—ফাইল চিত্র।
গত বুধবার পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণে সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সেই তালিকায় নাম ছিল না দেশের প্রথম ওষুধ সংস্থা এ রাজ্যের বেঙ্গল কেমিক্যালসের (বিসিপিএল)। কিন্তু নীতি আয়োগ বিলগ্নিকরণের জন্য যে ২৮টি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে, সেই তালিকায় বিসিপিএলের নাম রয়েছে। সে কথা কেন্দ্র জানিয়েও দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে সম্প্রতি সংস্থাটির স্থায়ী কর্মী এবং আধিকারিকদের বেতন সংশোধনে সায় দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই নিয়ে সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মত বিরোধ তৈরি হয়েছে কর্মী ইউনিয়নের। কবে থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে, সংশয় তা নিয়েই।
১৯০১ সালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এই ওষুধ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ লোকসানের জেরে কেন্দ্র ১৯৭৭ সালে এটিকে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নিলেও তা রুগ্ণ হয়ে ১৯৯২ সালে বিআইএফআরে চলে যায়। একগুচ্ছ পরিকল্পনা কার্যকর করার পরেই গত তিন বছর ধরে টানা মুনাফা করছে সংস্থাটি। অথচ সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৯৯৭ সালের বেতনক্রমই চালু রয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, ধারাবাহিক লাভের পরে ২০০৭ সালের বেতনক্রম চালুর জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন চেয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। গত মাসে তাতে সায় দিয়ে কেন্দ্র জানায়, ২০১৬-১৭ সাল থেকে তা কার্যকর হবে।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে কর্মী ইউনিয়ন চাইছে ২০০৭ সাল থেকে বর্ধিত বেতন কার্যকর হোক। ওই সময়ের পরে অবসর নেওয়া বহু কর্মী সংস্থার সদর দফতরে একই দাবি নিয়ে আসছেন। সামগ্রিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইউনিয়নের দু’দফা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হলেও সমস্যার জট খোলেনি। সংস্থাটির কার্যনির্বাহী ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি এম চন্দ্রাইয়া বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে চলার জন্য কর্মী ও ইউনিয়নকে আবেদন জানিয়েছি।’’
কী ঘটেছে বেঙ্গল কেমিক্যালসে
• প্রতিষ্ঠা ১৯০১ সালে।
• ১৯৭৭ সালে জাতীয়করণ।
• ১৯৯২ সালে রুগ্ণ হয়ে বিআইএফআরে।
• ঘুরে দাঁড়িয়ে তিন বছর টানা মুনাফা করছে সংস্থাটি।
• কিন্তু চালু রয়েছে ১৯৯৭ সালের বেতনক্রম।
• কেন্দ্র চায়, ২০১৬-১৭ সাল থেকে নতুন বেতনক্রম।
• কর্মীদের দাবি, তা সংশোধন হোক ২০০৭ থেকেই।
সংস্থার সিটু সমর্থিত কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আলোচনা চলছে। আমরা ২০০৭ সাল থেকেই সংশোধিত বেতনক্রম চালু করার দাবি জানিয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, কর্মীদের বেতনের বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই অফিসারদের বেতন সংশোধন কার্যকর হয়েছে। যা শতাব্দী প্রাচীন সংস্থাটির ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
সংস্থার একটি সূত্রের আবার দাবি, কর্মীদের বেতনক্রম কেন্দ্রীয় হারে পরিবর্তনের পাশাপাশি, অন্য খাতে তাঁদের বেতন বৃদ্ধির কথাও বিবেচনা করছেন। এ ছাড়া আগে অবসর ও স্বেচ্ছাবসর নেওয়া ৩০০-রও বেশি কর্মীর বকেয়া পাওনা ইতিমধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুনাফায় ফেরার পরেও কেন ফের সংস্থাটির বিলগ্নিকরণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল। চন্দ্রাইয়া অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। কোনও মন্তব্য করব না।’’ এই প্রসঙ্গে মৃণালবাবু জানান, সংস্থার কৌশলগত বিলগ্নিকরণ ও উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করা যাবে না বলে রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করার কথা বললেও, এখনও তাঁদের বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এক তরফা ভাবে মামলা যাতে না হয়, সে দিকে আমরা
নজর রাখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy