড়াচ্ছে। বহু ঋণগ্রহীতা কেনাকাটা কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। চড়া সুদের দরুন পুঁজি জোগাড় করতে সমস্যায় পড়ছে শিল্প। সরকারও আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে লগ্নি ছাঁটছে। এ সবের ধাক্কা লাগছে আর্থিক বৃদ্ধিতে। তাঁর কথায়, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধির হার যা হওয়া দরকার, আমার আশঙ্কা তার থেকে কম হতে পারে।’’
পরের বছরে মূল্যবৃদ্ধির হার অবশ্য বেশ খানিকটা নামবে বলেই ধারণা বর্মার। কারণ সরবরাহ ব্যবস্থা ছন্দে ফিরছে। তাঁর ইঙ্গিত, সেটা হলে সুদ স্থির রাখতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। না হলে তার হার আরও চড়বে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)