Advertisement
E-Paper

Corruption: একই নামে একাধিক সংস্থার অস্তিত্ব, ডানলপে ৫০০০ কোটির আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ

সরকারি সূত্রের দাবি, এই অভিযোগের মধ্যেই কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নথিতে ‘ডানলপ’ নামে একাধিক সংস্থার অস্তিত্ব ধরা পড়ছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য , প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৪৩
Share
Save

এক দিকে ঐতিহ্য। অন্য দিকে বিতর্ক। ডানলপের সঙ্গী এখন দু’টিই। কারখানা রুগ্‌ণ হওয়ার জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলি মালিক পক্ষের ব্যবসা চালানোর সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করেছে আগেই। কারখানার আংশিক নিলাম প্রক্রিয়াও স্থগিত আদালতের নির্দেশে। এই অবস্থায় নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল কেন্দ্রের কাছে জমা পড়া ডানলপে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ ঘিরে। তাতে কার্যত ঘৃতাহুতি দিয়েছে ডানলপ নামে একাধিক সংস্থার অস্তিত্বের খবর। সূত্রের দাবি, অভিযোগের সারবত্তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। তবে সেই সব উড়িয়ে সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, এখনও আরও লগ্নি করে কারখানা সচল করতেই আগ্রহী তারা।

সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে চেন্নাইয়ে সংস্থার অম্বাত্তুর শাখার কর্মী সংগঠন, ডানলপ ফ্যাক্টরি এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সভাপতি পি ভি জয়ন্তি আয়েঙ্গার এবং সাধারণ সম্পাদক এস কুমারভেলু চিঠি দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। সেখানে দাবি, তামিলনাড়ু সরকার শিল্পায়নের লক্ষ্যে কারখানাটিকে ১৫০ একর জমি দিয়েছিল। যার মূল্য প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা। কারখানা অচল হওয়ার পরে ২০০৪ সাল থেকে সেই জমি দখল করতে থাকে একাধিক আবাসন সংস্থা। প্রায় ১০০০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। ১৯৯৮ থেকে কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইএসআইয়ের বকেয়াও মেটানো হয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগপত্র কর্পোরেট মন্ত্রকে জমা পড়ার পরে তারা তা এ রাজ্যে কর্পোরেট বিষয়ক কার্যালয়ে পাঠিয়েছে।

সরকারি সূত্রের দাবি, এই অভিযোগের মধ্যেই কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নথিতে ‘ডানলপ’ নামে একাধিক সংস্থার অস্তিত্ব ধরা পড়ছে। সেগুলির মধ্যে মূল ডানলপ কারখানা-সহ ১২টি (একটি বন্ধ হয়েছে) আরওসি (রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ়)- কলকাতার আওতায় নথিভুক্ত। দু’টি মুম্বই এবং একটি করে হিমাচলপ্রদেশ ও বেঙ্গালুরু আরওসি-র অধীন। ডানলপ নামের ন’টি সংস্থা আবার ২০০৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে খোলা হয়েছে। অনেকগুলির পরিচালন পর্ষদে একই সদস্যেরা রয়েছেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। ডানলপের ওয়েবসাইটে এখনও নিয়মিত সংস্থার টায়ার (ডোনিন নামের ব্র্যান্ড) রফতানি করার কথা লেখা আছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রশ্ন, তবে কি মূল কারখানার অর্থ বাকি সংস্থাগুলির মাধ্যমে হাতিয়েই এতগুলি কোম্পানি খোলা হয়েছে?

ডানলপ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব এ রাজ্যের শ্রমিক সংগঠনগুলিও। সিটু নেতা শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘হুগলির কারখানায় যন্ত্রপাতি থেকে ইট পর্যন্ত চুরি হয়েছে। এ নিয়ে অনেক বার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। লাভ হয়নি।” অবশ্য তৃণমূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি-র শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কারখানা বন্ধের পরে দুষ্কৃতীরা তাদের কাজ করবেই। ইট-কাঠ কিছু চুরি হতে পারে। তবে প্রশাসন সজাগ থাকায় প্রধান জিনিসপত্রগুলি ঠিক আছে।’’

যদিও ডানলপের মালিক ও রুইয়া গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পবন রুইয়ার জবাব, “২০১৪-১৫ সালে কোম্পানির ব্যালান্স শিটে ৪১৮ কোটি টাকা ছিল। তা হলে ৫০০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হল কী করে? ভিত্তিহীন অভিযোগ। লিকুইডেশন বন্ধ করা হোক। কোম্পানি চালাতে চাই। আরও বিনিয়োগ করে কারখানা সচল করতে ইচ্ছুক। সরকারকে চিঠি দিয়েছি।” তাঁর আরও দাবি, ১২টি নয়, ৫টি সংস্থা তৈরি করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, আরও বিভিন্ন জায়গায় ডানলপকে ছড়িয়ে দেওয়া। সেগুলি এখন সাময়িক ভাবে বন্ধ। কর্মী সংগঠনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

প্রবীণ শ্রমিক নেতাদের অনেকের অভিযোগ, রুগ্‌ণ কারখানা পড়ে থাকলে জমি-যন্ত্রাংশ দখল হয়। কারখানার পুঁজি সরানোর লক্ষ্যে তৈরি করা হয় অন্য একাধিক সংস্থা। শেষে যেটুকু অবশিষ্ট থাকে, তা চলে যায় লিকুইডেশনে। অর্থাৎ সব সম্পত্তি বিক্রি করে ধার শোধের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘটনাচক্রে, ডানলপ নামেও একাধিক সংস্থা রয়েছে। শান্তশ্রীবাবুর কটাক্ষ, “রুইয়া (পবন রুইয়া) কারখানা চালাতে আসেননি। রিয়েল এস্টেট করতে এসেছিলেন। ডানলপের শ্রমিকদের ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। সরকার উদ্যোগী হলে ওই জমিতে শিল্প গড়ে উঠতে পারে।”

তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল

Corruption dunlop

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।