প্রতীকী চিত্র।
ন্যূনতম মজুরি (মিনিমাম ওয়েজ) এবং সামগ্রিক ভাবে জাতীয় স্তরে সব শিল্প মিলিয়ে ন্যূনতম মজুরি (ন্যাশনাল ফ্লোর মিনিমাম ওয়েজ) ঠিক করার ক্ষেত্রে আর দেরি করতে চায় না কেন্দ্র। মাসের শুরুতেই এই বেতন স্থির করার পদ্ধতি খতিয় দেখতে কমিটি তৈরি করেছে শ্রম মন্ত্রক। তার পরে জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, বিষয়টি পিছিয়ে দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য। শনিবার সেই বিষয়টিই স্পষ্ট করে মন্ত্রক জানিয়েছে, এ রকম কোনও উদ্দেশ্য কেন্দ্রের নেই। যদিও এই কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধিদের না-রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ইউনিয়নগুলি। এতে কতটা বাস্তবোচিত ভাবে ন্যূনতম বেতন স্থির করা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে বলে দাবি তাদের।
বর্তমানে বিভিন্ন শিল্প-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা ন্যূনতম মজুরি রয়েছে। আবার একই শিল্পে বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন অঙ্কের মজুরিও দেখা যায়। তার অন্যতম কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় কেন্দ্র ন্যূনতম বেতন স্থির করলেও, রাজ্যগুলিতে সেই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারের হাতে। এ বার সারা দেশে নতুন শ্রম বিধি চালুর যে লক্ষ্য কেন্দ্র নিয়েছে, তার আওতায় বিভিন্ন শিল্পের ন্যূনতম মজুরির পাশাপাশি ন্যাশনাল ফ্লোর মিনিমাম ওয়েজ স্থির করার কথা বলা হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই ন্যূনতম বেতন সেই জাতীয় স্তরের চেয়ে কম হতে পারবে না।
এই দুই বেতন নিয়ে পরামর্শ দিতে জুনের গোড়ায় তিন বছরের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছে কেন্দ্র। যার নেতৃত্বে রয়েছেন ইনস্টিটিউট অব ইকনমিক গ্রোথ-এর অধ্যাপক অজিত মিশ্র। বাদবাকি সদস্যের মধ্যে রয়েছেন আইআইএম ক্যালকাটার অধ্যাপক তনিকা চক্রবর্তী, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক রিসার্চের সিনিয়র ফেলো অনুশ্রী সিন্হা, ভি ভি গিরি ন্যাশনাল লেবর ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল এইচ শ্রীনিবাস, শ্রম মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব বিভা ভল্লা। এ ছাড়াও আছেন মন্ত্রকের শ্রম ও কাজ সংক্রান্ত সিনিয়র অ্যাডভাইজ়র ডিপিএস নেগি। ইতিমধ্যেই ১৪ জুন তাদের বৈঠক হয়েছে। দ্বিতীয় বৈঠক ২৯ জুন হওয়ার কথা। এর পরেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল, শীঘ্রই যদি এই নিয়ম চালু করা কেন্দ্রের লক্ষ্য হয়, তা হলে কী করে তিন বছর মেয়াদের কমিটি তৈরি করা হল। শ্রম মন্ত্রকের দাবি, ন্যূনতম বেতনের নিয়ম চালুর পরেও যাতে কমিটি পরামর্শ দিতে পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
তবে বিষয়টি নিয়ে ততটা সন্তুষ্ট নয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। ইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘আগে জাতীয় স্তরে একটি ন্যূনতম বেতন পরামর্শদাতা কমিটি ছিল। যাতে সরকার ছাড়াও মালিক এবং শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা ছিলেন। কিন্তু এ বার যে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে, তাতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা হয়নি। কেন্দ্র তার পছন্দ মতো ব্যক্তিদের কমিটিতে রেখেছে। এতে বেতন ঠিক করার সময় শ্রমিকদের প্রয়োজনের বিষয়টি কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’’ আর সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘এই কমিটি গড়া অর্থহীন। কারণ, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ইন্ডিয়ান লেবার কনফারেন্সে গৃহীত ফর্মুলাই নতুন শ্রমবিধিতে গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে তার পরে ফের একই বিষয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির এই সিদ্ধান্ত বিষয়টিকে বিলম্বিত করার লক্ষ্য ছাড়া আর কিছু নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy