—প্রতীকী চিত্র।
নির্বাচনের শেষ দফার ভোটগ্রহণের মুখে মোদী সরকারকে শক্তি জোগালো দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বৃদ্ধির হার।
শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান জানাল, সমস্ত পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে ৮.২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে গত অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) আর্থিক বৃদ্ধি। ওই বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিক অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চেও তা ৭ শতাংশের নীচে নামার আশঙ্কা উড়িয়ে ছুঁয়েছে ৭.৮%। তার আগের তিন ত্রৈমাসিকের ৮% পার করা হারের থেকে তা কম হলেও, যথেষ্ট উঁচু। হিসাব সামনে আসতেই তাই উচ্ছ্বসিত সরকারি মহল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেশের পরিশ্রমী মানুষদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ফেরি করেছেন আগামী দিনে বৃদ্ধির রথের চাকা আরও দ্রুত গড়ানোর স্বপ্ন। আর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন লিখেছেন, মোদী সরকারের তৃতীয় দফাতেও বৃদ্ধির এই গতি বহাল থাকবে। তাঁদের কল-কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা যে সফল, তার প্রমাণ ওই ক্ষেত্রটির ৯.৯% বৃদ্ধি।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘জাতীয় আয় হিসাবের সময় আমদানি-সহ আরও কিছু খরচ বাদ দেওয়া হয়। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম গত এক বছর ধরে কম। এর ফলে আমদানি খাতে দেশের খরচ কমে যাওয়া হিসাবে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। তবে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে যখন ৮% বৃদ্ধি হয়েছিল, তখন অর্থনীতিবিদদের একাংশ তার যথার্থতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। এ বারও এই বিষয়ে তাঁরা কী বলেন দেখা দরকার। যদিও এই যে ভোটের মধ্যে বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হল, তার মধ্যে আমি রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছি।’’
ভারতের বৃদ্ধি ক্রমাগত চমক দিয়ে চলেছে, বলছেন মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ধর্মাকৃতি জোশী। নীতি আয়োগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রাজীব কুমারের বক্তব্য, সমস্ত হিসাব-অনুমান এবং বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলিকে পিছনে ফেলে দিল এ দেশ।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর মন্তব্য, গত বার বৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। ফলে এ বার সবটা খতিয়ে না দেখে মন্তব্য করা কঠিন। তবে পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের কথায়, ‘‘পরিসংখ্যান প্রত্যাশা ছাপিয়ে গেল বটে। তবে ব্যক্তিগত কেনাকাটার বৃদ্ধি কেন এখনও ৪ শতাংশে রয়ে গেল, সেই প্রশ্ন থাকছেই। প্রকৃতপক্ষে সেটাই এখন সব থেকে বড় চিন্তার জায়গায়। আর একটি উদ্বেগ হল সুদের হার। ভোট পর্ব মিটে গেলে নাছোড়বান্দা মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে যা আরও বাড়াতে হতে পারে।’’
যদিও মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি কেনাকাটা করছেন, দাবি আর্থিক বিশেষজ্ঞ সূপর্ণ মৈত্রের। তিনি বলেন, ‘‘এই বৃদ্ধি অর্থনীতি নিয়ে শিল্পকে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা এবং জোগান-শৃঙ্খলের সমস্যার মধ্যে দাঁড়িয়েও ভারতের এমন উন্নতি তাদের আরও উৎসাহিত করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy