প্রতীকী চিত্র।
গত বছর করোনা রুখতে যখন দেশ জুড়ে পুরোদস্তুর লকডাউন চলছিল, তখন যোগাযোগের মূল ভরসা ছিল টেলি পরিষেবা। কিন্তু তার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আমপানের ধাক্কায় বহু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এক্সচেঞ্জ টাওয়ার অকেজো হয়ে পড়ে। কিছু টেলি পরিকাঠামোও ভেঙে পড়ায় পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়। কোথাও কোথাও জটিলতা আরও বাড়ে প্রশাসনিক স্তরে সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে। এ বার ফের সেই আশঙ্কা তৈরি করছে ইয়াস। আগের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে এ বারও আগাম একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে টেলি
সংস্থাগুলি। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সোমবারও সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় টেলিকম সচিব ও রাজ্যের মুখ্যসচিব। ক্ষতিগ্রস্ত টেলি-যোগাযোগ যতটা সম্ভব দ্রুত স্বাভাবিক করতে সতর্ক সব পক্ষই।
ইয়াসের ওড়িশায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও তার জেরে এ রাজ্যে কলকাতা-সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় বড় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা। সরকারি-বেসরকারি টেলি সংস্থাগুলি নিজেদের মতো করে পরিকাঠামোয় নজরদারি বাড়াচ্ছে। ঝড়ের দাপটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে টাওয়ার বা এক্সচেঞ্জগুলিও বসে যায়। সেখানে বিকল্প হিসেবে ব্যাটারি বা ডিজি-সেটের বন্দোবস্তের কথা জানাচ্ছে বিএসএনএল ও বেসরকারি সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই। জেনারেটরের জন্য বাড়তি ডিজেল মজুত করা হচ্ছে। সংস্থাগুলি যাতে একে অন্যের নেটওয়ার্ক যাতে ব্যবহার করতে পারে সে ব্যবস্থাও (ইন্ট্রা সার্কল রোমিং) দরকারে চালু হবে। সূত্রের খবর, গ্রাহক নিজস্ব সংস্থার নেটওয়ার্ক না-পেলে ও ফোনের ‘সেটিং’-এ স্বয়ংক্রিয় ভাবে যে কোনও নেটওয়ার্ক বাছার ‘অপশন’ থাকলে তা এমনিই সম্ভব হবে। অপশন না-থাকলে অন্য চালু নেটওয়ার্ক বেছে নেওয়া যাবে।
গত বছর কলকাতায় গাছের ডাল কাটতে গিয়ে টেলিফোনের তার কাটা পড়ে পরিষেবা ব্যাহত হয়। ক্যালকাটা টেলিফোন্সের সিজিএম বিশ্বজিৎ পাল এ দিন জানান, রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সংস্থার সমন্বয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণ, অপটিক্যাল ফাইবার মেরামতি ও টাওয়ারের জন্য তিনটি ক্ষেত্রে বাড়তি মোবাইল টিম গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট জেলায় জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগের কথা জানান বিএসএনএলের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলের সিজিএম তমাল মৈত্র। ওড়িশার বালেশ্বরে আছড়ে পড়ার পরে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা ও ঝাড়গ্রামে ইয়াসের প্রভাব পড়ার শঙ্কা সবচেয়ে বেশি বলে সেখানে তাঁরা বাড়তি নজর দিচ্ছেন।
সিওএআইয়ের ডিজি এসপি কোছর জানান, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় এই দুর্যোগের প্রভাব যতটা কম টেলি-পরিষেবার উপর পড়ে, তা নিশ্চিত করাই লক্ষ্য। এ জন্য রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও সমন্বয় রেখে চলেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy