স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
২০২৬ সালের মার্চের আগেই দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হবে মাওবাদীরা। আবারও এমনটাই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার মাওবাদীদের হাতে ৫৫ জনের মৃত্যু প্রসঙ্গে এ কথা বলেন তিনি। সঙ্গে মাওবাদীদের হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করুন। চিন্তা নেই, এর পর আপনাদের চাকরির সংস্থান, স্বাস্থ্য-সহ যাবতীয় দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’’
শুক্রবার শাহ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশ থেকে মাওবাদী সন্ত্রাসের পাশাপাশি মাওবাদী ভাবধারাকেও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধপরিকর। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ এ দেশে মাওবাদের অন্তিম দিন হতে চলেছে। তার আগেই আমরা দেশ থেকে মাওবাদীদের নির্মূল করব।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, সে পথে ইতিমধ্যে অনেকটাই এগিয়েছে সরকার। এখন কেবলমাত্র ছত্তীসগঢ়ের চার জেলায় মাওবাদীদের অস্তিত্ব রয়েছে। এক বার মাওবাদীরা নেপালের পশুপতিনাথ থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি পর্যন্ত করিডোর তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। শাহের দাবি, তাঁদের সেই পরিকল্পনাও ভেস্তে দিয়েছে মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই মাওবাদী দমন বিষয়ে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাঁইয়ের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য সমন্বয় বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই আভাস দেওয়া হয়, মাওবাদীদের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য এর মধ্যেই নানা পরিকল্পনা ছকতে শুরু করেছে কেন্দ্র। সেই বৈঠকেও অমিত জানান, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশ থেকে নির্মূল হবে মাওবাদীরা। বৈঠকে মূলত মাওবাদী-অধ্যুষিত এলাকায় কেন্দ্র ও ছত্তীসগঢ় সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হয়। মাওবাদীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি আত্মসমর্পণ নীতিতেও বদল আনা হবে বলে জানান অমিত শাহ। আরও জানান, মাওবাদীদের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য এর মধ্যেই নানা পরিকল্পনা ছকতে শুরু করেছে কেন্দ্র।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৬৪ জন মাওবাদীর মধ্যে ১৪২ জনই নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হয়েছেন। চলতি মাসের শুরুতে ছত্তীসগঢ়ের দান্তেওয়াড়া-বিজাপুর সীমানার জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ন’জন মাওবাদী। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে এই মাওবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন ছ’হাজার ৬১৭ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং সাধারণ নাগরিক। তবে সেই হামলার সংখ্যা এখন ৭০ শতাংশ কমেছে। আগামী দিনে মাওবাদকে দেশ থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল করাই এখন কেন্দ্রের লক্ষ্য।