আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। ফাইল ছবি।
গত সপ্তাহে আমেরিকায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক ও সিগ্নেচার ব্যাঙ্ক বন্ধের পরে যে আশঙ্কা ছড়িয়েছিল, তা আরও বাড়ে বুধবার সুইৎজ়ারল্যান্ডের ব্যাঙ্ক ক্রেডিট সুইসের আর্থিক হাল খারাপ হওয়ার খবরে। বৃহস্পতিবার জানা গেল, আর্থিক সঙ্কট যুঝতে বিক্রির পথ খুঁজছে আমেরিকারই ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাঙ্ক। তহবিল জোগাড় করতে মরিয়া তারা। ব্যাঙ্কটি সরাসরি কিছু জানায়নি। তবে সূত্রের দাবি, লাগাতার বাড়তে থাকা সুদের হারই বিপাকে ফেলছে সকলকে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া সুদের জমানায় ব্যাঙ্কিং শিল্পের একাংশে যে একটা আর্থিক অনিশ্চয়তা দানা বাঁধছে সেটা স্পষ্ট। যা মনে করাচ্ছে ২০০৮-এর মন্দাকে, যখন বিশ্ব জুড়ে একের পর এক ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়েছিল।
এ সপ্তাহের শুরুতে ক্রেডিট সুইস জানিয়েছিল, তাদের ম্যানেজারেরা ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্যে দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছেন। তবে পরিস্থিতি যুঝতে তারা তৈরি। সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অন্যতম শেয়ারহোল্ডার সৌদি ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অবশ্য নতুন করে ক্রেডিট সুইসে লগ্নি করতে অস্বীকার করে। বেগতিক বুঝে সুইৎজ়ারল্যান্ডের শীর্ষ ব্যাঙ্ক তড়িঘড়ি বুধবার রাতে সেখানে প্রায় ৫৪০০ কোটি ডলার ঢালার কথা ঘোষণা করে। যে কারণে বৃহস্পতিবার তার শেয়ার দর ২৫% বাড়ে। এর আগে আমেরিকাতেও আতঙ্ক কমাতে দেউলিয়া ব্যাঙ্ক দু’টির সমস্ত গ্রাহককে দ্রুত তাঁদের আমানত তোলার সুযোগ দিয়েছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
তবে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, দুই দেশেই সরকার এবং শীর্ষ ব্যাঙ্ক দ্রুত পদক্ষেপ করেছে ঠিকই। তবে তাতে চিন্তামুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় গত বছরের মার্চ থেকে দ্রুত গতিতে সুদ বাড়ছে সব দেশে। আমেরিকায় বৃদ্ধি ৪৫০ বেসিস পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার সুদের হার আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে ইউরোপের শীর্ষ ব্যাঙ্কও। আগামী দিনেও সুদ বৃদ্ধির গতি কমার কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। ফলে অনেক ব্যাঙ্কের পক্ষেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে চটজলদি মানিয়ে নেওয়া কঠিন হচ্ছে। আর লাগাতার এই সুদ বৃদ্ধির জেরে ব্যাঙ্কিং শিল্পে তৈরি হওয়া সঙ্কট আমেরিকা থেকে ছড়াচ্ছে ইউরোপেও, যা বেশ বিপজ্জনক। অবিলম্বে সতর্ক হতে হবে গোটা বিশ্বকেই।
এ জন্যই তাঁদের বার্তা, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক যেমন বিভিন্ন দেশে নতুন সংস্থাগুলির (স্টার্ট আপ) পুঁজির অন্যতম সূত্র ছিল, তেমনই ক্রেডিট সুইস বিশ্বের বড় ব্যাঙ্কগুলির অন্যতম। তাদের ব্যবসা ছড়িয়ে ভারত-সহ বহু দেশে। ফলে এ হেন ব্যাঙ্কের আর্থিক হাল খারাপ হলে তার ধাক্কা কোনও একটি প্রান্তে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আপাতত পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তাতেই চোখ সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy