Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
New Labour Codes

শ্রমবিধি কার্যকরের চেষ্টা হলে বিরোধিতার হুমকি

বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের অবশ্য এখনও অভিযোগ, নতুন বিধিতে শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে মালিকপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করতেই উদ্যোগী শাসকদল।

An image of Labour

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৫
Share: Save:

প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে অতিমারির মধ্যে সংসদে বিরোধী পক্ষের অনুপস্থিতিতে ‘বিনা বাধায়’ পাশ হয় নতুন শ্রমবিধি। তা কার্যকরের নিয়ম তৈরি হলেও, বিতর্কের জেরে এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি মোদী সরকার। তবে ফের ক্ষমতায় ফিরলে পৃথকভাবে চারটি শ্রমবিধিকে নিয়ে গড়া ওই সার্বিক শ্রমবিধি কার্যকরের ইঙ্গিত দিয়েছে বিজেপি। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের অবশ্য এখনও অভিযোগ, নতুন বিধিতে শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে মালিকপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করতেই উদ্যোগী শাসকদল। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনেও তার বিরোধিতায় কোমড় বেঁধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। পাশাপাশি ইউনিয়নগুলির দাবি, বর্তমান শ্রম আইন সংশোধন করতে হলে সেই পথে এগোতে হবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই।

সম্প্রতি বিজেপির এক মুখপাত্র জানান, ভোটে জিতে তৃতীয়বারের জন্য কেন্দ্রে সরকার গড়লে তাঁদের অগ্রাধিকারের তালিকার অন্যতম বিষয় ওই বিধি কার্যকর করা। পাল্টা বিরোধিতার ঝাঁঝালো সুর সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, আইএনটিইউসির সহ-সভাপতি তথা আইএলও-র পরিচালন পর্ষদের সদস্য অশোক সিংহ, ইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ, তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের কথায়।

এ নিয়ে আপত্তি তুলে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকেরও দাবি, নতুন বিধিতে শ্রমিকদের কারখানায় ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টা কাজ করানোর ক্ষমতা পাবেন মালিকেরা। চালু আইনে ১০০ জনের বেশি কর্মী সংখ্যার সংস্থায় ছাঁটাই করতে হলে রাজ্যের সায় লাগে। তা ৩০০ করার প্রস্তাব রয়েছে। অর্থাৎ, অনেক বেশি সংস্থায় সহজেই কর্মী ছাঁটাইয়ের অধিকার মিলবে। তাই এ রাজ্যে বিধিটি চালু করা হবে না।

একই আশঙ্কা প্রকাশ করে সিংহের দাবি, নতুন প্রস্তাবে কর্মী ছাঁটাই থেকে শুরু করে কারখানা সহজেই বন্ধের রাস্তা গড়ে মালিকদের স্বার্থ রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইএলও-কেও তা জানিয়েছেন। কেন্দ্র জোর করে বিধি চালুর চেষ্টা করলে ইউনিয়নগুলি ও সংযুক্ত কিসান মোর্চা যৌথ ভাবে দেশ জুড়ে আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছে।

তপনবাবুর অভিযোগ, চালু শ্রম আইনে শ্রমিকদের অধিকার ও চাকরির সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রায় সব রক্ষাকবচ নতুন বিধিতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। শ্রমিকের অধিকার রক্ষার হাতিয়ার ধর্মঘটের সুযোগ কার্যত বন্ধ করতে নানা শর্ত চাপানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু প্রস্তাব বদলের জন্য আইন সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে না। প্রশাসনিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেই তা করা যাবে। যা আরও সংশয়ের।

স্থায়ী চাকরির বদলে অনেক সংস্থা এত দিন স্বল্প সময়ের (ফিক্সড টার্ম) জন্য চুক্তি ভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে পারলেও তার আইনি বৈধতা ছিল না। অশোকবাবুর দাবি, নতুন বিধিতে সেই সুযোগ থাকায় দীর্ঘমেয়াদি চাকরির সুযোগ কমার আশঙ্কা। শ্রমিকদের দাবি আদায়ে ইউনিয়নের ক্ষমতাও খর্ব হবে।

নানা আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৫২ সাল থেকে শ্রমিকদের পাওয়া অধিকার ও রক্ষাকবচের নয়া বিধিতে বিলুপ্তি ঘটবে বলে অভিযোগ ঋতব্রতের। তাঁর কটাক্ষ, সহজে ব্যবসার পরিবেশ তৈরির নামে শ্রমিকদের স্বার্থ হানি করাই মোদী সরকারের উদ্দেশ্য।

অন্য বিষয়গুলি:

New Labour Codes BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy