ছবি: সংগৃহীত
করোনার বিষাক্ত কামড় সারিয়ে অর্থনীতিকে ফের ‘সুস্থ’ করার পথে চাহিদায় ভাটাই যে মূল বাধা, তা ফের স্পষ্ট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্রেতা-আস্থা সমীক্ষায়।
অর্থনীতির হাল, কাজের সুযোগ তৈরি থেকে শুরু করে আয় বৃদ্ধি— বিভিন্ন বিষয়ে ক্রেতা-আস্থা কোথায় টোল খেয়েছে আর কোথায় তা পোক্ত, নিয়মিত সেই সমীক্ষা করে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সাধারণত সেই আস্থা যত মজবুত, জিনিস কিনতে খরচের বিষয়ে তত বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন ক্রেতা। আর চাকরি, আয়, এমনকি দেশের আর্থিক অবস্থার বিষয়ে আশঙ্কা যত বাড়বে, ততই খরচে হাত গোটানোর সম্ভাবনা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিকতম সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে মাসে অর্থনীতি আগের তুলনায় ভাল হয়েছে বলে মনে করছিলেন ৩৮.৮%। উল্টো মত দেন ৩৭.৭%। ২৩.৬% বলেছিলেন, তা আছে মোটামুটি একই। অর্থাৎ, অর্থনীতির হাল ফিরছে বলে আস্থা রেখেছিলেন ১.১ শতাংশ বিন্দু বেশি জন। সেখানে গত মাসে অর্থনীতি খারাপ হয়েছে ভাবা মানুষ ৭৪.৪%। ভালর পক্ষে ভোট ১৪.৪ শতাংশের। অর্থাৎ, অর্থনীতিতে আস্থা খোয়ানো জনের সংখ্যা ৬০ শতাংশ বিন্দু বেশি। আগামী বছরের মে মাসেও অর্থনীতি পুরোপুরি শোধরাবে না-ভাবা ক্রেতার সংখ্যা বেশি ১১.৭ শতাংশ বিন্দু। (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে)।
একই ছবি কাজের সুযোগ ও আয়ের ক্ষেত্রে। লকডাউনের পরে মে মাসে কাজের সুযোগ কমেছে মনে করা জনের সংখ্যা ৪৮.২ শতাংশ বিন্দু বেশি। আগামী বছরের মে-তেও সেই ছবি উল্টে যাবে ভাবতে পারা ক্রেতার সংখ্যা কাজ কমই থাকার আশঙ্কায় ভোগা মানুষের তুলনায় ৫.৯ শতাংশ বিন্দু কম। আগের তুলনায় আয় কমেছে, এমন ক্রেতা গত মাসে নিট ৪০.৮% বেশি। তবে দল ভারী পরের বছরে আয় বাড়বে ভাবা মানুষের।
অর্থনীতি, চাকরি, আয়— সবেতেই এমন টানাটানির প্রতিফলন ক্রেতার ব্যয়ে। জোর গলায় আগের তুলনায় বেশি ব্যয়ের দাবি করা নিট ক্রেতার সংখ্যা গত মাসে কমেছে। তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ, অত্যাবশ্যক পণ্যের বাইরে অন্য সমস্ত কেনাকাটায় প্রবল ভাবে রাশ টানতে চাইছেন সাধারণ মানুষ। যে কারণে অনাবশ্যক পণ্য-পরিষেবায় আগের থেকে বেশি খরচ করা ক্রেতার সংখ্যা গত মাসে ৩২.৫ শতাংশ বিন্দু কম! এমনকি পরের বছরেও খরচে সেই হাত গুটিয়ে থাকার প্রবণতা স্পষ্ট।
প্রথম সারির অর্থনীতিবিদদের এক বড় অংশ গোড়া থেকেই বলেছেন, মোদী সরকার ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্পের ঢাক পেটাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু চাহিদা চাঙ্গা করার দাওয়াই তাতে নেই। তাঁদের যুক্তি, চাহিদা না-থাকলে, নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি তো দূর, উল্টে কাজ যাবে বহু জনের। যা ইতিমধ্যেই ঘটছে। আর আয়ের কল ক্রমশ বন্ধ হলে, কেনাকাটা বাড়াবেন কাঁরা? এই বিষয়টি স্পষ্ট রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্রেতা-আস্থা সমীক্ষাতেও।
বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, উপদেষ্টা ও মূল্যায়ন সংস্থার অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসকে সম্ভাবনার অঙ্কে পাশাপাশি সাজালে, মোটামুটি মাঝামাঝি জায়গায় কোনগুলি, তারও বিবরণ রয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সাইটে। সেই অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি নামতে পারে শূন্যের ১.৫% নীচে। কিন্তু পরের বছর নীচু ভিতের সুবিধা নিয়ে তা হতে পারে ৭.২%। অর্থাৎ কিছুটা হলেও হাল ফেরার আশা রয়েছে। কিন্তু ব্যয়ে কোপের ছবি সেখানেও স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy