প্রতীকী ছবি।
বাকি পড়েছে আট মাসের বেতন। প্রতিবাদে বিএসএনএল কলকাতা সার্কলের (ক্যালকাটা টেলিফোন্স) ঠিকা কর্মীদের একাংশ চালাচ্ছেন অনশন-আন্দোলন। আর তার জেরে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। নাকাল হচ্ছেন গ্রাহক।
অভিযোগ উঠেছে, ঠিকা কর্মীদের অভাবে ল্যান্ডলাইন, ব্রডব্যান্ড, লিজ়ড্ লাইন ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হচ্ছে না বহু জায়গায়। ফলে কলকাতায় ২৬ হাজারেরও বেশি ল্যান্ডলাইন অকেজো হয়ে পড়ে, খবর সংস্থা সূত্রের। কর্মী ইউনিয়নগুলির যৌথ মঞ্চ সমস্যার দায় চাপিয়েছে কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে। আর কর্তৃপক্ষের যুক্তি, দিল্লির সদর দফতর থেকে টাকা না আসলে বেতন হবে কী করে! কিন্তু গ্রাহকদের প্রশ্ন, এই চাপানউতোরে তাঁদের কেন ভুগতে হবে? ফোনের বিল মিটিয়েও সেই দায় তাঁরা নেবেন কেন?
গ্রাহকদের বক্তব্য, অভিযোগ জানিয়ে কাজ হয়নি। কখনও স্থানীয় অফিস জানাচ্ছে, ঠিকা কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় মেরামতি থমকে। শুধু স্থায়ী কর্মীদের দিয়ে সব কাজ হবে না। আবার কোথাও স্থায়ী কর্মীরা লাইন সারাতে গেলে বাধার মুখে পড়ছেন। আর তাতেই উঠছে প্রশ্ন, পরিষেবা না পেয়ে গ্রাহক অন্য সংস্থায় পা বাড়ালে প্রতিযোগতায় কি আরও পিছিয়ে পড়বে না বিএসএনএল? লোকসানের বহর কি আরও বাড়বে না? এমনিতেই যেখানে আর্থিক বোঝায় কাহিল তারা। তবে কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে এই সমস্যা হলেও, ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল সূত্রে খবর, রাজ্যের বাকি অংশে সংস্থার পরিষেবা মোটামুটি স্বাভাবিক।
ক্যালকাটা টেলিফোন্স (ক্যাল-টেলে) সূত্রের খবর, ফোন লাইন রক্ষণাবেক্ষণের মূল দায়িত্বে প্রায় ৪,৮০০ জন ঠিকা কর্মী। গ্রাহক ভোগান্তির কথা মানলেও, তাঁদের জয়েন্ট ফোরামের কলকাতা সার্কলের সম্পাদক আহ্বায়ক অরূপ সরকারের অভিযোগ, ওই কর্মীদের সংসারে হাঁড়ি চড়ছে না। বকেয়া বেতন দিতে মাসে প্রায় ১৩.৫ কোটি টাকা দরকার। অথচ সদর দফতর সম্প্রতি পাঠিয়েছে ১.৯০ কোটি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এ ভাবে কত দিন ভুখা পেটে চালাবেন তাঁরা?’’
আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের অবশ্য দাবি, কোথাও গ্রাহক পরিষেবা ক্ষুণ্ণ হয়নি। রাজ্যে ১৫-২০ জন ছুটি নিয়ে অনশন-আন্দোলন করছেন। বাকিরা দফতরে হাজিরা দিয়ে কাজেও যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের শ্লোগান, ‘শিল্প বাঁচাও, শ্রমিক বাঁচাও’।
তবে দু’জনেই বেতন সমস্যা নিয়ে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। দোলার দাবি, এ ভাবে বেতন বন্ধ বেআইনি। অরূপ বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিন ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দু’তিন মাসের বেতন দেওয়ার। সঙ্গে সঙ্গে কাজে যোগ দেব।’’
গ্রাহক সমস্যার কথা মানছেন ক্যাল-টেলের কার্যনির্বাহী সিজিএম এস কে সামন্ত। তাঁর দাবি, ‘‘দু’দিক দিয়েই কঠিন পরিস্থিতি। অন্তত কয়েক মাসের বেতনের টাকা দিতে কর্পোরেট অফিসকে চিঠি দিয়েছি। তাতে ওঁদের পরিবার যেমন বাঁচবে, তেমনই সুষ্ঠু হবে পরিষেবা।’’
আর বিরোধীদের প্রশ্ন, সমস্যার শিকড় ক্রমশ গভীরে যাচ্ছে দেখেও কেন্দ্র কেন চুপ? বেশ কয়েক মাস ধরেই সংস্থাটিতে মূলধন জোগানের আশ্বাস দিলেও, এখনও কেন তা চূড়ান্ত করছে না তারা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy