Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Nirmala Sitharaman

ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পরের জমানার কাঁধে

আজ অর্থমন্ত্রী পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টও সংসদে পেশ করেছেন। কমিশন রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় করের ৪১% রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি করার সুপারিশ করেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৪২
Share: Save:

এত দিন লক্ষ্য ছিল, ২০২২-২৩ সালের মধ্যে রাজকোষ ঘাটতিকে ৩.১ শতাংশে নামিয়ে আনা। কোভিড-লকডাউনের ধাক্কায় তা ৯.৫ শতাংশে পৌঁছনোর পরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নতুন লক্ষ্য, ওই ঘাটতি ২০২৫-২৬ সালে ৪.৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। অর্থাৎ, অন্তত এই সরকারের আমলে তা করতে হচ্ছে না। লক্ষ্য পূরণের দায় পরের জমানার কাঁধে।

কেন্দ্র ঘাটতি ৪.৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে ২০২৫-২৬ পর্যন্ত সময় নিলেও, নির্মলার আশা, রাজ্যগুলি তাদের ঘাটতি ২০২৩-২৪-এর মধ্যে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনবে। প্রশ্ন উঠছে, একই কাজে আলাদা সময়সীমা কেন?

আজ অর্থমন্ত্রী পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টও সংসদে পেশ করেছেন। কমিশন রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় করের ৪১% রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি করার সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে, রাজ্যের জন্য বিপুল পরিমাণ অনুদান, পুরসভা-পঞ্চায়েতগুলির আয়ের নিশ্চয়তার জন্যও অনুদানের সুপারিশ করেছে। কারণ, কোভিডে রাজ্যগুলিরও আয় মার খেয়েছে।

নির্মলা কমিশনের সুপারিশ গ্রহণের কথা জানালেও, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বাজেটকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী বলছেন। যুক্তি, কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সেস বসিয়ে টাকা তুলছে। যা রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করতে হবে না। উৎপাদন শুল্ক থেকে আয়ের ভাগ রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি করতে হত।

রাজ্যগুলির দাবি ও কমিশনের সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত প্রকল্পের সংখ্যাও কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। রাজ্যগুলির দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সংখ্যা কমিয়ে সরাসরি আরও বেশি অর্থ রাজ্যগুলির হাতে দেওয়া হোক। এই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই ২০২৫-২৬ সালে ঘাটতি ৪.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই তাঁর আশা, রাজ্যগুলি ২০২৩-২৪ সালে ঘাটতি ৩ শতাংশে কমিয়ে আনবে। নতুন অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিকে নিজেদের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪% পর্যন্ত ঘাটতি রাখার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। শর্ত বিশেষে আরও ০.৫% অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।

অনেক অর্থনীতিবিদই সুপারিশ করেছিলেন, মন্দার মুখে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ধার করুন, খরচ করুন। ঘাটতি নিয়ে ভাববেন না। সেই মন্ত্র নিয়েই অর্থমন্ত্রী ঘাটতির রাশ আলগা করেছেন। অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তীর মতে, ‘‘ঘাটতি ভাল, এটা মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত।’’

আগামী অর্থবর্ষে লক্ষ্য ঘাটতি ৬.৮ শতাংশে নামানো। এত দিন বাজেট দায়বদ্ধতা (এফআরবিএম) আইনে ঘাটতি ৩ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হত। তা সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘এতে লগ্নিকারী, ঋণদাতারা উদ্বিগ্ন হবেন। উচিত ছিল, ধাপে ধাপে ঘাটতি ৩ শতাংশে নামানোর লক্ষ্যমাত্রা জানানো।’’ বাজেটে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক বছরের বাকি দু’মাসে আরও ৮০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে। আগামী বছরে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা ধার করতে হবে। সস্তায় ঋণের বন্দোবস্ত করতে আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই ভারতের বন্ড আন্তর্জাতিক বন্ড সূচকে জায়গা করে নেবে বলেও অর্থ মন্ত্রকের দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmala Sitharaman Budget 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy