অমিত মিত্র। ফাইল চিত্র।
বজ্র আঁটুনি ছিল না। তাই গেরো ফস্কে প্রতারণা বাড়ছে জিএসটি-তে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর বিতর্ক উস্কে এ বার এই অভিযোগেই তোপ দাগলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ক্ষোভ জানিয়ে মঙ্গলবার তিনি কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে।
দু’বছর আগে ঢাক ঢোল পিটিয়ে জিএসটি চালু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু অভিযোগ, তাড়াহুড়ো করে আনায় এখনও তাতে প্রতারণা রোখার ব্যবস্থা চালু হয়নি। ফলে তার হাত ধরে লাফিয়ে বেড়েছে কর ফাঁকি। অর্থ মন্ত্রকের হিসেব, দু’বছরে (৩০ জুন পর্যন্ত) প্রতারণার অঙ্ক ৪৫,৬৮২ কোটি টাকা। অমিতবাবুর আশঙ্কা, সব রাজ্যের হিসেব এলে তা ১ লক্ষ কোটি ছাপাবে। তাঁর অভিযোগ, হাওয়ালা লেনদেনও বাড়ছে এতে।
অমিতবাবুর দাবি, প্রশাসনিক প্রস্তুতি ছাড়াই জিএসটি আনা হয়েছে। কর ফাঁকি রোখার নিশ্ছিদ্র তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা তৈরি হয়নি। কেউ ভুয়ো বিল দেখিয়ে বাড়তি কর ছাড় আদায় করছেন কি না, তা ধরা যাচ্ছে না। চিঠিতে তিনি বলেছেন, কর ফাঁকি যে এতটা হবে তা তাঁর কল্পনারও অতীত ছিল। অমিতবাবুর মতে, এ জন্যই জিএসটি থেকে আয় তেমন বাড়ছে না।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাও মানছেন, জিএসটি থেকে আয় কম বলেই গাড়িতে কর কমানো যাচ্ছে না। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার তহবিলের খোঁজে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে হাত দিতে হচ্ছে। অথচ কেন্দ্রের হাত গলে কোটি কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ
• অর্থ মন্ত্রকের হিসেব, দু’বছরে জিএসটি-তে প্রতারণার মাধ্যমে কর ফাঁকি ৪৫,৬৮২ কোটি।
• সব রাজ্যের হিসেব এলে তা ছাপাতে পারে ১ লক্ষ কোটি টাকা।
• বেড়েছে হাওয়ালা।
কী ভাবে হচ্ছে প্রতারণা? ধরা যাক, কোনও পণ্যে জিএসটি ১০০ টাকা। তার কাঁচামালে আগে ৭০ টাকা মেটানো হলে ৩০ টাকা কর দিলেই হয়। ওই ৭০ টাকা পরে ফেরত পাওয়া যায় ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট হিসেবে। ফলে যিনি কাঁচামাল বেচছেন ও যিনি কিনছেন, তাঁদের বিল যাচাই করলেই বোঝা যায় কর ফাঁকি দিচ্ছেন কি না। কিন্তু অভিযোগ, জিএসটি রিটার্নের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকায় যাচাইয়ের ব্যবস্থাটি তুলে দিতে হয়েছে। চিঠিতে অমিতবাবু বলেছেন, ‘আমি বলেছি, বিল যাচাইয়ের ব্যবস্থা তুলে দেওয়া বুমেরাং হতে পারে। এতে প্রতারণা, হাওয়ালার বাড়বাড়ন্ত হবে।’’
সিএজি-ও জিএসটি ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এই কর চালুর পরে কেন্দ্রের রাজস্ব ১০% কমেছে। এ জন্য ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটে বিল যাচাইয়ের ব্যবস্থা না থাকার সুযোগে কর ফাঁকির দিকেই আঙুল তুলেছিল তারা। তা মনে করিয়ে অমিতের দাবি, জিএসটি পরিষদে বিষয়টি নিয়ে কথা হোক। অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, ব্যবসায়ীদের ভুয়ো বিল তৈরি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কর অফিসারদের কাছে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ গিয়েছে। এতে শুধু সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে না, সৎ ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়েও পড়ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy