সঞ্জীব সান্যাল ফাইল চিত্র
শুধু ব্যাঙ্ক ঋণের উপরে নির্ভর করে না-থেকে শিল্প-বাণিজ্য সংস্থাগুলিকে বাজার থেকেও পুঁজি সংগ্রহে উৎসাহ দিচ্ছে কেন্দ্র। এমনকি, স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলিও যাতে শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি তুলতে পারে, তার জন্য মসৃণ করা হচ্ছে রাস্তা। কিন্তু বুধবার কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল আর্থিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, একা শেয়ার বাজার আর্থিক বৃদ্ধির গতিকে ধরে রাখতে পারবে না। এর পাশাপাশি সংস্থাগুলিকে পেতে হবে ব্যাঙ্ক ঋণের সাহায্যও। ফলে পোক্ত হতে হবে ঋণের বাজার।
গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন নতুন সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে চলেছে ভারতের শেয়ার বাজার। শুধু অগস্টেই সেনসেক্স উঠেছে ৫০০০ পয়েন্টের বেশি। একটা সময়ে বাজার বিশেষজ্ঞেরা মনে করছিলেন, চলতি অর্থবর্ষে ওই সূচক ৫৫ হাজারের আশেপাশে থাকতে পারে। অথচ ৫৮ হাজার পার করে ফেলা ওই সূচকের চোখ এখন ৬০ হাজারের দিকে। বাজারে প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে ভাল অঙ্কের পুঁজি সংগ্রহ করেছে জ়োম্যাটো-সহ বিভিন্ন সংস্থা। যেগুলি একটা সময়ে স্টার্ট-আপ হিসেবেই ব্যবসা শুরু করেছিল। এই প্রবণতাকে সঞ্জীববাবু অস্বীকার করেননি। তবে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অতীতে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ভিতকে পোক্ত করার পিছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু নিয়েছিল ঋণের বাজার। তিনি জানান, ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা ইতিমধ্যেই অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে। এ বার তাদের উচিত ঋণ দেওয়া আরও বাড়িয়ে অর্থনীতিকে সাহায্য করা। দেশের আরও বড় আয়তনের ঋণদাতার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের পক্ষে ঠিক যে যুক্তি দিচ্ছে কেন্দ্র।
এ দিন ব্যাঙ্ক নয় এমন ঋণদাতাদের সংগঠন এফআইডিসি-র এক কর্মসূচিতে সঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘আপনারা যদি অর্থনীতির ইতিহাসের দিকে চোখ রাখেন, দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক বৃদ্ধি শুধু শেয়ার বাজারের উপরে নির্ভর করে স্থায়ী হয়নি। তা হয়েছে ঋণ নির্ভর পুঁজির উপরে নির্ভর করেই। যার বড় অংশই আসে ব্যাঙ্ক থেকে।’’ এই প্রসঙ্গে চিনের উদাহরণ তুলে ধরেছেন উপদেষ্টা। জানিয়েছেন, তাদের দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির অন্যতম ইঞ্জিন ব্যাঙ্কের পুঁজি।
বেশ কয়েকটি ঋণনীতিতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ অপরিবর্তিত রাখলেও একটা সময় পর্যন্ত তা অনেকটাই কমিয়েছিল তারা। অতীতের নিরিখে এখনও ব্যাঙ্ক ঋণের সুদের হার যথেষ্ট নিচু। কিন্তু ঋণ বৃদ্ধির হার অনেক দিন ধরেই রয়ে গিয়েছে ৬ শতাংশের আশেপাশে। অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ড অনেকটা চালু হলেও ঋণ ঋণ কেন যথেষ্ট বাড়ছে না, এই প্রশ্ন উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে। ঋণ দেওয়া যাতে বাড়ানো যায়, তার জন্য একাধিক বার ব্যাঙ্কগুলির শীর্ষ-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এর জন্য ফের ‘ঋণ মেলা’র আয়োজন করতে চলেছে কেন্দ্র। তবে শেষ পর্যন্ত ঋণের বাজারে ফের প্রাণ ফিরবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন সঞ্জীববাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy