জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে শুক্রকে বলা হয় সৃজনশীলতা
একটি দেশ, জাতি বা কোনও ব্যক্তি কতটা সফল, কতটা শক্তিশালী, কতটা প্রভাবশালী তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী দুটি স্তম্ভ রয়েছে
১) শিক্ষা
২) অর্থনীতি
দেশের জিডিপি-র হ্রাস-বৃদ্ধি বা শিক্ষাব্যবস্থার চাপান-উতোর আমাদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। আমরা হিসাব কষতে বসি, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল...........!! ২০২১-২২ এ ছিল.........!! গত তিন বছরের মধ্যে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছে? বেড়েছে? অন্যদিকে বিভিন্ন সমীক্ষা মারফৎ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার যে রেখাচিত্র ফুটে উঠছে তাও বুকে কাঁপন ধরানোর পক্ষে যথেষ্ট। স্বাধীনতার আগে ভারতের শিক্ষার সার্বিক হার পীড়াদায়ক ছিল। ভাবা হয়েছিল, স্বাধীনতার পর সেই পীড়া দূর হবে। স্বাধীনতার পর শিক্ষার প্রসার অবশ্যই বেড়েছে। বহু বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। শিক্ষাগ্রহণের হারও যথেষ্ট বেড়েছে। কিন্তু কর্মমুখী শিক্ষা? সেখানে তো এখনও বহু পথ অতিক্রম করা বাকি। ইংরেজদের প্রবর্তিত যে শিক্ষাকাঠামো অনুসারে বেড়ে উঠেছি আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম... তা কেবলই শ্রমজীবী, চাকরিনির্ভর, সৃজনক্ষমতা বিমুখ, উদ্ভাবনীশক্তি বিমুখ কর্মীর দল তৈরি করে চলেছে। এ যেন সেই তাসের দেশের হরতন-ইস্কাপন, কলের পুতুলের মতো তারা শুধু নির্দেশ পালন করতেই ব্যস্ত। নিজ উদ্যোগে সাম্রাজ্য স্থাপনের নিষ্ঠা কই? অথচ আমরা তো জানি দেশের অগ্রগতিতে, আর্থিক বিকাশে কতটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগপতিরা। শুধু বিজনেস টাইকুনরাই নন, অতিক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিটি শিল্পদ্যোগীর অবিস্মরণীয় ভূমিকা রয়েছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে। অথচ যে বাণিজ্যে লক্ষ্মীর বসত, সেই বাণিজ্যে নিবেশ করতে আমরা আজও ভয় পাই(কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে)। চাকরির নিরাপত্তাজীবন আমাদের সৃজনশীলতা নষ্ট করে ফেলেছে। এই প্রবণতার নেপথ্যে অবশ্য রয়েছে সুচতুর ষড়যন্ত্রের দীর্ঘ ইতিহাস, যার সূচনা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে।
বণিকের ছদ্মবেশে ভারতে প্রবেশ করেই চতুর ইংরেজরা বুঝে ফেলেছিল, গুরুকুল নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থায় অভ্যস্ত ভারতীয়রা, সংস্কৃতি-সাহিত্য-বিজ্ঞান চর্চায়, মননে, বুদ্ধিমত্তায়, সৃজনশীলতায় ইংরেজ তথা ইউরোপিয়ানদের তুলনায় বহু যোজন এগিয়ে। তাই বিদ্যায়-বুদ্ধিতে এগিয়ে থাকা ভারতীয়দের শাসন করতে হলে, নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবার আগে তাদের ভাবনায় আঘাত করতে হবে, সৃজনশীলতার পথ বন্ধ করতে হবে, এই ভাবনায় সবার আগে ইংরেজরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আঘাত হানে। ইংরেজি শিক্ষায় ভারতীয়দের শিক্ষিত করে তোলার নেপথ্যে ইংরেজদের উদ্দেশ্য ছিল একটাই, মেধাহীন শ্রমজীবী তৈরি করা। যারা ইংরেজদের হুকুম তামিল করবে। ফল স্বরূপ, বেন্টিঙ্ক-ম্যাকলে-ট্রেভলিয়ন এই ত্রয়ী সাম্রাজ্য শাসনের প্রয়োজনে ও আর্থিক সম্পদকে বাণিজ্য ও শিল্পের স্বার্থে শোষণের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামাফিক এই ইংরাজী শিক্ষা প্রবর্তনের পক্ষপাতী হলেন। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে বেন্টিঙ্ক এই প্রস্তাবে সাক্ষর করেন, কিন্তু তার আগেই ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর কুখ্যাত প্রতিবেদনে লর্ড ম্যাকলে উল্লেখ করেছিলেন, ভারতে এমন এক শ্রেণির লোক গড়তে হবে যারা ইংরেজদের দোভাষীর কাজ করবে। তাদের রক্ত হবে ভারতীয় কিন্তু রুচি, নীতি ও বুদ্ধিতে ইংরেজ। ম্যাকলের এই কুখ্যাত "নিম্নগামী পরিস্রবণ নীতি" দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল। এতে দেশীয় ভাষা, সাহিত্য, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এবং এর ফলে ইংরেজদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত দোভাষী, গোমস্তা, মুৎসুদ্দি, দেওয়ান, মুনশী, কেরানি ইত্যাদির অধিকাংশই পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে আসেন, এবং এক নব্য ভারতীয়ের সৃষ্টি হয়, যারা পরিপূর্ণ চাকরিমুখী, উদ্ভাবনবিমুখ। এবং এই ট্রাডিশন অনেকটাই সমানে চলছে।
আমার দীর্ঘদিনের পেশাদারি অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, বেশ কিছু ভারতীয় বিশেষত বাঙালি যুবসমাজের মধ্যে এক অদ্ভুৎ নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের লিপ্সা কাজ করে, এরা ঝুঁকি নিতে ভয় পায়। সম্পদশালী হতে চায়, কিন্তু ৮ ঘন্টা চাকরি করার মানসিকতা। ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে বিনিয়োগ করে কোটিপতি হতে চায়, কিন্তু ব্যবসায় অনিহা, নিজস্ব ইনোভেটিভ আইডিয়া প্রয়োগের ইচ্ছা প্রায় নেই বললেই চলে। এবং এই প্রবণতা তৈরি হয় জন্মছকে শুক্র গ্রহের অশুভ অবস্থানের প্রভাবে।
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে শুক্রকে বলা হয় সৃজনশীলতা, নতুনত্ব, উদ্ভাবন, ভালোবাসা, সৌন্দর্য, ইচ্ছা-আকাঙ্খা, শয্যাসুখ, দেহের অভ্যন্তরীণ শক্তি(উর্জা), ব্যক্তিগত স্বাদ, সম্পর্কের মেয়াদ, আহ্লাদ-আদর, নান্দনিকতার গ্রহ। তুলা এবং বৃষ রাশির অধিপতি গ্রহ শুক্র, আমাদের সম্পর্ক, বস্তুগত সম্পদ প্রাপ্তি, ভোগ-বিলাস, আরাম-আনন্দ এবং সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে রাশিচক্রের সপ্তম এবং দ্বাদশ ঘরে শুভ নক্ষত্রে অবস্থান করলে শুক্র দুর্দান্ত ফল দেয়। দশম এবং পঞ্চম ভাবে শুক্র, শুভ নক্ষত্রে/নিজ নক্ষত্রে থাকলে জাতক বা জাতিকার মধ্যে চরম উদ্ভাবনী শক্তি বা সৃজনশীলতার স্ফুরণ দেখা দেয়। অন্যদিকে জন্মছকে শুক্রের দুর্বল অবস্থান আমাদের প্রতিভার বিকাশ, নান্দনিকতা, সৃষ্টিশীলতা রুদ্ধ করে। কীভাবে বুঝবেন আপনার জন্মছকে শুক্রের অবস্থান শুভ না অশুভ? শুক্রের অশুভত্বের লক্ষণগুলি মিলিয়ে নিন...
১) চেহারার ঔজ্জ্বল্য হ্রাস পাওয়া
২) আকর্ষণ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া
৩) আর্থিক দৈন্য
৪) পুরুষদের ক্ষেত্রে জীবনসঙ্গী পেতে অথবা বিবাহিত জীবনে সমস্যা (মহিলাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় মূলত মঙ্গল গ্রহের জন্য)
৫) সম্পদহানি
৬) প্রচুর পরিশ্রম, কঠোর শ্রম কিন্তু সাফল্য-সমৃদ্ধি অধরা
৭) রাজনৈতিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি থেকে কষ্ট (এক্ষেত্রে জন্মছকে রবির অবস্থানও দেখতে হবে)
৮) অনেক ভাবনা-চিন্তা করে পরিকল্পনা করলেও বাস্তবায়নে বিভ্রাট
৯) ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়া
১০) একটু ঢিলে-ঢালা গয়ংগচ্ছ মনোভাব
১১) পোশাক-পরিচ্ছদের রুচি বা পারিপাট্যের অভাব
১২) খুব ভালো, সংস্কারযুক্ত মনোভাব দেখাতে চাইলেও অন্যের কাছে বড়মাত্রায় ঠকে যাওয়া
১৩) সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করা
১৪) এমন মিথ্যা বলার প্রবণতা, যা সহজেই ধরা পড়ে যায় এবং অন্যের কাছে অপমানিত হতে হয়
১৫) দ্রুত বিরক্ত হওয়া, প্রবল ক্রোধ, অতিমাত্রায় সংবেদনশীলতা, গোপনাঙ্গের রোগ-ব্যাধি
১৬) টাকা থাকলেও গাড়ি কেনা বা বাড়ি তৈরির সুখ ভোগ করতে না পারা
১৭) সম্পত্তি বন্ধক রাখতে বাধ্য হওয়া
১৮) পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া অথবা কোনও অবৈধ সম্পর্কে নির্ভরশীলতা
এছাড়াও শুক্র সম্বন্ধীয় অসংখ্য সূত্র রয়েছে জ্যোতিষশাস্ত্রে এবং আমার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানে পরবর্তী পর্বগুলিতে সে বিষয়ে আলোচনা হবে। Guided Symbol Meditation এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable)।
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy