প্রতীকী ছবি।
রাজকোষে টাকা নেই। যত টাকা আয় ধরে বাজেটের অঙ্ক কষা হয়েছিল, বাস্তবে তা হবে অনেকটাই কম। রাজ্যের হাতে সিংহভাগ অর্থ তুলে দিতে গিয়ে টানাটানি অবস্থা কেন্দ্রের ভাঁড়ারের— এই সমস্ত কাঁদুনি গেয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অর্থ মন্ত্রক রাজ্যগুলির প্রাপ্য টাকায় ভাগ বসানোর চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিরোধী দল শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা মনে করছেন, অর্থ মন্ত্রক পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের উপর চাপ তৈরি করছে, যাতে কেন্দ্রীয় কর থেকে রাজ্যের প্রাপ্য ভাগ কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই খাতে যা আয় হয়, তার ৪২% রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।
এন কে সিংহের নেতৃত্বে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের রিপোর্ট তৈরির কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। খুব শীঘ্রই কমিশন নিজের সুপারিশ জানাবে। তার পরে আগামী বছরের ১ এপ্রিল থেকে এই সুপারিশ মেনে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি হবে কর হিসেবে সরকারের হাতে আসা অর্থ। সূত্রের খবর, কমিশনের কাছে প্রায় সব রাজ্যই জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কর থেকে রাজ্যের ভাগ ৪২% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করা হোক। যার মধ্যে আছে পশ্চিমবঙ্গও। উল্টো দিকে, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের দাবি, রাজ্যের ভাগ ৪২% থেকে যেন কমিয়ে দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অবশ্য দাবি, তিনি নিজে অন্তত অর্থ কমিশনের কাছে এমন কোনও আর্জি জানাননি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের সময় থেকেই কমিশনের কাছে আমলা স্তরে এই অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এই দড়ি টানাটানির মধ্যে অর্থ কমিশনের কর্তাদের বক্তব্য, কমিশন স্বাধীন ভাবে বিষয়টির বিচার-বিশ্লেষণ করে নিজের সুপারিশ জানাবে। তারা যেমন অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছে, তেমন রাজ্যগুলির বক্তব্যও শুনেছে। তবে ওই কর্তারা মানছেন, প্রায় সব রাজ্যই কেন্দ্রীয় করে তাদের ভাগ বাড়ানোর দাবি তুলেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও ব্যতিক্রম নয়।
বাম শাসিত কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ়্যাক বলেন, ‘‘অর্থ মন্ত্রক কমিশনকে জানিয়েছে, এ বছর কর বাবদ আয় বাজেট অনুমানের থেকে ২ লক্ষ কোটি টাকা কম হবে। একে যেন কেন্দ্রীয় করে রাজ্যের ভাগ ৪২% থেকে কমানোর যুক্তি হিসেবে খাড়া করা না হয়।’’ আইজ়্যাকের যুক্তি, অর্থনীতিতে ঝিমুনির ফলে যদি কেন্দ্রের আয় কমে, একই কারণে রাজ্যের রোজগারও কমবে।
বস্তুত, বাজেটের অনুমান ছিল, চলতি অর্থবর্ষে সরকারের রাজস্ব আয় পৌঁছবে ২৪.৬ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব সচিব অজয় ভূষণ পাণ্ডে সরকারি ভাবে দাবি করেছেন, এর নড়চড় হবে না। কিন্তু রাজস্ব দফতরের কর্তারা মনে করছেন, বছর শেষে আয় দাঁড়াতে পারে লক্ষ্যের
বেশ খানিকটা নীচে।
ওই দফতর সূত্রের বক্তব্য, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গিয়ে হালে মোদী সরকার যে কর্পোরেট কর কমিয়েছে, তাতেই তো অন্তত ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে। এর পরে যদি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আরও পদক্ষেপ করা হয়, তা হলে ক্ষতির বহর আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy