— প্রতীকী চিত্র।
অতিমারি এবং তার পর থেকে দেশের পারিবারিক সঞ্চয় কমছে বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন পরিসংখ্যান। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মোকাবিলা করা, জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় জনসাধারণের একটা বড় অংশের হাতে টাকা না থাকাকেই এ জন্য দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদ, উপদেষ্টাদের একাংশ। যে কারণে বাজেটে তাঁদের হাতে বাড়তি অর্থ জোগানোর দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। এই অবস্থায় এ বার স্টেট ব্যাঙ্কের এক সমীক্ষা জানাল, পারিবারিক সঞ্চয় কমার থেকেও ভারতে দ্রুতগতিতে মাথা তুলছে ঋণের বোঝা। গত ১২ বছরে দেশে আর্থিক ক্ষেত্রে, মূলত লগ্নির জগতে যে বড় পরিবর্তন এসেছে সেটাও স্পষ্ট তাদের রিপোর্টে। যদিও এই পরিবর্তন অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
স্টেট ব্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে দেশে প্রতি পরিবারের আর্থিক সঞ্চয় (নগদ ও স্থায়ী আমানত) ছিল জিডিপি-র ৭.৪%। সেটাই ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কমে দাঁড়িয়েছে ৫.১ শতাংশে। অর্থাৎ, ১২ বছরে সঞ্চয় কমেছে ২.৩ শতাংশ বিন্দু। তবে এই সময়ে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিতে। এই ক্ষেত্রে সঞ্চয়ের হার ০.২% থেকে বেড়ে হয়েছে ১%। আর মোট আর্থিক সঞ্চয়ের হার ০.৯ শতাংশ বিন্দু বেড়ে হয়েছে জিডিপির ১১.৬%। অন্য দিকে, এই ক’বছরে ব্যাঙ্ক ঋণের বোঝা ৩% থেকে এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৬.৪%। অর্থাৎ প্রতিটি পরিবারের ক্ষেত্রে যে ঋণ নেওয়াটা কার্যত দস্তুর হয়ে উঠেছে তা স্পষ্ট বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
তার উপরে এই সময়ে স্থাবর সম্পত্তির মাধ্যমে সঞ্চয় ১৬% থেকে কমে হয়েছে ১৩.৫%। আর্থিক বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন দে বলেন, “ঋণ বেড়েছে। জমি-বাড়িতে লগ্নি কমেছে। অর্থাৎ, এই সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট বর্তমানে আমজনতা অনেক বেশি করে ধার নিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু সেই ঋণ সম্পত্তি তৈরির জন্য নয়।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বরং তাঁরা ব্যক্তিগত ঋণ নিচ্ছেন বেশি। তার একাংশ যে ক্রেডিট কার্ড, সেই কথাও তুলে ধরছে তারা।
মার্চেন্টস চেম্বারের অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র বলেন, “প্রথমত, মূল্যবৃদ্ধি যে হারে বেড়েছে গত কয়েক বছরে মানুষের রোজগার সেই হারে বাড়েনি। ফলে সংসার চালিয়ে মানুষের হাতে টাকা থাকছে না। তাই ক্রমাগত সঞ্চয় কমছে। দ্বিতীয়ত, রোজগার এতটাই কম বেড়েছে যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে ধারের বোঝা যেমন বাড়ছে, তেমনই ঋণের ফাঁদে পড়ছেন তাঁদের একাংশ। যা বাঞ্ছনীয় নয়।” তাঁর আশা, দেশের আমজনতার যে এই দুর্দাশার প্রতিকারের কিছু সন্ধান হয়তো এ বারের বাজেটে থাকতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy