অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের উপস্থিতি
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বাংলা সাহিত্যের স্বর্ণযুগ আর সাহিত্যচর্চা কম-বেশি শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ ছিল। দেশের অন্যান্য অঞ্চলকে তা স্পর্শ করেনি তখনও। বাংলার বাইরে বসবাসকারী বাঙালিরা যাতে নিজেদের সংস্কৃতি তথা বাংলা সাহিত্যের স্বাদ নিতে পারে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে সুরেন্দ্রনাথ সেন বঙ্গ সাহিত্য সমাজ উৎসব শুরু করেন। সেই সময় উত্তর ভারতের কয়েকজন বিখ্যাত বাঙালিকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। লখনউ থেকে অতুলপ্রসাদ সেন, রাধাকমল মুখোপাধ্যায়, রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় এবং শ্রীষ চন্দ্র সেন।
সুরেন্দ্রনাথ সেনের প্রস্তাব অনুসারে অতুলপ্রসাদ ১৯২২-এর ২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ভারতীয় বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের ভিত্তি স্থাপন করেন। পরের বছর কাশীতে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন। পরবর্তী অধিবেশন হয় প্রয়াগে। যার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন। এর পরে, ১৯৫৩ সালে সম্মেলনের নাম রাখা হয়, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন। আজও সেই নামকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলছে এই সম্মেলন।
১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করে চলেছেন। বিবিধ দিকপালদের সান্নিধ্য পাওয়া সেই তালিকাটি বেশ সমুজ্জ্বল। সেই তালিকায় রয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম, আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, প্রমথনাথ বিশি, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সরলা দেবী চৌধুরানী, প্রেমেন্দ্র মিত্র, অন্নদাশঙ্কর রায় থেকে আশাপূর্ণা দেবী, সমরেশ বসু, শঙ্কর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। এক কথায় আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রায় সকলেই।
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৮-তে ঢাকায় প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এবং সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ভারত ও বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে শতাব্দী প্রাচীন এই সংগঠন। বর্তমানে দেশ জুড়ে প্রায় ১০০টিরও বেশি শাখা রয়েছে। এবং সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫,০০০।
বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য সক্রিয় পৃষ্ঠপোষক রয়েছেন যাঁরা বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষাকে তুলে ধরতে সমর্থন করে চলেছেন। সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের দক্ষ নেতৃত্বে ২০২২ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাদের মধ্যে প্রথম অধিবেশনটি আয়োজিত হয় বারাণসীতে ১১ ফেব্রুয়ারি।
এই বছরের সেই অনুষ্ঠানের অন্যথা হয়নি। সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা এনবিবিএসএস -এর শতবর্ষী সংবর্ধনা কমিটির চেয়ারম্যান সত্যম রায়চৌধুরির পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সাংসদ ও এনবিবিএসএস-এর সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে ২০২২-এর সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর, কলকাতার নিউ টাউনে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে তিন দিন ধরে মহা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল এই বছরের অধ্যায়। বাংলাদেশ থেকে পনেরো জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছিল এই অনুষ্ঠানে।
এই অনুষ্ঠানে যাঁরা ছিলেন -
১। ড. সি ভি আনন্দ বোস, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল - প্রধান অতিথি
২। মীরা কুমার, প্রাক্তন স্পিকার, লোকসভা
৩। শর্মিলা ঠাকুর, বিশিষ্ট অভিনেত্রী
৪। বিকাশ সিংহ, (সভা মুখ্য) – বিশিষ্ট বিজ্ঞানী
৫। প্রদীপ ভট্টাচার্য, সাংসদ ও এনবিবিএসএস এর সভাপতি
৬। সত্যম রায়চৌধুরি, চ্যান্সেলর ও চেয়ারম্যান এস এন ইউ, রিসিপ.কম
৭। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ
৮। শ্যামল সেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল, পশ্চিমবঙ্গ
৯। চন্দ্রশেখর ঘোষ, চেয়ারম্যান, বন্ধন ব্যাঙ্ক
১০। আন্দলিব ইলিয়াস, ডিওয়াই. হাই কমিশনার, বাংলাদেশ
১১। ব্রাত্য বসু, এমআইসি, শিক্ষা, পশ্চিমবঙ্গ
১২। ইন্দ্রনীল সেন, এমআইসি, আই অ্যান্ড সি, পশ্চিমবঙ্গ
১৩। শুভাপ্রসন্ন, বিশিষ্ট শিল্পী
১৪। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন ক্রিকেটার
১৫। প্রচেত গুপ্ত, বিশিষ্ট লেখক
১৬। সৌমিত্র শেখর দে, উপাচার্য, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
১৭। অরুনাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিরেক্টর, ফিনান্স অ্যান্ড অপারেশনস, অ্যালায়েন্স ব্রডব্যান্ড
১৮। অনিল ধর, সাধারণ সম্পাদক, এনবিবিএসএস
এই প্রতিবেদনটি ‘এস এন ইউ’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy