প্রতীকী ছবি
গণ্ডি আরও বড় করে বছরে ২৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করে, এমন সংস্থাকেও মাঝারি শিল্পের আওতায় নিয়ে আসা হল।
লকডাউনের ধাক্কায় বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই নরেন্দ্র মোদী সরকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। তাতে ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ঢালাও ঋণের বন্দোবস্ত করা হলেও কোনও পক্ষই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেনি। আজ তাই দ্বিতীয় মোদী সরকারের দ্বিতীয় বছরের প্রথম দিনে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে ছোট-মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা ফের বদল করল কেন্দ্র। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত লগ্নি ও ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা হলেও মাঝারি শিল্প বলে ধরা হবে। রফতানিকারী সংস্থাগুলির রফতানির পরিমাণকে এই ব্যবসার মধ্যে ধরা হবে না।
আর্থিক প্যাকেজের অঙ্গ হিসেবে হকার, ঠেলাওয়ালাদের ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা হয়েছিল। তাতে আজ মন্ত্রিসভা সিলমোহর দিয়েছে। এই প্রকল্পের নাম ‘পিএম-স্বনিধি’ বা ‘পিএম স্ট্রিট ভেন্ডর আত্মনির্ভর নিধি’ রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পে সেলুন, মুচি, পানের দোকান, লন্ড্রি চালানো মানুষেরাও ঋণ নিতে পারবেন। ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলবে। এক বছরের মধ্যে মাসিক কিস্তিতে ঋণ শোধ করতে হবে।
কেন্দ্র একে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই সিদ্ধান্তে ছোট-মাঝারি শিল্পের ভোল বদলে যাবে।’’ ছোট-মাঝারি শিল্পের সমস্যা সমাধানে ‘চ্যাম্পিয়নস’ নামে পোর্টালও চালু করেন তিনি।
বিরোধীদের অভিযোগ, ছোট-মাঝারি শিল্পকে বন্ধকহীন ঋণ দেওয়ার যে ঘোষণা হয়েছে, সেই সুবিধা অপেক্ষাকৃত বড় সংস্থাগুলিকে পাইয়ে দিতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত। কংগ্রেসের দাবি, কেন্দ্র যে সব শর্ত রেখেছে, তাতে ৬ কোটি ছোট-মাঝারি শিল্পের খুব সামান্য অংশই উপকৃত হবে। যে সব ক্ষুদ্র সংস্থা ধুঁকছে, তারা কোনও সুবিধাই পাবে না। তৃণমূল মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘সব ঝুট হ্যায়। পুরনো জিনিস বারবার নতুন মোড়কে হাজির করছে মোদী সরকার। সপ্তাহে দু’বার করে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলছে।’’ বিরোধীদের প্রশ্ন, কোনও মুচি বা পানের দোকানের মালিক কি ব্যাঙ্কে ঋণ নিতে যাবেন?
আগে কারখানায় ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত লগ্নি ও পরিষেবায় ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত লগ্নিকে মাঝারি শিল্প বলে ধরা হত। আর্থিক প্যাকেজে বলা হয়, ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত লগ্নি ও ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা হলে মাঝারি শিল্প বলা হবে। এ বার ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসা করা সংস্থাকেও মাঝারি শিল্পের আওতায় এনে ছোট-মাঝারি শিল্পমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘‘যে সব ছোট-মাঝারি শিল্প শেয়ার বাজারে নাম লেখাবে, সরকার ৫০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে তাদের শেয়ার কিনবে। তার পর শেয়ারের দর বাড়লে তা বেচে অন্য সংস্থার শেয়ার কিনবে। যে সব ছোট-মাঝারি শিল্প রফতানি করে, ভাল ব্যবসা করে, ঠিকমতো জিএসটি মেটায়, তারা শেয়ার বাজারে নাম লেখাতে পারে। শেয়ার বাজার থেকে অনেক সস্তায় পুঁজির টাকা তোলা যায়।’’ ছোট-মাঝারি শিল্পের প্রতিনিধিরা জানান, তাঁরা খুঁটিনাটি দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।
আরও পড়ুন: গাড়ি বিক্রি তলানিতেই
আরও পড়ুন: মল খুললেও থাকবে বিধিনিষেধ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy