রাজ্যের উত্তর এবং দক্ষিণের নানা প্রান্তে জনপ্রিয় ‘হোম স্টে’ ব্যবস্থা। বাজেট-প্রস্তাবে তাতে ‘মুদ্রা ঋণ’ প্রকল্পের সুযোগ মিলবে শুনে অনেকে খুশি, অনেকে ধন্দে। কারণ, ঋণের শর্ত স্পষ্ট হয়নি। রাজ্যগুলির সঙ্গে অংশীদারিতে দেশের পঞ্চাশটি পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নতির কথা শনিবার বাজেট-প্রস্তাবে বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যদিও সে প্রকল্পের খসড়া তৈরিতে রাজ্যের কোনও পর্যটন কেন্দ্র ছিল না বলে দাবি করেছেন পর্যটন সংস্থার পরিচালকদের একাংশ।
‘হোম স্টে’র জন্য যে ‘মুদ্রা ঋণ’-এর কথা বাজেটে বলা হয়েছে, তাতে ‘হোম টুরিজ়ম’ গতি পাবে বলে মনে করেন ‘ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায়। তবে ঋণের শর্ত না জেনে লাভ-ক্ষতির হিসাব স্পষ্ট হবে না, বলছেন ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল। ঋণ মেলার পদ্ধতির সরল করা দরকার বলে মত পুরুলিয়া জেলার এক পর্যটন ব্যবসায়ীর।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা মনে করাচ্ছেন, বাজেট-প্রস্তাবে স্বাস্থ্য পর্যটনে সহজে ভিসার যে কথা বলা হয়েছে, সেই ঘোষণা আগেও হয়েছিল। কিন্তু এমন ক্ষেত্রে কাজের কাজ হতে সময় লাগে বিস্তর। ফলে বাস্তবে কতটা কার্যকরী হয়, তা দেখতে হবে। মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের কিরীটেশ্বরী ‘দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম’ বলে ২০২৩ সালে কেন্দ্র ঘোষণা করেছিল। কিরীটেশ্বরী মন্দির কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ দাস বলেন, “গত দেড় বছরে কেন্দ্রের কোনও আর্থিক সাহায্য পৌঁছয়নি। সাংসদ তহবিলের টাকায় মন্দির প্রাঙ্গণে যাত্রিনিবাস তৈরি শুরু হয়েছে শুধু।”
গৌতম বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে পর্যটনের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ বাজেটে ঘোষিত হলেও বাড়তি উৎসাহ নেই পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারিতে। দাঁতনের এই বৌদ্ধ মহাবিহার রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব দফতরের অধীন। শনিবার ‘মোগলমারি বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক অতনু প্রধান বলেন, “এই মহাবিহার যদি জাতীয় সৌধের মর্যাদা পায়, তবেই কেন্দ্রীয় বাজেটের ঘোষণা কার্যকর হবে। এই মুহূর্তে সেই রকম সম্ভাবনা আমাদের নজরে নেই।”
গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ ঘোষণা, ভাঙন রোধ ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং সুন্দরবন-সহ বকখালিকে উন্নত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আর্জি লিখিত ভাবে কেন্দ্রের কাছে জানিয়েছেন বলে দাবি মথুরাপুরের তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদারের। তাঁর ক্ষোভ, “বাংলা এ বারও বঞ্চিত হল।” বিজেপির নেতা অরুণাভ দাসের দাবি, “আগে বরাদ্দ হওয়া প্রকল্পের হিসাবই এখনও দিতে পারেনিতৃণমূল সরকার।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)