Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Load Shedding

লোডশেডিং এড়াতে তৎপর কেন্দ্র, নজর রাজ্যের দিকে

পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং সিইএসসি-র অবশ্য দাবি, তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। সিইএসসির এমডি (উৎপাদন) রবি চৌধুরি জানান, শীতেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়ে গিয়েছে।

Load Shedding

গরম বাড়ার আগেই সতর্ক কেন্দ্র। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৫
Share: Save:

গত বছর গ্রীষ্মে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। উৎপাদনে ঘাটতির জেরে বিদ্যুৎ সঙ্কটের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার গরম বাড়ার আগেই সতর্ক কেন্দ্র। শুক্রবার ফের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ। গ্যাস বা আমদানি করা কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তৈরি বিদ্যুৎ বাড়তি দামে বিক্রির জন্য আলাদা পোর্টাল চালু করেছেন। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীন গ্রিড কন্ট্রোলার অব ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শাখা আলাদা করে আলোচনা চালিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের সমস্ত রাজ্যের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে (বিদ্যুৎ উৎপাদন, বণ্টন, সংবহন ইত্যাদি)। সরকারি সূত্রের খবর, আগামী এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ চাহিদা গত বারের চেয়ে ৬%-৭% বেড়ে প্রায় ১০,৫০০ মেগাওয়াটে পৌঁছতে পারে। উৎপাদনের যা পূর্বাভাস, তাতে অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি তৈরি না হলে চাহিদা মেটানো সম্ভব বলেই আশা।

পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং সিইএসসি-র অবশ্য দাবি, তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। সিইএসসির এমডি (উৎপাদন) রবি চৌধুরি জানান, শীতেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়ে গিয়েছে। কয়লা রয়েছে যথেষ্ট। কোল ইন্ডিয়ার প্রস্তাব মতো অতিরিক্ত ৪০% দাম দিয়ে মাসে বাড়তি ২০% কয়লা কেনার পথও খোলা থাকবে। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এমডি পি বি সেলিম জানান, এখন তাঁদের ৪৬৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৮০ শতাংশই আসে সংস্থার খনি থেকে। ২০ লক্ষ টন মজুতও আছে।

বিদ্যুতের চাহিদা-জোগানে ভারসাম্য সংক্রান্ত বিষয়টির সমন্বয় রাখা গ্রিড কন্ট্রোলারের মূল কাজ। তাদের শাখা ‘ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার’ বিভিন্ন আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে আগাম বৈঠক করছে। এ দিন পূর্বাঞ্চলীয় কেন্দ্রের (ইআরএলডিসি) আওতায় পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও সিকিমের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, এপ্রিলে পূর্বাঞ্চলের চাহিদা গত বছর ২৭,০০০ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ৩০,০০০ মেগাওয়াট হওয়ার সম্ভাবনা। এ রাজ্যের ক্ষেত্রে তা ৯৮০০ থেকে বেড়ে ১০,৫০০ মেগাওয়াট হতে পারে। যা আশেপাশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে কম। পশ্চিমবঙ্গ তৈরি থাকার দাবি করলেও, দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো এ রাজ্যেও চাহিদা-জোগান প্রায় কাছাকাছি। ফলে সব রাজ্যকেই কয়লার জোগানে নিশ্চয়তা, তাপবিদ্যুতের পাশাপাশি পুরোমাত্রায় জলবিদ্যুৎ ব্যবহারে জোর দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিতে বলা হয় বৈঠকে। শুক্রবার বিকালে ফের বৈঠক করে দেশ যাতে লোডশেডিংয়ের কবলে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে তৈরি থাকার বার্তা দেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীও।

বিদ্যুতের জোগান বাড়াতে গ্যাস বা আমদানির কয়লা নির্ভর কিংবা ব্যাটারিতে মজুত বিকল্প বিদ্যুৎ (যা উৎপাদনের খরচ বেশি) অতিরিক্ত দামে (ইউনিট প্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা) বিক্রির জন্য পৃথক পোর্টাল চালু করেছেন সিংহ। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ। সরকারের অবশ্য দাবি, ওই ঊর্ধ্বসীমা শুধু প্রযুক্তিগত শর্ত। বরং বাজারই অনেক কম দাম স্থির করবে। কেউ যাতে সেই সুযোগে চড়া হারে বিদ্যুৎ বেচতে না পারে তা নজরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রীও। প্রসঙ্গত, গত বছর বিদ্যুৎ এক্সচেঞ্জে দাম ইউনিট প্রতি ২০ টাকায় ওঠায় কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তা ১২ টাকায় বেঁধে দেয়।

অন্য বিষয়গুলি:

LOAD SHEDDING
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE