নতুন শিখর ছুঁল সোনার দাম। পুজোর ছুটির পরে কলকাতায় সোমবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল, ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট খুচরো সোনা এই প্রথম ৭৬,৬৫০ টাকায় উঠেছে। জিএসটি ধরে ৭৮,৯৪৯.৫০ টাকা। ছুটির আগে গত বুধবার পাকা সোনা এবং গয়নার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় তা ছিল কর ছাড়া ৭৫,৪০০ টাকা।
এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট মহল আঙুল তুলেছে পশ্চিম এশিয়ার দিকে। সেখানে যুদ্ধের আবহে বিশ্ব জুড়ে সোনা অস্থির। যার প্রভাব পড়ছেভারতে। পাকা সোনার ব্যবসায়ী জেজেগোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ অজমেরা বলেন, “পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের তাপ না কমা পর্যন্ত দর কমার সম্ভাবনা কম। পুঁজি সুরক্ষিত রাখতে লগ্নিকারীরা আঁকড়ে ধরেছেন হলুদ ধাতুকে। যা দামকে ঠেলে তুলেছে।’’ তবে তাঁর মতে, অনিশ্চিত বাজারে লগ্নিকারীদের মধ্যে সোনা বিক্রি করে মুনাফার টাকা তোলারও ঝোঁক থাকে। বিক্রির বহর বাড়লে দাম কিছুটা কমে। ফের পড়তি বাজারে তাঁরা যখন সোনা কিনতে থাকেন, তখন ফের চড়তে থাকে দাম।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে এবং সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভঙ্কর সেনের দাবি, ২৯-৩০ অক্টোবর ধনতেরসের গয়নার বাজার নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। তবে সমরবাবুর ধারণা, চড়া দাম ক্রমশ গা-সওয়া হয়ে যাবে। ক্রেতারা পুরোপুরি মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারবেন না। শুভঙ্করের বক্তব্য, “দামের ছেঁকা যে ক্রেতাদের গায়ে লাগবে না, তামনে করছি না। তবে ধনতেরসে মনে হয় হাল্কা সোনার গয়না কিনবেন ক্রেতারা। সেই বরাত আসছেও।’’ হলদিয়ার গয়না ব্যবসায়ী মধুসূদন কুইলার অবশ্য আশঙ্কা, দাম আরও বাড়লে ক্রেতা মেলা কঠিন হবে।
ছোট ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে সমস্যায়। তাঁদের এক জন ও কারিগরদের সংগঠন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী কমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, “বড় দোকানে কিছুবিকোচ্ছে। ছোটরা আতান্তরে। এমন চললে আরও অনেক ব্যবসা বন্ধ হবে। কারিগরেরা চিন্তায় রয়েছেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)