—প্রতীকী চিত্র।
পেঁয়াজ-সহ কিছু আনাজের দাম গত মাসে আগের বছরের ওই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। আর প্রধানত তার ফলেই বেড়ে গিয়েছে গৃহস্থের বাড়িতে নিরামিষ থালি রান্নার খরচ। একটু-আধটু নয়, বৃদ্ধির হার প্রায় ৯%। গত বছর এক প্লেট ছিল ২৫.৫০ টাকা। এ বছরের মে মাসে হয়েছে ২৭.৮০ টাকা। আগের মাস অর্থাৎ এপ্রিলের ২৭.৪০ টাকার নিরিখেও তা অতি সামান্য হলেও বেশি। বৃহস্পতিবার এই তথ্য তুলে ধরেছে মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল।
তবে তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, যাঁরা আমিষ খান, তাঁরা মূল্যবৃদ্ধির হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পেয়েছেন। কারণ ২০২৩-এর তুলনায় এ বার মুরগির মাংসের দাম বেশ খানিকটা কমে গিয়েছে। ফলে কমেছে আমিষ থালি তৈরি করার খরচও। গত বছরের মে-তে তা ছিল ৫৯.৯০ টাকা। এ বছর তা নেমে এসেছে ৫৫.৯০ টাকায়। এপ্রিলের ৫৬.৩০ টাকার সঙ্গে তুলনা করলেও খরচ কমেছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মাছ-মাংস খাওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা সকলের থাকে না। কারণ, সেগুলি কেনার খরচ এমনিই অনেক বেশি। স্বল্প বা সাধারণ রোজগেরে বহু মানুষের তাই প্রধান খাদ্য ডাল-ভাত। কিন্তু সেই ডাল-ভাত রান্নার খরচই যদি বেড়ে যায়, তা হলে অনেকে সংসার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাবেন। তার উপর রান্নার গ্যাস, পরিবহণ জ্বালানির দাম চড়ে থাকায় যাতায়াতের ভাড়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য-সহ সব কিছুই চড়া। ফলে দৈনন্দিন খরচ-খরচা বাজেট ছাড়িয়েছে। ক্রিসিলের এই রিপোর্টকে তাই আমজনতার দুর্ভোগ বৃদ্ধির দলিল হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা।
খাদ্যপণ্যের দামের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রতি মাসে প্রকাশিত হয় ক্রিসিলের ‘রোটি রাইস রেট’ (ভাত-রুটির হার) রিপোর্ট। সংস্থার দাবি, আনাজ, ডাল, মাংস ইত্যাদি-সহ বিভিন্ন কাঁচামালের দামের ভিত্তিতে ভারতের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে গৃহস্থের বাড়িতে আমিষ-নিরামিষ খাবার রান্না করে থালি তৈরির গড় খরচ হিসাব করে তারা। ফলে সেখানে ধরা পড়ে এক মাসের মধ্যে বা আগের বছরের ওই সময়ের নিরিখে সাধারণ মানুষের আর্থিক বোঝা কতখানি বাড়ছে। রান্নার গ্যাস, ভোজ্য তেল এবং মশলার খরচও ধরা হয় হিসাবে।
ক্রিসিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত মাসে আগের বছরের তুলনায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৩%। টোম্যাটো এবং আলু চড়েছে যথাক্রমে ৩৯% এবং ৪১%। দেশের বড় অংশের প্রধান খাবার যে চাল, তার মূল্যবৃদ্ধি ১৩% আর ডালের ২১%। যেহেতু নিরামিষ থালির মধ্যে রুটি, ভাত, টোম্যাটো, আলু, ডাল এবং সালাড থাকে, তাই সার্বিক ভাবে খরচ বেড়ে গিয়েছে অনেকখানি। সংস্থাটি জানিয়েছে, রবি মরসুমে পেঁয়াজের ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি রোগের কারণে আলুর ফলনও কমেছে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে আলুর চাষ মার খেয়েছে। তাতেই সমস্যা বেড়েছে। তবে এই থালির দাম আরও বাড়েনি জিরা, লঙ্কা এবং ভোজ্যতেলের দাম কমে যাওয়ার ফলে। তবে আমিষ থালিতে ডালের বদলে মুরগির মাংস থাকে। সেটাই ওই পাতের অর্ধেক খরচ। ফলে মাংসের দাম ১৬% কমায় সস্তা হয়েছে আমিষ থালি।
সমীক্ষা বলছে
মে মাসে বাড়িতে নিরামিষ থালি তৈরির গড় খরচ বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯%।
দায়ী মূলত পেঁয়াজ, টোম্যাটো, আলু। এগুলির দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৪৩%, ৩৯% এবং ৪১%।
চাল এবং ডালের দামও বেড়েছে যথাক্রমে ১৩% এবং ২১%।
তবে জিরা, লঙ্কা এবং ভোজ্যতেলের দাম কমেছে যথাক্রমে ৩৭%, ২৫% এবং ৮%। যা নিরামিষ থালি রান্নার খরচ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কাকে কিছুটা আটকেছে।
আমিষ থালি রান্নার খরচ অবশ্য গত মাসে বেশ কিছুটা কমেছে মুরগির মাংসের দাম ১৬% সস্তা হওয়ায়।
এতে ডালের বদলে থাকে মাংস। তার দামই খরচের অর্ধেক। ফলে সার্বিক ভাবে থালি রান্নার খরচ গত বছরের মে মাস এবং গত এপ্রিল, দুইয়ের নিরিখেই কমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy