রফতানিকারীরা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র গোবিন্দভোগ চালে ২০% শুল্ক চাপিয়েছে। ফাইল চিত্র।
রফতানিতে কেন্দ্র ২০% শুল্ক বসানোয় মাসে ১০-১২ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে, অভিযোগ গোবিন্দভোগ চালের ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, শুল্কের জেরে গত ক’মাসে রফতানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, খোলা বাজারে গোবিন্দভোগ ধানের দাম কমছে। কয়েক দিনের মধ্যে নতুন ধান উঠতে শুরু করবে। শুল্ক মকুব না করা হলে তখন দাম আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা চাষিদের।
গোবিন্দভোগ চালে রফতানি শুল্ক মকুবের জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিতে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরিন এবং ইউরোপের অনেক দেশে এর ভাল চাহিদা রয়েছে। গত কয়েক বছরের নিরলস চেষ্টায় রাজ্য থেকে এই চালের নিয়মিত রফতানি চালু করা গিয়েছিল। কিন্তু শুল্ক বসানোয় তা ধাক্কা খেয়েছে। প্রভাব পড়ছে চাষিদের আয়েও। বুধবার নদিয়াতেও মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বাংলায় গোবিন্দভোগ চাল বেশি হয় বলে কেন্দ্র এমনটা করেছে।
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা তথা পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “রফতানি বৃদ্ধির কারণে গোবিন্দভোগ ধানের চাষ অনেকটাই বেড়েছে। জৈব পদ্ধতিতে চাষ হওয়ায় বিদেশে এর বাজার তৈরি হয়েছে।’’ এই চাল বছর পাঁচেক আগে ‘জিআই’ তকমা পায়। রফতানিকারীরা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র গোবিন্দভোগ চালে ২০% শুল্ক চাপিয়েছে। তবে আর এক সুগন্ধি চাল বাসমতীতে কোনও শুল্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী বাসমতীর মতো গোবিন্দভোগ থেকেও শুল্ক তোলার আর্জি জানিয়েছেন।
‘বর্ধমান গোবিন্দভোগ মিলার্স’ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, প্রতি মাসে ১০০০ টন গোবিন্দভোগ চাল রফতানি করা হত। তার বাজারমূল্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সংগঠনের সভাপতি শ্যামল রায়ের আক্ষেপ, শুল্ক চাপানোয় বিদেশে গোবিন্দভোগ চাল যাওয়া একেবারে বন্ধ। গোবিন্দভোগের দাম বেড়ে যাওয়ায়, গুণমান কম হওয়া সত্ত্বেও তুলনায় কম দামের মহারাষ্ট্রের ‘কোমল’ ও বাংলাদেশের ‘চিনেগোড়া’ চাল বিক্রি হচ্ছে বিদেশের বাজারে।
পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকা গোবিন্দভোগ ধানের ‘ভান্ডার’ বলে পরিচিত। এখানে এই ধান ভাঙানোর জন্যই প্রায় ৭৫টি চালকল রয়েছে। এলাকার চাষি আজিজুল হক, শ্যামল বিশ্বাস, বৈদ্যনাথ ঘোষের দাবি, “এক বস্তা (৬০ কেজি) গোবিন্দভোগ ধানের দাম ৩০৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। দু’মাস ধরে চালকল ধান নিচ্ছে না। দাম ২৭০০ টাকায় নেমেছে। তা সত্ত্বেও বিক্রি করা মুশকিল হচ্ছে। নতুন ধান উঠলে স্বাভাবিক ভাবেই দাম আরও পড়বে। চিন্তায় আছি।’’
ব্যবসায়ীদের দাবি, শুল্ক না কমালে বিদেশে গোবিন্দভোগ চালের বাজার ফিরে পাওয়া মুশকিল হবে। ক্ষতি হবে চাষেরও। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে কী ফল হয়, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy