বিটিএম কার্নিভাল। ছবি: শান্তনু পালিত
প্রতি বছরের মতোই, এই বছরও সাড়ম্বরে শুরু হয়ে গেল বিটিএম চৈত্র কার্নিভাল। আর প্রথম দিনের ভিড় ছিল কার্যত চোখে পড়ার মতো। ক্রেতাদের ভিড়ে প্রথম দিনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তরুনিমার মতো বেশ কয়েক জন বিক্রেতার পুরো স্টকই শেষ হয়ে গেল। বলা বাহুল্য, ৬ এপ্রিল মধ্য কলকাতার রেঞ্জার্স ক্লাবে যেন ছিল জনপ্লাবন। শুধু কলকাতা থেকেই নয়, প্রদর্শনী দেখতে কলকাতার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলাগুলি থেকে হাজির হয়েছেন মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে, কোনও অনলাইন গ্রুপের তরফে আয়োজন করা কোনও প্রদর্শনীতে প্রথম দিনেই এমন ভিড় রেকর্ড ভেঙ্গে দেওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে। বিটিএম চৈত্র কার্নিভাল চলবে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত। সংস্থার তরফে আশা করা হচ্ছে, এই ভিড় আরও বাড়বে বৈ কমবে না। এই বছর বিটিএম চৈত্র কার্নিভালের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার অনলাইন।
এই ভিড়ের মধ্যেই প্রদর্শনী চত্ত্বর ঘুরে দেখা গেল, বিটিএম চৈত্র কার্নিভাল যেন ‘সব পেয়েছির দেশ’! কী নেই সেখানে? শুধু মাত্র পয়লা বৈশাখেরই কালেকশনই নয়, সব বয়সের মহিলা-পুরুষদের জন্য সারা বছরের বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সম্ভার রয়েছে এখানে। রয়েছে সানগ্লাস, ঘড়ি, জুতো, কসমেটিক, গয়না, পারফিউম, বেড শিট, ব্যাগ, বেল্ট, ফটো ফ্রেম, রেজিন আর্টের সামগ্রী সহ বিভিন্ন জিনিস। এখানেই শেষ নয়। কেনাকাটি করতে করতে খিদে পেয়েছে? রয়েছে রকমারি খাবারের দোকানও। এর মধ্যেই যদি ভাগ্য পরীক্ষা করাতে চান, তা হলে সেই সুযোগও রয়েছে। কারণ প্রদর্শনী প্রাঙ্গনেই রয়েছে জ্যোতিষীর স্টল। সব মিলিয়ে এ যেন হয়ে উঠেছে চৈত্র মাসের মস্ত বড় মেলা।
আসলে বিগত বছরগুলির পরিসংখ্যানও একই কথা বলছে। কারণ, বছরের বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত হওয়া বিটিএম-এর অফলাইন প্রদর্শনীগুলিতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। অথচ এই বছরে মেলার ভিড়, আগের সমস্ত ভিড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে। কারণ কী? উত্তরে বিটিএম-এর প্রতিষ্ঠাতা পারমিতা ঘোষ জানাচ্ছেন, “বিশ্বস্ততা ও বৈচিত্রের কারণেই এই কার্নিভালের ভিড় বরাবর চোখ টেনেছে মানুষের। গত ৫ বছর ধরে আমাদের এই প্রদর্শনী বহু মানুষ দেখেছেন। তাঁরা বুঝেছেন যে অনলাইন লাইভের সঙ্গে অফলাইনের এই প্রদর্শনীগুলিতে বাজারের থেকেও বেশ কম দামে সহজেই ভাল জিনিস পাওয়া যায়। আমরা সেই বিষয়টি প্রথম থেকেই ধরে রেখেছি। আর সেই কারণেই এই প্রদর্শনী এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে।”
শুধুমাত্র বিক্রি বা কেনাকাটাই নয়, এই বছরের কার্নিভালে ক্রেতাদের জন্য থাকছে বিরাট ক্যাশব্যাকের সুযোগও। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিটিএম ক্যাশ’। এই প্রসঙ্গে বিটিএম ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন পারমিতা জানাচ্ছেন, “সাধারণত এই ধরনের প্রদর্শনীতে যেমন এই রকম ভিড় দেখা যায় না, ঠিক তেমনই ক্রেতাদের জন্য এমন ক্যাশব্যাকের দেখা পাওয়াও দুস্কর। আর সেই কারণেই আমরা এই ক্যাশব্যাক নিয়ে বেশ কিছু উদ্ভাবনী প্রচারও করেছিলাম। তার ফলাফল দেখতেই পাচ্ছেন।”
প্রদর্শনী নিয়ে বিশেষভাবে উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে প্রদর্শনীতে আগত ক্রেতাদের মধ্যেও। যেমন দমদমের বাসিন্দা বসুধা মিত্র। তাঁর কথায় এই প্রদর্শনী নিজ গুণে অনন্য। বসুধা প্রথম বছর থেকেই নিয়ম করে প্রতি বছর চৈত্র কার্নিভাল সহ বিটিএম আয়োজিত বিভিন্ন প্রদর্শনীতে আসেন ও কেনাকাটা করেন। তিনি বলেন, “চৈত্র, পুজো এবং শীত, এই পুরো কেনাকাটাই আমি করি বিটিএম-এর বিভিন্ন অফলাইন প্রদর্শনী থেকে। ২০১৮ সালে এক বান্ধবী কার্যত জোর করেই বিটিএম-এর প্রথম প্রদর্শনীতে আমায় নিয়ে গিয়েছিল। সত্যি বলতে, তখন থেকেই আমি বিটিএম-এর প্রেমে পড়ে গিয়েছি। এমনকি অতিমারির সময় যখন এই প্রদর্শনীগুলি হত না, তখনও আমি এই অফলাই প্রদর্শনীগুলিকে খুব মিস করতাম।”
আর কেমন আছেন বিক্রেতারা? কেমন চলছে তাঁদের কেনাবেচা? প্রশ্ন করা হল বিটিএম কার্নিভালেরই এক বিক্রেতা প্রাপ্তি করকে। প্রাপ্তি প্রতিবারই বিটিএম-এর বিভিন্ন প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকেন তাঁর বেল্ট ও ড্রেস ম্যাটেরিয়ালসের বিভিন্ন কালেকশন নিয়ে। গত বছরগুলির কেনাবেচায় তাঁর সাফল্যে উৎসাহী হয়ে এই বছর তিনি তাঁর নতুন ব্যবসা ফটোগ্রাফিরও স্টল দিয়েছেন এই প্রদর্শনীতে। প্রশ্নের উত্তরে প্রাপ্তি বললেন, “সত্যি বলতে একটুও দম ফেলার সময় নেই। এ বার দাদাও রয়েছেন আমার সঙ্গে। না হলে স্টল সামলানো যথেষ্ট মুশকিল হত।” ভিড়ের জন্য কথা বলা না গেলেও বোঝা গেল যে একই মত দিচ্ছেন শাড়ি স্টল নিয়ে বসা প্রিয়া দাশগুপ্ত, পোশাক সামগ্রী নিয়ে বসা শুভশ্রী প্রসাদ, বা টাপারওয়ারের স্টল নিয়ে বসা সুচিস্মিতা চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য বিক্রেতারাও। অন্য দিকে বিটিএম ক্যাশের তোড়জোর করতে থাকা পারমিতার মুখে তখন তৃপ্তির হাসি।
এই প্রতিবেদনটি ‘বিটিএম’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy