প্রত্যেক ব্যক্তি কখনও না কখনও জীবনে ছোট বা বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। তবে এটা অবশ্যই লক্ষ্য করা যায় যে, এই ঘটনাগুলি অন্যদের তুলনায় কিছু লোকের ক্ষেত্রে বার বার হয়, ঘন ঘন হয়। কখনও রাস্তায় মোটরবাইক চালানোর সময়ে বা কখনও গাড়ি চালানোর সময়ে ঘটতে পারে। আবার কখনও বাড়িতে ছোটখাটো কিছু একটা দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। এই দুর্ঘটনাগুলি গুরুতর হলে বড় আকার ধারণ করে, যা মানুষের জীবনকে বিপজ্জনক ঝুঁকির দিকে নিয়ে যায়।

দুর্ঘটনার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকে আকস্মিকতা। এর জন্য মানুষ প্রায়শই নিজের ভাগ্যকে অভিশাপ দেয়। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এই ধরনের ঘটনার নেপথ্যে থাকে কুণ্ডলীতে নির্দিষ্ট গ্রহের দুর্বল বা প্রতিকূল অবস্থান। এই কারণে, এক জন ব্যক্তির জীবনে ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটে। জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে, মূলত দুর্ঘটনার জন্য অষ্টম ভাবকে বিচার করা হয়। আবার গ্রহগত দিক থেকে দেখা গেলে মুখ্য কারক গ্রহগুলি হল মঙ্গল, শনি, রাহু, কেতু ও চন্দ্র। দুর্ঘটনার বিচারে কিন্তু চন্দ্র খুবই দুর্বল নির্দেশক। কারণ একমাত্র ভ্রমণে বা জলের দুর্ঘটনাই চন্দ্র নির্দেশ করে। মুলত মঙ্গলকেই দুর্ঘটনার কারক গ্রহ বলে মনে করা হয়।

জ্যোতিষশাস্ত্রে দুর্ঘটনা যোগ তৈরি করে যে গ্রহগুলি, তার মধ্যে মঙ্গল, শনি ও রাহুকে দুর্ঘটনাজনিত গ্রহ হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই তিনটি গ্রহের অবস্থান যদি কোনও ব্যাক্তির জন্মপত্রিকায় ভুল স্থানে থাকে, তবে প্রায়শই সে আঘাত পায়। শনি, মঙ্গলের অশুভ প্রভাব রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা, আচমকা পতন বা অন্য কোনও কারণে নানা রকম আঘাতের সম্মুখীন করে। কখনও কখনও অপ্রয়োজনীয় হাতাহাতি বা মারামারির কারণেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রক্তপাত হতে পারে।

এখন আমরা দেখে নিতে পারি, কী কী পরিস্থিতিতে ও ঠিক কোন সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে–

১) অষ্টমে শনি এবং চতুর্থ-পতি ষষ্ঠে অবস্থান করলে ভ্রমণরত অবস্থায় দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

২) শনি মঙ্গলের সহাবস্থান অথবা দৃষ্টি আদান প্রদান হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকতে পারে, বিশেষত ওই গ্রহ দু’টির মধ্যে যদি কোনও গ্রহ অষ্টম-পতি হয় অথবা অষ্টম-ভাবে অবস্থিত হয়।

৩) দুর্বল স্থানে অথবা নীচ-ক্ষেত্রে মঙ্গল পাপগ্রহ দ্বারা দৃষ্ট বা যুক্ত হলে শারীরিক আঘাত প্রাপ্তির আশঙ্কা থাকে।

৪) অষ্টম-ভাব, অষ্টম-পতি এবং মঙ্গল পাপগ্রহের মধ্যগত বা পাপযুক্ত ও দৃষ্ট হলে দুর্ঘটনার প্রবল আশঙ্কা থাকে।

৫) জন্মপত্রিকায় রাহু-মঙ্গল যোগ কিন্তু অশুভ সূচকবলে বিবেচিত করা হয়। রাহু ও মঙ্গলের সহাবস্থান বা দৃষ্টি বিনিময় ঘটলে আকস্মিক আঘাতের কারণে রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে। এর সঙ্গে অষ্টম-ভাব বা অষ্টম-পতির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপিত হলে দুর্ঘটনার প্রাবল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

৬) জন্মপত্রিকায় মঙ্গলগ্রহ লগ্নে অবস্থান করলে মাথায় ও মস্তিষ্কে আঘাতের প্রবণতা বেশি থাকে।

৭) জন্মপত্রিকায় শনি ও কেন্দ্র অবস্থান করলে, যদি রাশির ঊর্ধ্বে শনি থাকে এবং কেন্দ্রে কোনও শুভ গ্রহ না থাকে, তা হলে এই ধরনের ব্যক্তিদের উচ্চতা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। দেখা যায় যে, এই ব্যক্তিরা ঘর থেকে না বেরোলেও ঘরে থেকেই দুর্ঘটনার শিকার হন।

৮) জন্মছকে চন্দ্র ও মঙ্গলের অবস্থান- যদি কোনও ব্যক্তির জন্মের কুণ্ডলীতে চন্দ্র থেকে মঙ্গল ত্রিভুজ কেন্দ্রে থাকে, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সড়ক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। অতএব, এই ব্যক্তিদের বিশেষত রাস্তায় হাঁটার সময়ে বা গাড়ি চালানোর সময়ে সতর্ক থাকতে হবে।

জন্মপত্রিকা বিচার করতে গিয়ে দুর্ঘটনার বিষয়টি বিচার করার সময়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে প্রাণহানির আশঙ্কা আছে কিনা। লগ্ন-পতি, লগ্ন-ভাব দৃঢ় ও শুভ হলে প্রাণহানির সম্ভাবনা আশঙ্কা থাকবে না। দুর্ঘটনার কারক গ্রহ যদি বৃহস্পতি দ্বারা দৃষ্ট হয়, তা হলেও প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে না। সাধারণত রাশিচক্রে যে সব গ্রহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হয়, ওই গ্রহের দশান্তদশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা কিন্তু প্রবল থাকে।

গ্রহের গতির কারণেও দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে কোনও ব্যক্তি। অনেক সময়ে জাতকের জন্মছকে কোনও গ্রহের দশা ঠিক না-থাকলে, দুর্ঘটনা যোগ তৈরি হয়। এই যোগের কারণে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয় জাতক-জাতিকা।

এখন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন গ্রহের কারণে দুর্ঘটনা যোগ সৃষ্টি হয়—

গ্রহঃ সূর্য

সূর্যের কারণেও এই দুর্ঘটনা যোগ সৃষ্টি হতে পারে। সূর্য মারক কক্ষের অধিপতি হলে বা কুপিত থাকলে ব্যক্তি দুর্ঘটনা গ্রস্ত হতে পারে। এই ক্ষেত্রে অস্থির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আঘাত লাগার আশঙ্কাই বেশি থাকে।

গ্রহঃ চন্দ্র

জন্মপত্রিকায় চন্দ্রের পরিস্থিতি সঠিক না-থাকার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। দুর্ঘটনার ফলে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে গভীর প্রভাব পড়ে।

গ্রহঃ মঙ্গল

জন্মপত্রিকায় মঙ্গলের অবস্থান ভাল জায়গায় না থাকলে জাতক কোনও না কোনও বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। মঙ্গলের দোষের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে মস্তিষ্কে আঘাত লাগতে পারে।

গ্রহঃ বুধ

জন্মপত্রিকায় বুধের উপস্থিতি সঠিক না-হওয়ায় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তীব্র গতিসম্পন্ন কোনও যানবাহনের দ্বারা জাতক আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে।

গ্রহঃ বৃহস্পতি

জন্মপত্রিকায় বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থানের কারণেও দুর্ঘটনা যোগ সৃষ্টি হয়। জাতক কোনও বড়সড় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে, যাতে কোনও অভ্যন্তরীণ আঘাত লাগতে পারে।

গ্রহঃ শুক্র

শুক্র গ্রহের কারণেও যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জাতকের জীবনে। জন্মছক বিচার করার সময়ে এই বিষয়টি ভাল ভাবে জানা সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে জাতকের চোখে আঘাত লাগার আশঙ্কা প্রবল থাকে।

গ্রহঃ শনি

জন্মপত্রিকায় শনির অশুভ প্রভাব থাকলে জাতক যে কোনও দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। এই দুর্ঘটনার কারণে ব্যাক্তির অভ্যন্তরীণ যে কোনও আঘাত লাগতে পারে এবং শনি গ্রহের প্রভাবে বার বার দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

গ্রহঃ রাহু

জন্মপত্রিকায় রাহুর প্রভাব থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাধারণত বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে। এই দুর্ঘটনায় জাতক গভীর আঘাত পেতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাহুর সহযোগিতা ছাড়া কোনও দুর্ঘটনা ঘটাই অসম্ভব।

গ্রহঃ কেতু

কেতুর প্রভাবে জাতকের জন্মপত্রিকায় একাধিক দুর্ঘটনার যোগ সৃষ্টি হতে পারে। শরীরে গভীর আঘাত লাগার আশঙ্কা থাকতে পারে। রাহু ও কেতু গ্রহ দু’টি জাতককে গভীর ক্ষত প্রদান করে থাকে।

ডা: সোহিনী শাস্ত্রী দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদদের অন্যতম।

তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের দূরভাষ নম্বর- +91 91635 32538 / +91 90381 36660।

তাঁর সম্পর্কে বিশদ জানতে দেখুন: sohinisastri.com কিংবা facebook.com/drsohinisastri

জ্যোতিষশাস্ত্রের এমন বিবিধ বিষয়ে জানতে দেখুন: youtube.com/@dr.sohinisastribestastrolo2355

ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।