লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দির
দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য নজির তৈরি করেছে লায়ন্স বিদ্যামন্দির। সবুজে ঘেরা স্কুল ক্যাম্পাস থেকে এখানকার পরিকাঠামো পড়াশোনার জন্য একেবারে উপযুক্ত। ২০০২ সালে পথ চলা শুরু। তার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষার জন্য আদর্শ পরিবেশ হয়ে উঠেছে সিআইএসসিই –এর অন্তর্ভুক্ত এই বিদ্যালয়। লায়ন্স ক্লাব অফ ক্যালকাটা গ্রেটারের অন্তর্ভূক্ত সাদার্ন বাইপাসে চৌহট্টির এই বিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য সঠিক খরচে শিক্ষার্থী উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান। সেই লক্ষ্য নিয়েই নিজেদের পথ এগিয়ে চলেছে এই বিদ্যালয়।
কোভিড মহামারির ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে আসা পরিবর্তনগুলির সঙ্গে কী ভাবে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক-শিক্ষিকারা?
পড়াশোনার ক্ষেত্রে ‘চক অ্যান্ড টক’ পদ্ধতি এখন অতীত। মহামারির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার জগতে জায়গা করে নিয়েছে ব্লেন্ডিং ও হাইব্রিড মোড। আর কার্যকর আধুনিক ক্লাসরুমের উদ্দেশ্যে মাইক্রোসফট এডুকেশানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এলসিজিভিএম। স্কুলের ৭০ টি ক্লাসরুমই ওয়াই-ফাই সমৃদ্ধ এবং টাচস্ক্রিন স্মার্টবোর্ড যুক্ত।
এখানকার শিক্ষকেরা অ্যাসাইনমেন্ট, ক্যুইজের পাশপাশি রিয়েল টাইম সহযোগিতা, গ্রেডিং এবং ব্যক্তিগত মতামত প্রদান করে থাকেন। কোনও পড়ুয়া ক্লাস করতে না পারলে সেই পড়ুয়া যাতে পড়া বুঝতে পারে তা নিশ্চিত করতে ক্লাস রেকর্ড করে অনলাইনে আপলোড করা হয়। অ্যানিমেটেড ভিডিয়ো এবং ইন্টারেকটিভ সিমুলেশন যে কোনও পরীক্ষাগারে নির্দেশের সময়সীমা কমিয়ে অনুশীলনের সময়সীমা বাড়িয়ে তোলে। এন্ট্যাব ক্যাম্পাস কেয়ার দ্বারা চালিত একটি ক্লাউড কম্পিউটিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে অভিভাবকদের অংশিদারিত্বে আধুনিক শিক্ষার নতুন সূচনা করে এই স্কুল।
লায়ন্স ক্যালকাটা গ্রেটার বিদ্যামন্দির পড়ুয়াদের কী ভাবে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করে?
এলসিজিভিএম সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি এসটিইএম ও রোবোটিক্স ল্যাবের মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্লাস করিয়ে থাকে। রয়েছে তিনটি সুবিশাল কম্পিউটার ল্যাবরেটরি যার মাধ্যমে পড়ুয়াদের মধ্যে ডিজিটাল সাক্ষরতা ছড়িয়ে দেওয়া হয়, আরও উন্নত ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে।
এলসিজিভিএম কেমব্রিজ আর্লি ইয়ার্স সেন্টার হিসাবে রেজিস্ট্রার রয়েছে। ইসিই অর্থাৎ আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশান এমন একটি গবেষণা ভিত্তিক পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পড়ানো হয় এবং অনুসন্ধান ও আবিষ্কার মূলক বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এনইপি ২০২০ –কে মাথায় রেখে এলসিজিভিএম গঠন্মূলক শিক্ষার জন্য যা যা জরুরি অর্থাৎ আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা এবং জীবনব্যাপী সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটায়।
শিশুদের আবেগপূর্ণ চাহিদার কথা মাথায় রাখা উচিত স্কুলের। এ ক্ষেত্রে কী ভাবে সাহায্য করে এলসিজিভিএম?
পড়ুয়াদের নিয়মিত কাউন্সেলিং –এর দিকে নজর দেয় এলসিজিভিএম। বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা কেরিয়ার কাউন্সেলিং করেন। পাশাপাশি সাইকোমেট্রিক টেস্টের মাধ্যমে একটি শিশুর যোগ্যতা পরিমাপ করা হয় যাতে সে এবং তার অভিভাবক সেই অনুযায়ী ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে পারে।
এই স্কুলে পড়ার কী কী সুবিধা রয়েছে?
অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি যোগাযোগ ও প্রতিক্রিয়া। এন্ট্যাব ক্যাম্পাস কেয়ার পরিচালিত আধুনিক এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং শুধু মাত্র অনলাইনে বেতন দেওয়ার নিরাপদ প্ল্যাটফর্মই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ নোটিস ও নিয়মিত পারফরমেন্স রিপোর্ট কার্ডও এনে দেয় অভিভাবকদের হাতের মুঠোয়।
প্রতিটি শিশু এবং কর্মীদের ডিজিটাল স্বয়ংক্রিয় উপস্থিতির জন্য রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশান অর্থাৎ আরএফআইডি কার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই স্কুলের ক্যাম্পাস ১৬০টি সিসিটিভির আওতায় রয়েছে। প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাকর্মীরা ২৪*৭ এগুলি পর্যবেক্ষণ করেন। কোভিড-১৯ নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রতটি প্রবেশদ্বারে স্যানিটাইজার, থার্মাল বন্দুক, অতিরিক্ত মাস্কের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বয়ংক্রিয় স্প্রিংকলার, উন্নত ধোঁয়া শনাক্তকরণ সিস্টেম, দক্ষ পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম, নিয়মিত ফায়ার ড্রিল, ডায়াসেটার ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে যে সমস্ত রকম নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত এলসিজিভিএম।
প্রশস্ত খেলার মাঠ রয়েছে এলসিজিভিএমের। এবং সেখানে ক্রিকেট ও ফুটবল দল নিয়মিত অনুশীলন করে। প্রতি বছর জাতীয় সিআইএসসিই খেলায় বিজয়ী হয় শিক্ষার্থীরা। এমনকি এই বছরও শিক্ষার্থীরা ক্যারাটে, রাইফেল শ্যুটিং, টেবিল টেনিস এবং জিমনাস্টিকে ছয়টি স্বর্ণপদক এনেছে।
রসায়ন, জীববিদ্যা, ভূগোল,কম্পিউটার ল্যাবগুলি পড়াশোনার জন্য একেবারে যথার্থ।
স্কুলে একটি সুসজ্জিত মিউজিক রুমের পাশাপাশি ডান্স স্টুডিয়ো রয়েছে। পড়ুয়াদের প্রতিভা আরও ভালভাবে মেলে ধরতে অত্যাধুনিক জিমনাস্টিকে ক্ষেত্র এবং শিল্প কক্ষ রয়েছে।
এলসিজিভিএমের বড় জিমনাসিয়ামের কক্ষ ছাড়াও অডিয়ো ভিজ্যুয়াল ক্লাসরুম, কম্পিউটার ও হোম সায়েন্সের ল্যাব রয়েছে। স্কুলের প্রায় ৭০ শতাংশ সবিজে ঘেরা এবং ২ একরের একটি বিশাল খেলার মাঠও রয়েছে। সৌরশক্তি দ্বরা চালিত এই গ্রিন স্কুল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগের জন্য শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার দ্য অম্বুজা নেওটিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরুকুল অ্যাওয়ার্ড ফর দ্য স্কুল দ্যাট কেয়ার্স পুরস্কারও রয়েছে এই স্কুলের মুকুটে।
বলা হয়, পরীক্ষার ফলাফল সাফল্যের কথা বলে। অতএব, বোর্ড পরীক্ষায় তাদের পারফরমেন্স কেমন ছিল?
গত এক দশকে গড় শীর্ষস্থানীয় রয়েছে ৯৬ শতাংশ এবং সারা দেশের শীর্ষস্থানীয় ১ শতাংশের মধ্যে ৯৮.৫ শতাংশ পেয়েছে প্রশংসা মন্ডল। এছাড়াও এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা জেইই, এনইইটি, এআইএমএমএস এবং অন্যান্য আরও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় দৃষ্টান্তমূলক ফল করেছে। পাশাপাশি মার্চেন্ট নেভি, পুলিশ, আইন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রেও বিরাজ করেছে স্বমহিমায়।
এই প্রতিবেদনটি ‘এলসিজিভিএম'-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy