ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার বাজারে গুগলের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ভাঙতে এ বার খসড়া প্রস্তাব তৈরি করছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ওই খসড়ায় ইউরোপে গুগ্লের বাকি ব্যবসা থেকে সংস্থাটির সার্চ ইঞ্জিনকে (যার মাধ্যমে নেটে তথ্য খোঁজা হয়) আলাদা করার প্রস্তাব রেখেছে তারা।
খসড়ায় গুগ্ল বা অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনের নাম স্পষ্ট ভাবে বলা নেই ঠিকই। কিন্তু ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য যে মার্কিন তথ্য-প্রযুক্তি বহুজাতিকটিই, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, এমনিতে এ বিষয়ে নতুন করে আইন তৈরির ক্ষমতা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নেই। এক্তিয়ার নেই কোনও সংস্থাকে টুকরো করার। এমনকী নিজেদের তৈরি প্রস্তাব গুগ্লকে মানতে বাধ্যও করতে পারে না তারা। কিন্তু সব কিছু সত্ত্বেও এই খসড়া গুগলের পক্ষে বড়সড় ধাক্কা। কারণ, তা সংস্থাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাপ বাড়াতে পারে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা কমিশনের উপর।
ইউরোপে নেটে তথ্য খোঁজার (সার্চ ইঞ্জিন) বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই গুগলের দখলে। গত তিন-চার বছর ধরে সংস্থা ক্রমাগত আক্রমণের মুখেও পড়ছে ইউরোপের মাটিতে। কখনও তার বিরুদ্ধে করফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। কখনও অভিযোগ কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার গোপনীয়তার তোয়াক্কা না-করে তার সম্পর্কে তথ্য সার্চ-রেজাল্টে দেখানোর। ব্যক্তিগত তথ্যকে নেটে তথ্য খোঁজার (সার্চ) কাজে ব্যবসায়িক ভাবে ব্যবহার করার জন্যও আঙুল উঠেছে ল্যারি পেজের সংস্থার দিকে।
গুগলের তাদের প্রায় একচেটিয়া এই কব্জাকে কী ভাবে ব্যবহার করছে, তা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে ইউরোপে। কয়েকটি ছোট সার্চ ইঞ্জিন জানিয়েছে, গুগলের থাবার সামনে তারা অসহায়, ভীত। এতটাই যে, বাজারে টিকে থাকাই দায়। অনেক সংস্থার আবার অভিযোগ, নেটে তথ্য খোঁজায় তাদের উপর সাধারণ মানুষের নির্ভরশীলতার সুযোগ নিয়ে ‘পছন্দের’ ওয়েবসাইটকে বাড়তি সুবিধা দেয় গুগল। সার্চ-রেজাল্টের তালিকায় নিয়মিত তাদের জায়গা হয় উপরের দিকে। অনেকের বক্তব্য, কিছু ক্ষেত্রে নেট ব্যবহারকারীকে সরাসরি গুগলেরই অন্য পরিষেবায় নিয়ে যাচ্ছে সংস্থার সার্চ ইঞ্জিন। ফলে অনৈতিক সুবিধা পাচ্ছে তারা। ভাঙছে প্রতিযোগিতার নিয়ম।
খসড়া নিয়ে গুগল মুখ না-খুললেও এই সব অভিযোগের বিরুদ্ধে ওই মহাদেশে অনেক দিনই লড়াই করছে তারা। অনেকের মতে, গুগ্লের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় দেশগুলির এই অভিযোগ তোলার পিছনে প্রচ্ছন্ন মদত আছে মাইক্রোসফট-সহ বেশ কিছু সংস্থার। গুগ্ল কর্তারা আবার বিশ্বাস করেন, মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি সম্পর্কে ইউরোপের এই সন্দেহের দৃষ্টি নতুন নয়। বিশেষত জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলের ফোনে ওয়াশিংটনের আড়ি পাতার খবর সামনে আসার পর তা নিয়ে তৈরি হওয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া বিষয়টিকে আরও তেতো করেছে।
তাই এই পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টের খসড়ার প্রভাবে যদি সত্যিই শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা কমিশন ইউরোপে গুগ্লের ব্যবসা ভাঙার কথা বলে, তা সংস্থাটিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে বলে ধারণা অনেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy