প্রতীকী ছবি।
প্রায় সমস্ত ইউনিয়নের আপত্তির মধ্যেই কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা বিধিতে সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। গোড়া থেকেই সরকারের দাবি, পুরনো আইন বদলে এই বিধি তৈরির মূল লক্ষ্য, সব কর্মীকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা। বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্রে। অ্যাপ-ক্যাব চালক থেকে শুরু করে অ্যাপ-নির্ভর সংস্থার পণ্য পৌঁছনোর কর্মী (ডেলিভারি পার্সন)— সকলকে পুরোদস্তুর কর্মীর স্বীকৃতি দিয়ে পিএফ, ইএসআই, বিমা-সহ প্রাপ্য নানা সুবিধা দেওয়া এতে সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ‘সম্পূর্ণ বেতন ও সুবিধা’ পাওয়ার পথ মসৃণ করার কথাও।
কিন্তু এই বিধির খসড়ায় অখুশি প্রায় সবক’টি কর্মী ইউনিয়ন। সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বিএমএসের সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায় বলছেন, ‘‘প্রথমত, কেন্দ্র সব কর্মীকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার দাবি করলেও, খসড়ায় তার প্রতিফলন নেই। দ্বিতীয়ত, যে ভাবে ইপিএফ, ইএসআই-কে কর্পোরেট ধাঁচে ঢেলে সাজানোর কথা বলা হচ্ছে, তারও বিরোধী আমরা।’’
কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) ও তুলনায় কম বেতনের শ্রমিকদের জন্য নিখরচায় চিকিৎসার বন্দোবস্তের (ইএসআই) দিকে এই বিধি যে ভাবে হাত বাড়িয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরও। তাঁর কথায়, ‘‘এই দুই প্রকল্পের তহবিল মূলত কর্মী ও নিয়োগকারীদের টাকায় তৈরি। তা মসৃণ ভাবে চলেছে। তা হলে কেন্দ্র তাকে এই বিধিতে ঢোকাতে চাইছে কেন?’’ তাঁর ক্ষোভ, অন্তত ৮৫% কর্মী সামাজিক সুরক্ষা জালের বাইরে। ইউনিয়নের দাবি ছিল, যে সুবিধা আছে, তাতে হাত না-দিয়ে বাকিদের জন্য পিএফ, ইএসআই, বিমার মতো সুরক্ষার ব্যবস্থা হোক। কিন্তু কেন্দ্র তাতে কান দেয়নি। তা ছাড়া, বিড়ি শ্রমিক, নির্মাণ কর্মী থেকে শুরু করে সকলের চাহিদা মাফিক সুরক্ষা-জাল তৈরির বদলে ‘সকলের জন্য এক মাপের জুতো’ তৈরির চিন্তা ভুল বলে দাবি তাঁর।
আপত্তি কোথায়
• কেন্দ্র সব কর্মীকে এর মাধ্যমে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার দাবি করলেও, খসড়ায় প্রতিফলন নেই।
• আলাদা শিল্পে শ্রমিকদের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা অনুযায়ী সুরক্ষার ব্যবস্থা না-করে, সকলের জন্য এক বন্দোবস্ত তৈরির চিন্তাই ভুল।
• সামাজিক সুরক্ষা জালের বাইরে থাকা কর্মীদের জন্য পিএফ-ইএসআই-বিমার সুরক্ষা আনার দাবিতে কান দিচ্ছে না কেন্দ্র।
• এই বিধি আসলে ইপিএফ, ইএসআইকেও বেসরকারি পরিচালন ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়ার সলতে পাকানো নয়তো!
সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের আশঙ্কা, ইপিএফ, ইএসআই-কেও বেসরকারি পরিচালনার দিকে ঠেলে দেওয়ার সলতে পাকানো হচ্ছে এই বিলে। এখন মূল বেতনের ১২% কাটা হয় ইপিএফ খাতে। তার সমান টাকা দেয় সংস্থা। তাঁর দাবি, সংসদকে এড়িয়ে শুধু প্রশাসনিক নির্দেশিকার মাধ্যমে তা বদলানোর রাস্তা খোলা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষার জন্য টাকা কোথা থেকে আসবে, তা-ও স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy