(বাঁ দিকে) ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই। অধিকাংশ অশান্তির কারণই রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত। শুধু তা-ই নয়, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ এবং সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যাপারেও উদ্যোগী মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসন। সোমবার এমনটাই জানিয়ে দিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তপ্ত বাংলাদেশের একাংশ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকারও। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বার বার ইউনূস প্রশাসনের কাছে অনুরোধও করেছে। সেই আবহেই সোমবার বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। দুপুরে ঢাকার পদ্মা ভবনে সে দেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন তিনি। তার পর যমুনা ভবনে ইউনূসের সঙ্গেও বৈঠক করেন ভারতের বিদেশসচিব। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নানা কারণে দু’দেশের সম্পর্কের ভিতর তৈরি হওয়া মেঘ কাটানোর জন্য বিক্রম বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন। বাংলাদেশও এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে।
ইউনূসের সঙ্গে ভারতের বিদেশসচিবের বৈঠকের পর রিজওয়ানা বলেন, ‘‘অপপ্রচার চলছে। আমরা লিখিত এবং মৌখিক জবাবে বার বার বলেছি, যা ঘটনা ঘটছে সেগুলি যে সাম্প্রদায়িক কারণে হয়েছে, তা দেখানোর সুযোগ খুবই কম। ঘটনাগুলি কখনও কখনও ব্যক্তিগত স্তরে ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক।’’ তিনি স্পষ্ট করেন, এই সব ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। সরকার কখনই এ সব বরদাস্ত করে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের যাতে উন্নতি হয়, সেই ব্যাপারে জোর দেওয়া হবে।
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে নয়াদিল্লির কী অবস্থান তা স্পষ্ট করেছেন বিক্রমও। বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং উভয়ের জন্য লাভজনক সম্পর্ক চায় ভারত।’’ ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে আগের মতোই সুসম্পর্ক যে রাখতে চায় ভারত, তা-ও জানান বিক্রম। তবে একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন তিনি। সোমবারের বৈঠকে এ সব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানান ভারতের বিদেশসচিব।