প্রতীকী ছবি
প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির নীতি বদল নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগল চিন।
শনিবারই কেন্দ্র জানিয়েছিল, যে সব দেশের স্থলসীমান্ত ভারতের সঙ্গে যুক্ত, সেখানকার কোনও সংস্থা বা ব্যক্তিকে এ দেশের সংস্থায় লগ্নি করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। ‘সুযোগসন্ধানী অধিগ্রহণ’ আটকাতেই এই সিদ্ধান্ত। বিশেষজ্ঞদের মত ছিল, ইঙ্গিতের তির আসলে চিনা সংস্থাগুলির দিকেই। তার পরেই সোমবার ভারতে চিনের দূতাবাসের মুখপাত্র জি রংয়ের দাবি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম এবং অবাধ বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী ভারতের সিদ্ধান্ত। এতে ভাঙছে জি-২০ দেশগুলির মধ্যে হওয়া ঐকমত্য। যা বাণিজ্যে বৈষম্যও বাড়াবে। বেজিংয়ের আশা, ভারত ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্ত ফিরে দেখবে।
হিসেব বলছে, গত বছর বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থায় ৩২০ কোটি ডলার ঢেলেছে চিনের সংস্থাগুলি। ২০১৮ সালে তা ছিল ২০০ কোটি। জি রং জানান, সব মিলিয়ে ভারতে চিনা সংস্থাগুলির লগ্নি প্রায় ৮০০ কোটি ডলার। চিনের প্রায় ১০০০টি সংস্থা ভারতের মোবাইল ফোন, গাড়ি, বাড়িতে ব্যবহারের বৈদ্যুতিন পণ্য ও পরিকাঠামো-সহ নানা ক্ষেত্রে পুঁজি ঢেলেছে। যার হাত ধরে এ দেশে তৈরি হয়েছে বহু চাকরি, উন্নত হয়েছে নানা শিল্প। তাই ‘সুস্থ বাণিজ্যের’ পরিবেশ বজায় রাখা দু’দেশের পক্ষেই ভাল। করোনা-সঙ্কটে সব দেশের একযোগে কাজ করার উপরেও জোর দেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, এমনিতেই চিনের সঙ্গে বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে ভারত। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে নয়াদিল্লির সঙ্গে তাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল ৫৭৮৬ কোটি ডলার। এই অবস্থায় এই ঘটনা ভারত ও চিনের মধ্যে শুধু যে আর্থিক টানাপড়েন বাড়াবে, তা-ই নয়। ফের মাথাচাড়া দিতে পারে কূটনৈতিক চাপান-উতোরও।
বিতর্ক কোথায়
•প্রথমে অর্থনীতির ঝিমুনি ও তার পরে করোনার কোপে ভারতে বেসামাল শিল্প। পড়ছে শেয়ার বাজার। আশঙ্কা ছিল, এই সুযোগে বিদেশি, বিশেষত চিনের সংস্থাগুলি দেশীয় সংস্থায় লগ্নি বাড়াতে পারে।
•সম্প্রতি চিনের শীর্ষ ব্যাঙ্ক গৃহঋণ সংস্থা এইচডিএফসি-র ১.৭৫ কোটি শেয়ার (১.০১%) কিনতেই তুঙ্গে ওঠে ভয়।
•বিভিন্ন সংস্থা অধিগ্রহণের লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়ে অবিলম্বে কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে বলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী।
•স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজনও বলেন, পিপল্স ব্যাঙ্ক অব চায়নার এই পদক্ষেপ বিপদ-ঘন্টা বাজিয়েছে। বিদেশি লগ্নিতে বিধিনিষেধ জারি করুক কেন্দ্র
•এর পরেই প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নীতি বদলায় কেন্দ্র।
যদিও অন্য অংশের মতে, করোনা নিয়ে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে বেজিং। মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিনকে দায়ী করেছে ঠিক তথ্য না-দেওয়ার জন্য। করোনার ধাক্কায় ২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৬.৮% সঙ্কুচিত হয়েছে সে দেশের অর্থনীতি। চাহিদা নেই। উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। বারবার সুদ ছাঁটাই করে বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে চিনের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে চট করে ভারতকে পাল্টা আঘাত হয়তো করতে পারবে না চিন। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মানছে, ভারতে বিভিন্ন স্টার্ট-আপ সংস্থায় লগ্নি রয়েছে বহু চিনা সংস্থার। যার মধ্যে পেটিএম, জ়োমাটো, বিগবাস্কেটের মতো সংস্থা বাজার থেকে টাকা তোলার কথা ভাবছিল। নীতি বদলের সিদ্ধান্তে সেই পরিকল্পনা ধাক্কা খেতে পারে। নতুন করে ব্যবসার বাড়ানোর পরিকল্পনা ছকতে অনেক সংস্থাই এখন অপেক্ষা করে আছে বিদেশি লগ্নির নীতি বদলের বিজ্ঞপ্তির জারির জন্য।
উঠল সেনসেক্স
রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং ইনফোসিসের শেয়ার দর বাড়ায় সোমবার পতনের মুখ দেখতে হল না সেনসেক্সকে। যদিও তা মাত্র ৫৯.২৮ উঠেছে। মার্চে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ১৫% বেড়ে ৭২৮০.২২ কোটি টাকা হয়েছে। ফলে তাদের শেয়ার দর উঠেছে প্রায় ৪%। আবার এ দিন ফল প্রকাশের আগে ইনফোসিস ৩.৭৫% বেড়েছে। তাদের নিট মুনাফা ৬.৩% বেড়ে হয়েছে ৪৩৩৫ কোটি। টাকার দাম অবশ্য পড়েছে। এক ডলার ১৪ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৬.৫৩ টাকা।
আরও পড়ুন: ভারতের নয়া এফডিআই নীতির প্রতিবাদ জানাল চিন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy