রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। —ফাইল চিত্র।
গত বছর রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন মন্তব্য করেছিলেন, ২০২৩ সালে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫% হলেই ভারত নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতে পারে। সেই মন্তব্যের সমালোচনা কম হয়নি। আজ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও নিজের সেই বক্তব্যে অনড় থাকলেন রাজন। ব্যাখ্যা করলেন সেই মন্তব্যের বিভিন্ন দিক। সেই সঙ্গে তাঁর সমালোচকদের দিকেও ফিরিয়ে দিলেন পাল্টা আক্রমণ।
একাধিক রেটিং এজেন্সি, এমনকি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে ভারতীয় অর্থনীতি ৭.৭% হারে এগিয়েছে। ধরে রেখেছে বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে দ্রুততম বৃদ্ধির তকমা। যদিও সেই বর্ধিত সম্পদের আদৌ কতটা সুষম বণ্টন হয়েছে, কাজের বাজারের উন্নতি হয়েছে কি না, মূল্যবৃদ্ধি কতটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এই সমস্ত প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। এই প্রেক্ষিতেই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে রাজনের গত বছরের মন্তব্যের কথা। আমেরিকার শিকাগো বুথ স্কুলের অর্থনীতির অধ্যাপকের বক্তব্য, ‘‘আমি ঠিকই বলেছিলাম। আমরা ভাগ্যবান।... বিশ্ব অর্থনীতির অগ্রগতি আরও পোক্ত ভাবে হয়েছে।’’ নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তাঁর ব্যাখ্যা, আমেরিকার বৃদ্ধির হার ছিল প্রত্যাশার তুলনায় ৩% বেশি। ভারতের বৃদ্ধিও পূর্বাভাসের তুলনায় বেশি হচ্ছে দেখে তিনি খুশি। তবে তিনি চান এই অগ্রগতির হার হোক ৮%। একই সঙ্গে রাজনের স্পষ্ট হিসাব, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতির ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব। অতিমারির আগে থেকে গত চার বছরে বৃদ্ধির হার ছিল ৪%। তা বেড়ে ৬.৫ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে। অর্থনীতির আনুমানিক বহর এখন ৩.৫ লক্ষ কোটি ডলার। অর্থাৎ, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছতে গেলে বৃদ্ধির হার ১২%-১৫% হতে হবে।
রাজনের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের বোঝা মোদী সরকারকে বহন করতে হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। রাজন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দাবি করেছেন, মূল্যবৃদ্ধির হারকে দুই অঙ্ক থেকে নামিয়ে এনেছিলেন তিনি। তাঁর পদক্ষেপের ফলেই ব্যাঙ্কের অনাদায়ি ঋণ কমেছে। যার কৃতিত্ব এখন নিতে চেষ্টা করছে সরকার। সমালোচকদের উদ্দেশে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নরের বক্তব্য, ‘‘সমালোচকের বক্তব্যের পাল্টা সমালোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত। অমুক ব্যক্তি জাতীয়তা বিরোধী, এমনটা বলা ঠিক নয়।’’ গায়ে ‘সবজান্তা’ কিংবা ‘বিশ্বগুরু’র তকমা সেঁটে নেওয়ার চেয়ে ভারতের অগ্রগতি সম্পর্কে বিতর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য তাঁর।
রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রাজনের যোগ দেওয়া নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কটাক্ষ করা হয় তাঁর রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে। সেই প্রেক্ষিতে রাজন বলেছেন, জাতীয় সংহতি, সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলা এবং ভালবাসার ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী তিনি। মনে করেন, রাহুলের কর্মসূচির বিষয়ও সেটাই ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy