খালেদা জিয়া। ছবি:সংগৃহীত।
খালেদা জিয়ার দল বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেই প্রশ্নেরই এখন জবাব খুঁজছে বাংলাদেশ। তাদের জোটসঙ্গী জামাতে ইসলামির সঙ্গে তাদের বোঝাপড়াটাই বা কী হবে, উড়ে বেড়াচ্ছে সে প্রশ্নও।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৬ দলের জোট সরকারের মেয়াদ ফুরোতে এখনও বছর দেড়েক বাকি। তবে তার আগে এখনই নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে বাংলাদেশে। অনেক আলোচনা পর্যালোচনার পরে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ঘোষণা করেছেন, সব দলকে নিয়ে নির্বাচন করাটাই তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন সম্পর্কেও খুব ইতিবাচক কথা বলছে না বিএনপি, আগের কমিশনকে পক্ষপাতদুষ্ট তকমা দিয়ে যাঁরা ২০১৪-র ৫ জানুয়ারি আগের নির্বাচনে অংশই নেয়নি। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এখনও বলে চলেছেন— শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে নির্বাচন হলে তাঁরা অংশগ্রহণ করবেন না।
তবে চাপ সৃষ্টির জন্যই যে খালেদার এই হুঙ্কার, সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ভোটে নামার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সংগঠন গুছোচ্ছে খালেদা জিয়ার দল। জেলা স্তরেও নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে অংশ না-নিলে যে কী দুরবস্থা হয়, বিএনপি-র নেতৃত্ব থেকে কর্মী-সমর্থক— সকলেই হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে সড়ক অবরোধ, ‘জ্বালাও-পোড়াও’ ধরনের জঙ্গি কর্মসূচি নিয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন নেতৃত্ব। এতে এক দিকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যেমন তাঁদের দূরত্ব বেড়েছে, তেমনই রাষ্ট্রের সম্পত্তি ধ্বংস, নাশকতার মতো মামলায় জেলে যেতে হয়েছে বিএনপি-র বহু নেতাকে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে নির্বাচন করার যে শর্ত বিএনপি দিয়েছিল সেটাও দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় হয়নি। কারণ পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে রাষ্ট্রপ্রধানকে ক্ষমতায় রেখেই নির্বাচন হয়।
সব মিলিয়ে, ফের ভোট বয়কটের পথে হাঁটলে দল যে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ে যাবে—জনান্তিকে তা বলছেন নেতা-কর্মীরাই।
বিএনপি-র জোট শরিক জামাতে ইসলামিও ভোটের ময়দানে নামতে মুখিয়ে রয়েছে। কিন্তু তাদের সমস্যাটা ভিন্ন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত মৌলবাদী এই দলটির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে, তাদের নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ও কেড়ে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে লড়তে জামাতকে হয় বিএনপি-র প্রতীক ‘ধানের শিষ’ নিয়ে লড়তে হবে, অথবা নির্দল প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ অন্য কোনও প্রতীক।
জামাত প্রার্থীদের তাঁদের প্রতীক দিতে বিএনপি নেতৃত্বের আপত্তি নেই। কিন্তু আপত্তি রয়েছে জামাতের। জামাতের একাধিক নেতা মনে করেন, নিজস্বতা বজায় রাখতে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাটাই শ্রেয়।
প্রধান প্রতিপক্ষ জোটের এই দোলাচলের মধ্যে নিজেদের প্রতীক নৌকার পালে প্রচারের হাওয়া তুলতে শুরু করেছেন আওয়ামি লিগের নেত্রী শেখ হাসিনা ও নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের। এর পরেও ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁরা বিএনপি-কে আর্জি জানাতে ভুলছেন না। কারণ, বিএনপি লড়াইয়ে না-এলে যে ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন না, এবং ভোটারশূন্য বুথ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন তুলতে পারেন— সে আশঙ্কা শাসক দলের রয়েছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy