রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারছিলেন না, কী নিয়ে পড়বেন, তারপর তিনি উত্তরটা পেলেন একটা অনলাইন পরীক্ষা থেকে।
এডুগাই কেরিয়ার প্রেডিক্টিভ টেস্ট (ইসিপিটি) হল এক অভিনব ১২০মিনিটের পরীক্ষা, যা ছাত্রছাত্রীদের বুঝতে সাহায্য করে, কোন কেরিয়ার তাঁদের উপযুক্ত।
পরীক্ষাটা তিন ভাগে ভাগ করা, যা একসঙ্গে থ্রি-এ আইবিএম কেরিয়ারের কাঠামো তৈরি করে। ‘থ্রি-এ’ বা ‘তিনটি এ’ মানে হল, অ্যাটিটুড (দৃষ্টিভঙ্গি), অ্যাপটিটুড (কুশলতা) ও অ্যাসপিরেশন (আকাঙ্ক্ষা)। অ্যাপটিটুড ও অ্যাটিটুড বিভাগে প্রাপ্ত নম্বর আর ছাত্রের ঝোঁক বিচার করে, তারপর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অ্য়ালগরিদম আলোচনা করে, ছাত্রটির সম্ভাবনা কতটা। এবং তিনটে কেরিয়ারের বিকল্প দেয়।
যে তরুণ চাকুরেরা কেরিয়ার বদলাতে চাইছেন, তাঁরাও এই পরীক্ষাটা দিতে পারেন।
পরীক্ষাটা দেওয়া যাবে একটা ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে, খরচ পড়বে ২৪৯৯ টাকা। এখন সবে শুরু হচ্ছে বলে, ১৯৯৯ টাকায় পরীক্ষাটা দেওয়া যাচ্ছে।
“অতিমারির সময় আমরা সকলেই পেশার সুযোগের ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা আমাদের কেরিয়ার সম্পর্কিত বর্তমানের সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করছে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মধ্যে একটা হল, কেরিয়ার বেছে নেওয়া। ইসিপিটি হচ্ছে কেরিয়ার বিষয়ক উপদেশ আর প্রযুক্তির একটা আদর্শ মেলবন্ধন”, বললেন উইলমা ফ্রান্সিস আলফনসো, একজন আচরণ-বিজ্ঞানী এবং মন-চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, যিনি এই অনলাইন পরীক্ষাটি নির্মাণকারী দলের একজন।
তিনি বোঝালেন, “পূর্ণ পরিপ্রেক্ষিতটা বুঝতে গেলে, তিনটি দিক বুঝতে হবে। প্রথমে আসবে কুশলতা, মানে, একজনের কিছু একটা করার স্বাভাবিক দক্ষতা। তারপর আসবে ব্যক্তিত্ব, মানে, ব্যবহারিক, জ্ঞানগত বা আবেগ-সম্পর্কিত বিন্যাস। তারপর আসে একজনের পছন্দ, অপছন্দ, আকর্ষণের ব্য়াপার। এই তিনটি দিকের কথাই মাথায় রেখে ইসিপিটি তৈরি করা হয়েছে। আমার মনে হয়, এই পরীক্ষাটা দেওয়া উচিত, যাতে একজন নিজের কেরিয়ার বিষয়ে একটা সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”
রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স কুড়ির কোঠায়। তিনি বায়ো-সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর, বুঝতে পারছিলেন না, ঠিক কোন কেরিয়ার বাছবেন। তারপর তিনি ইসিপিটি পরীক্ষাটা দেন। তিনি বললেন, “কেরিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ জটিল কাজ। অনেকগুলো দৃষ্টিভঙ্গির কথা ভাবতে হয়, খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করতে হয় এবং বিভিন্ন বিকল্প সম্পর্কে জানতে হয়। আমি লকডাউনের সময় বাড়িতে থেকেই ভাবার চেষ্টা করছিলাম, আমার জোরের জায়গাগুলো কী কী, উৎসাহই বা কোনদিকে এবং এগুলো মিলিয়ে কোন নির্দিষ্ট কেরিয়ারের পরিকল্পনা করা উচিত। তারপর ইসিপিটি বিষয়ে জানতে পারি এবং পরীক্ষাটা দিই। আশ্চর্য হয়ে দেখি, রিপোর্টে ঠিক সেই পরামর্শই দেওয়া হয়েছে, যা আমি মনে মনে ঠিক করেছিলাম। বায়ো-সায়েন্স আমার মূল বিষয়, কিন্তু আমি অর্থনীতিতেও উৎসাহী, আবার একটু একটু মার্কেটিং, স্ট্যাটিসটিক্স, কম্পিউটার সায়েন্সেও। আর এইগুলো বিষয়ে জানাও এখন খুব জরুরি।”
পরীক্ষার ফলাফলটার দৃশ্যগত উপস্থাপনা, রাতুলকে কেরি়য়ারের রাস্তা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা দিল।
সিঙ্গাপুরের টিইএসওএল প্রফেশনাল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ইংরেজি শিক্ষিকা, রেবেকা আর্থার মল্লিক, ছাত্রছাত্রীদের ইসিপিটি-তে বসার পরামর্শ দিচ্ছেন। উনি বললেন, “আমি দেখেছি কেরিয়ার পছন্দ করার সময ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ে, কিন্তু এই পরীক্ষাটা সমস্ত খুঁটিনাটি ভেবেচিন্তে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।”
এডুগাইয়ের অনুরাধা মুখোপাধ্যায় ইসিপিটি-কে বর্ণনা করলেন ‘কেরিয়ারের রাশিচক্র’ হিসেবে। বললেন, “এটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এবং নিখুঁত নৈপুণ্যে বলে দেবে, কোন কেরিয়ারে আপনি সবচেয়ে সফল হবেন।”
এডুগাই-এর যুগ্ম-প্রতিষ্ঠাতা এবং ইসিপিটি নির্মাণকারী আইবিএম-এডুগাইয়ের দলটির নিয়ামক, প্রবাল চক্রবর্তী বললেন, তিনি এবং তাঁর বন্ধু সুবর্ণ বসু তাঁদের ছেলেমেয়েদের যে পরিমাণ কেরিয়ার-সম্পর্কিত দোটানা ও ধাঁধার মধ্যে দিয়ে যেতে দেখেছেন, তা থেকেই ইসিপিটি-র ধারণাটা এসেছিল। তখনই তাঁর মনে হয়, এমন একটা পরীক্ষা তৈরি করা যাক, যা শুধু একজনের দক্ষতাগুলোকেই শনাক্ত করবে না, তার পছন্দগুলোকেও বিচার করবে এবং একটা উপযুক্ত কেরিয়ার বাছাই করে দেবে। উনি বলেন, “কেরিয়ার কাউন্সেলিং-এর যত পরীক্ষা আছে, তার মধ্যে ইসিপিটি অভিনব, কারণ পরীক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষার কথাটাও এটি মনে রাখে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy