Advertisement
E-Paper

ফ্লিপকার্ট, বিগবাস্কেটের পরিষেবা বন্ধ, লকডাউনের গেরোয় শিকেয় অনলাইন ব্যবসা

অভিযোগ, কোথাও স্থানীয় প্রশাসন অতিসক্রিয় হওয়ায় কোপ পড়ছে জরুরি পরিষেবায়। কোথাও আটকে দেওয়া হচ্ছে সংস্থাগুলির পণ্যবোঝাই ট্রাক।

করোনার কোপ অনলাইন শপিংয়ে। ছবি: শাটারস্টক

করোনার কোপ অনলাইন শপিংয়ে। ছবি: শাটারস্টক

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ১২:৩০
Share
Save

লকডাউনের জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে জোর ধাক্কা খেয়েছে একাধিক অনলাইন শপিং সংস্থার ব্যবসা। আর তার ফলে আপাতত ঝাঁপ বন্ধ রেখেছে ফ্লিপকার্ট ও বিগবাস্কেটের মতো অনলাইন শপিং সংস্থাগুলি। পরিস্থিতি বিরূপ জেনেও, এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা স্যানিটাইজার বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যগুলি গ্রাহকদের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে অ্যামাজনের মতো সংস্থা।

করোনা পরিস্থিতির জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করলেও, জরুরি পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, বাস্তবে উল্টো অভিজ্ঞতাই হচ্ছে অনলাইন শপিং সংস্থাগুলির। এত দিন খাবার, মুদিখানা পণ্য এবং ওষুধপত্রের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করে এলেও, করোনার কোপে এ বার দেশ জুড়ে ধাক্কা খাচ্ছে ওই সব সংস্থাগুলি। তাদের অভিযোগ, কোথাও কোথাও স্থানীয় প্রশাসন অতিসক্রিয় হওয়ায় কোপ পড়ছে জরুরি পরিষেবার উপরে। কোথাও বা আটকে দেওয়া হচ্ছে সংস্থাগুলির পণ্যবোঝাই ট্রাক। গত কয়েক দিন ধরেই চলছে এমন পরিস্থিতি।

একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অনলাইন শপিং সংস্থা বিগবাস্কেটের এক কর্তা অভিযোগ করছেন, ‘‘জরুরি পরিষেবা চালু রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট নির্দেশিকা দিলেও, স্থানীয় প্রশাসনের বাধায় আমরা সেই কাজ জারি রাখতে পারছি না।’’ আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশ জুড়ে টানা ২১ দিন লকডাউনের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে জনসাধারণের সুবিধার্থে সমান্তরাল ভাবে জরুরি পরিষেবাও চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সংস্থাগুলির অভিযোগ, বাস্তবে ছবিটা একেবারেই এর উল্টো। আর সরাসরি তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সংস্থাগুলি যে পণ্য পৌঁছে দিতে অসুবিধার মুখে পড়ছে বিষয়টি অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতাদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কী কী অসুবিধার মুখে পড়ছে ওই সব সংস্থাগুলি? তাদের অভিযোগ, দিল্লি, কলকাতা, মুম্বই, হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও আমদাবাদের মতো শহরে গোডাউন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সীমানা পেরিয়ে আসা ওই সব সংস্থার পণ্য পরিবহণেও কোপ পড়েছে এই সময়। নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে ইতিমধ্যেই সমস্ত অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন সব পণ্য সরিয়ে ফেলেছে অনলাইন শপিং সংস্থা অ্যামাজন। তবে ক্রেতাদেরও সাবধান করে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অনলাইনে জিনিস কিনলেই তা সময় মতো হাতে পাওয়া নিশ্চিত নয়। তাতে দেরি হতে পারে। এমনকি বাতিল পর্যন্ত হতে পারে। একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছে আর একটি অনলাইনের মুদিখানার জিনিসপত্র বিক্রি করা সংস্থা গ্রোফার্স-ও। একটি সাক্ষাৎকারে গ্রোফার্সের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার অলবিন্দ্র ধিন্দসা বলছেন, ‘‘আমরা বাকি থাকা অর্ডার পৌঁছে দেওয়ার জন্য সপ্তাহে সাত দিনই কাজ করার পরিকল্পনা করেছি। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি যাতে গ্রাহকদের কাছে সর্বাগ্রে পণ্য পৌঁছে দেওয়া যায়।’’

আরও খবর: এ বার করোনার ভরকেন্দ্র হতে চলেছে আমেরিকা? অশনি সঙ্কেত দিল হু​

অ্যামাজন একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা পণ্য ক্রয় থেকে ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে প্রক্রিয়া এবং কৌশল ঘন ঘন বদল করছে। তারা গৃহস্থের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পণ্য, স্যানিটাইজার, শিশুদের ব্যবহারের জিনিসপত্র ও ওষুধপত্রের মজুত ও সরবরাহে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

ফ্লিপকার্ড, বিগবাস্কেট ও অ্যামাজনের অ্যাপ খুললেই দেখাচ্ছে এমন নোটিস।

শুধু পণ্য পরিবহণ, মজুত বা তা সরবরাহ নয়, করোনা-পরিস্থিতির মধ্যে তীব্র কর্মী সঙ্কটেও সংস্থাগুলি ভুগছে বলে তাদের দাবি। দেশ জুড়ে করোনা আতঙ্ক যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে কমছে ওই সব সংস্থার কর্মী সংখ্যা। গোডাউন, ডেলিভারি, কল সেন্টার ইত্যাদি জায়গাগুলিতে তাদের কর্মী সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ কমে গিয়েছে বলেও অনলাইন শপিং সংস্থাগুলির দাবি। ক্লিকপোস্ট নামে একটি ব্যবস্থাপনা সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট অব বিজনেস প্রাংশু কাছোলিয়া যে তথ্য দিয়েছেন তা চমকে ওঠার মতো। তাঁর কথায়, ‘‘২৩ মার্চ ই-কমার্স সংস্থাগুলির পণ্য ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিমাণ ৪০% কমে গিয়েছিল। পণ্য বিক্রেতার কাছেই ফিরে যাওয়ার হার পৌঁছেছে ৩৩০%-এ।’’ এর ফলে অনলাইন সংস্থার উপরে আর্থিক বোঝা আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

একই অবস্থা আর একটি অনলাইন শপিং সংস্থা স্ন্যাপডিলেরও। সোমবার তাদের ব্যবসার পরিমাণ অন্যান্য দিনের থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০%। একই পরিস্থিতি ফ্লিপকার্টেরও। আপাতত পরিষেবা বন্ধ রেখেছে ফ্লিপকার্টও। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত নতুন করে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তারা। নতুন করে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ডিমার্টের মতো অফলাইন চেন বিজনেস সংস্থাগুলিও। খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে রাস্তায় নেমে ডেলিভারি বয়দের খারাপ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ জোম্যাটোরও। পুলিশ ডেলিভারি বয়কে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাদের এক মুখপাত্র আবেদন করেছেন প্রশাসনের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করব যাতে আমাদের কর্মীদের কাজ করতে দেওয়া হয়।’’

আরও খবর: গৃহবন্দি ২১ দিন, চিন্তা গরিব আর অসহায়দের নিয়ে

তবে এর মধ্যেই কিছুটা আশার খবর শোনাচ্ছে অনলাইনে ওষুধ বিক্রয়কারী সংস্থাগুলি। স্থানীয় দোকানেই ওষুধ সরবরাহ করে ওই সব সংস্থাগুলি। তার ফলে তাতে তেমন ভাবে কোপ পড়েনি। যদিও রাস্তায় নেমে কর্মস্থলে পৌঁছতে কর্মীরা পুলিশি বাধার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছেই।

Coronavirus Business Amazon Grofers Snapdeal Zomato E Commerce

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}