Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Health Insurance

স্বাস্থ্য বিমার টাকা পেতে সমস্যা ঘিরে চাপানউতোর

দাবি নাকচ না হলেও, অনেক সময়ে চিকিৎসার টাকা মেটানোর ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি গড়িমসি করায় গ্রাহককে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় বলেও জানিয়েছে সমীক্ষা। দেশের ৩০২টি জেলার ৩৯,০০০ মানুষকে নিয়ে যা করা হয়েছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৪ ০৮:৫২
Share: Save:

যত দিন যাচ্ছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম। বিশেষত প্রবীণদের। কিন্তু ওই খাতে বছর বছর বিপুল টাকা জমা করেও, প্রয়োজনের সময়ে বিমার অর্থ হাতে না পাওয়ার অভিযোগ বহু দিনের। এ বার সেই হেনস্থার ছবি উঠে এল লোকাল সার্কলের সমীক্ষাতেও। যা জানাল, গত তিন বছরে ভারতে স্বাস্থ্য বিমার টাকা পেতে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন ৪৩% মানুষ। সিংহভাগ ক্ষেত্রে দাবি বাতিলের পিছনে বিমা সংস্থাগুলির যুক্তি, যে রোগের চিকিৎসার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে, সেটি অনেক দিন আগে থেকেই গ্রাহকের রয়েছে। যাকে বলা প্রি-এগ্‌জিস্টিং ডিজ়িজ়। সমীক্ষায় অভিযোগের পরে ওই সব সংস্থা অবশ্য এর দায় চাপিয়েছে হাসপাতাল এবং গ্রাহকদের উপরেই। তাদের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রে পলিসিহোল্ডারের ভুলের কারণেই টাকা পেতে সমস্যা হয়।

দাবি নাকচ না হলেও, অনেক সময়ে চিকিৎসার টাকা মেটানোর ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি গড়িমসি করায় গ্রাহককে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় বলেও জানিয়েছে সমীক্ষা। দেশের ৩০২টি জেলার ৩৯,০০০ মানুষকে নিয়ে যা করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, বহু ক্ষেত্রে চিকিৎসা হয়ে যাওয়ার পরে হাসপাতাল রোগীকে ছেড়ে দিতে চাইলেও, সংস্থা টাকা মেটাতে দেরি করায় তাঁকে ১০-১২ ঘণ্টা সেখানে আটকে থাকতে হয়। কোনও সময়ে আবার দেখা যায় হাসপাতাল মোট যে বিল দেয়, তার পুরোটা মেটাতে চায় না সংস্থাগুলি।

লোকাল সার্কলের সমীক্ষায় ওঠা অভিযোগ মানলেও, স্বাস্থ্য বিমা শিল্প উল্টে দাবির টাকা না পাওয়া বা আংশিক পাওয়ার দায় চাপিয়েছে গ্রাহক এবং হাসপাতালগুলির উপরেই। যেমন এ প্রসঙ্গে স্টার হেল্‌থের অন্যতম কর্তা প্রবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, স্বাস্থ্য বিমার অন্যতম শর্ত অনুযায়ী গ্রাহককে পুরনো সমস্ত রোগের ইতিহাস পলিসি কেনার সময়েই সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানিয়ে দিতে হয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই মানুষ তা করেন না। ফলে পরে যখন দেখা যায়, বিমাকারী যে রোগের চিকিৎসা করিয়েছেন সেটি পলিসি কেনার আগে থেকেই তাঁর শরীরে ছিল, তখন টাকা মেটানোর বাধ্যবাধকতা বিমা সংস্থাগুলির থাকে না।

আর চিকিৎসার টাকা মেটানো নিয়ে সবুজ সঙ্কেত দিতে বিমা সংস্থাগুলির কেন দেরি হয়, সেই প্রশ্নের উত্তরে প্রবীরবাবুর দাবি, বহু ক্ষেত্রেই হাসপাতালগুলি চিকিৎসার নথি ঠিকমতো বিমা সংস্থার কাছে পাঠায় না। তখন সংস্থা এবং হাসপাতালের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে কথাবার্তা চলে। নথি চেয়ে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়ার কারণেই রোগীর ছাড়া পেতে দেরি। তাঁর আরও দাবি, ওই সব ক্ষেত্রে অধিংকাংশ সময় পুরো টাকা না দিলেও, সিংহভাগই মিটিয়ে দেয় বিমা সংস্থা। পরে কাগজপত্র ঠিকঠাক জমা দিলে বাকি টাকা মেটানো হয়।

লোকাল সার্কলের সমীক্ষার সঙ্গে অনেকটা একমত বিমা এজেন্টরাও। তবে তাঁদের অন্যতম সর্বভারতীয় নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, “মানুষ অনেক সময়েই বুঝতে পারেন না পলিসি কেনার সময় কী কী তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক। গ্রাহককে তা বুঝিয়ে বলার দায়িত্ব এজেন্টদেরই। বহু ক্ষেত্রে তাঁরা সেই দাযিত্ব ঠিকমতো পালন না করায় সমস্যা তৈরি হয়।’’ এই অবস্থায় গ্রাহকদের দুর্ভোগ কমাতে সামগ্রিক ভাবেই স্বাস্থ্য বিমা ক্ষেত্রের জন্য আরও কঠোর নিয়ম চালুর পক্ষেও সওয়াল করেছেন সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯৩% মানুষ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy