(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর ঢাকা সফরের পর বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে বলে আশা করছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশসচিব নিজেও বৈঠকে এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি তদারকি সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের। সোমবার বিদেশসচিব মিস্রীর সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন। পরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিস্রী। তিনটি বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়— যার মূল নির্যাস উভয় পক্ষই সুসম্পর্ক চায়।
মিস্রী-ইউনূস বৈঠকের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা। বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’ অনুযায়ী তিনি বলেন, “বিক্রম মিস্রী আশ্বস্ত করেছেন যে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসার সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান সৈয়দা।
বস্তুত, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের সময়ে বাংলাদেশে এক উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওই সময়ে সাময়িক ভাবে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাস থেকে ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হয় কিছু দিনের জন্য। যদিও হাসিনার সরকারের পতনের এক সপ্তাহ পরেই ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস থেকে আবার বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া শুরু হয়। তবে সীমিত ভাবে সেই কাজ চালু রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য অনেকে এ দেশে আসেন। আপৎকালীন এবং চিকিৎসার প্রয়োজনে যাঁদের ভিসা প্রয়োজন, তাঁদের ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, আপাতত বাংলাদেশিদের চিকিৎসার এবং জরুরি প্রয়োজনে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। যখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখন পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু হবে এবং ভিসা প্রদানও স্বাভাবিক হবে।
ঘটনাচক্রে, সোমবার ভারতের বিদেশসচিব মিস্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও বৈঠক করেন ইউনূস। বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’ অনুসারে, ওই বৈঠকেও ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কথা উঠে এসেছে। ভারতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা আপাতত সীমিত থাকার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে ভিসা কেন্দ্র দিল্লি থেকে ঢাকা বা অন্য কোনও প্রতিবেশী দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়েছেন ইউনূস।