Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

জিএসটি আদায় ছাড়াল ১ লক্ষ কোটি

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে কেন্দ্রীয় জিএসটি (সিজিএসটি) আদায় হয়েছে ১৯,৫৯২ কোটি। রাজ্য জিএসটি (এসজিএসটি) ২৭,১৪৪ কোটি এবং সম্মিলিত জিএসটি (আইজিএসটি) ৪৯,০২৮ কোটি টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

অর্থনীতি নিয়ে একের পর এক দুঃসংবাদের মধ্যে মোদী সরকারকে কিছুটা স্বস্তি দিল জিএসটি আদায়ের পরিসংখ্যান। রবিবার কেন্দ্র জানিয়েছে, নভেম্বরে ওই পরোক্ষ কর আদায় দাঁড়িয়েছে ১,০৩,৪৯২ কোটি টাকায়। যা গত বছরের নভেম্বরের থেকে ৬% বেড়েছে তো বটেই, অক্টোবরের ৯৫,৩৮০ কোটির থেকেও বেশ খানিকটা বেশি। জিএসটি চালুর পর থেকে এ নিয়ে মোট আট বার আদায় ১ লক্ষ কোটি ছাড়াল। তবে অনেকের প্রশ্ন, আগামী দিনে এই ধারা যদি বজায় না-থাকে, তা হলে সামগ্রিক ভাবে কেন্দ্রের পরোক্ষ কর থেকে আয়ের লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব হবে কি? এমনকি অর্থবর্ষের বাকি চার মাসে যদি ১ লক্ষ কোটি আদায় হয়, তা-ও লক্ষ্য কতটা ছোঁয়া যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে কেন্দ্রীয় জিএসটি (সিজিএসটি) আদায় হয়েছে ১৯,৫৯২ কোটি। রাজ্য জিএসটি (এসজিএসটি) ২৭,১৪৪ কোটি এবং সম্মিলিত জিএসটি (আইজিএসটি) ৪৯,০২৮ কোটি টাকা। আর সেস বাবদ আয় দাঁড়িয়েছে ৭৭২৭ কোটি। যা কেন্দ্রের অন্যতম চিন্তার কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, সেস বাবদ আয় থেকেই রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেয় কেন্দ্র। অথচ টানা কয়েক মাস আদায় কম হওয়ায়, সেই টাকা জোগাড়ে সমস্যায় পড়ছে তারা। যে কারণে বাকি পড়েছে রাজ্যগুলির পাওনা। যা নিয়ে নিয়মিত ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি বিরোধী শাসিত রাজ্য। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে পঞ্জাব। মাসে যেখানে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিতেই প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকা লাগে, সেখানে নভেম্বরের হিসেবেও কেন্দ্রের কপালে ভাঁজ বাড়বে বলে তাদের মত।

পাশাপাশি, জিএসটির আওতায় ঘন ঘন করের হার বদলের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। যা ওই কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়ায় পথে অন্যতম বাধা বলে মত তাঁদের। সম্প্রতি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট অব ইন্ডিয়া (আইসিএআই) আয়োজিত এক সভায় তাঁদেরই এক জন বলেন, প্রায় আড়াই বছর আগে পণ্য-পরিষেবা কর চালু হওয়ার সময়ে ২২৯টি পণ্যে ২৮% কর ছিল। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯টিতে। বেঙ্গল চেম্বারের পরোক্ষ কর কমিটির চেয়ারম্যান তিমিরবরণ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কখনও শিল্প আবার কখনও রাজনৈতিক মহলের চাপের মুখে পড়ে ঘন ঘন ওই করের হার কমানো হলে লক্ষ্যমাত্রা কবে পূরণ হবে, তা বলা কঠিন।’’

এর সঙ্গেই আইসিএআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি মানস ঠাকুরের অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে অন্যের আগে দেওয়া কর ফেরতের টাকা (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) আত্মস্যাৎ করছেন। জিএসটির তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো এখনও পুরো চালু না-হাওয়াতেই এই প্রতারণা সম্ভব হচ্ছে। যা আটকাতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে তাঁর মত।

তিমিরবাবুর দাবি, জিএসটির আগের জমানার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, পেট্রল, ডিজেল, বিমান জ্বালানি ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো পণ্য থেকে ৬২% কর আদায় হয়। আর জিএসটির আওতায় থাকা পণ্যগুলি থেকে ২৮%। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিএসটি চালুর আগে কর থেকে যে আয় হত, সেই অঙ্ক ছাড়াতে হলে জিএসটির হার কমানো বন্ধের পাশাপাশি ওই সব পেট্রোপণ্যকেও এর আওতায় আনতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

GST Business Central Government Finance Ministry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy